Logo
Logo
×

শিক্ষা

যুগের চিন্তার শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষকদের অভিমত শিক্ষক হবে রাষ্ট্রের

Icon

লতিফ রানা

প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৩২ পিএম

যুগের চিন্তার শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষকদের অভিমত শিক্ষক হবে রাষ্ট্রের
Swapno


 

আমার শিক্ষার্থীকে শিখাইতে গিয়ে যদি আমি শোকজ পাই, আমার শিক্ষকরা শোকজ পায় তাহলে আমি লজ্জিত হই। আমরা চাই শিক্ষক হবে এই রাষ্ট্রের, তারা কোন দলের হবে না। শিক্ষক যদি কোন দলের হয়, আমরা দেখেছি এই ৫ আগস্টের পর শিক্ষকরা কিভাবে লাঞ্ছিত হয়েছে। তাই শিক্ষকরা হবে জাতির, রাষ্ট্রের মেরামতের জন্য হবে শিক্ষক।

 

 

 

গতকাল বৃহস্পতিবার যুগের চিন্তা আয়োজিত ‘শিক্ষাঙ্গন’-এ উপস্থিত হয়ে এই মতামত ব্যক্ত করেন আমন্ত্রিত শিক্ষকগণ। সিনিয়র শিক্ষক উম্মে সালমা স্বর্ণার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে  সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, গিয়াসউদ্দিন ইসলামিক মডেল কলেজের অধ্যক্ষ মীর মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন ও ক্যামব্রিয়ান স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আবদুল কাইয়ুম। আয়োজনে আলোচনার বিষয় ছিল ‘উত্তাল ২৪, পড়াশোনায় নবযাত্রা’।

 

 

 


 
আলোচনায় ২০২৪ সালের দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এইচএসসির বেশ কয়েকটি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত না হওয়ার বিষয়ে গিয়াসউদ্দিন ইসলামিক মডেল কলেজের অধ্যক্ষ মীর মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, পরীক্ষা বন্ধ হয়েছে সেটা ঠিক আছে কিন্তু আমার মনে হয় শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশের জন্য সেই পরীক্ষাগুলো পরে নেওয়া উচিৎ ছিল।

 

 

 

আন্দোলনের অন্যতম একটা ইস্যু ছিল মেধার যৌক্তিক সম্প্রসারণ করা। এখানে কোন কোটা হবে না, মেধাকে সর্বোচ্চ স্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্যই এই আন্দোলন। তিনি বলেন সেই ৭টি পরীক্ষা যখন নেওয়া হয়েছে তখন দেশের পরিস্থিতি কিন্তু স্বাভাবিক ছিল। তাই স্বাভাবিক পরিবেশে পরীক্ষা দেওয়ার পর যদি শিক্ষার্থীরা ফেল করে তাহলে কিছু করার নাই।

 

 

 

আমাদের প্রতিষ্ঠানে আমরা কম জিপির শিক্ষার্থীদেরও ভর্তি করি। আমরা আমাদের নার্সিংয়ের মাধ্যমে তার উন্নয়নের চেষ্টা করি। আমি মনে করি, দেশের শতকরা ৯৫ জন শিক্ষার্থীই চেয়েছিল যে পরীক্ষাটা (বাকি পরীক্ষাগুলো) হোক। বারবার অটোপাশ বারবার অল্প সাবজেক্ট ম্যাপিং আমি মনে করি শিক্ষার জন্য বড় আঘাত।

 

 

 

 

এই জায়গা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। সম্প্রতি বের হওয়া এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা অনেকেই ভাবছি বাকি পরীক্ষাগুলো হয়তো ফেলের হার কমতো। কেননা তাদের বেশিরভাগই ফেল করেছে বাংলা, ইংরেজী ও আইসিটিতে। মানবিক এবং ব্যবসায়ে শিক্ষায় বেশিরভাগ শিক্ষার্থী, যদি পরীক্ষাও হতো তাহলেও ফেলের হার হয়তো একই থাকতো। হয়তো ফেলের হার আরও বেড়ে যেতেও পারতো।

 

 

 

 

এখনকার শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা অনেকটাই ছেড়ে দিয়েছে, তাদের পড়ার টেবিলে আসতে হবে। দেশকে নতুন আঙ্গিকে গড়তে হলে তাদের পড়ার টেবিলে আসতে হবে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নতুন কোন পদ্ধতি চালু করতে হলে আমরা যারা মাঠ পর্যায়ে শিক্ষকতা করি তাদের মতামত নেওয়া দরকার।

 

 

 

আমাদের সাথে কথা না বলে যদি কর্তা ব্যক্তিরা (যাদের সন্তানরা এদেশে পড়ালেখা করে না) পদ্ধতি পরিবর্তন করে অর্থাৎ শিক্ষা ক্ষেত্রে পরিবর্তন হয়, অথচ শিক্ষকরা কোন অবজারভেশন দিতে পারে না আমি মনে করি জাতির জন্য এটা কলঙ্কজনক। পদ্ধতির নেগেটিভ কোন কথা বলা যাবে না। এটা খুবই লজ্জাজনক।

 

 


 
ক্যামব্রিয়ান স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আবদুল কাইয়ুম বলেন, মূলত ২০২০ সাল থেকেই পড়াশোনায় অস্থিরতা লক্ষ্য করা গেছে। করোনাকালীন সময় শুরু হওয়া এই অস্থিরতার পর শিক্ষা কারিকুলাম পরিবর্তনের কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে টানাপোড়ন এবং অভিভাবকদের মধ্যে অসন্তুষ্টি কাজ করছিল।

 

 

 

এসব জটিলতা কাটিয়ে যখন একটা অবস্থানে গিয়ে পৌছেছিলাম তারপর পরই শুরু হয় ছাত্র-জনতার সরকার বিরোধী আন্দোলন। এগুলোর ফলে পড়াশোনার অনেক ব্যাঘাত ঘটে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থেই আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছিলাম। এর মধ্য দিয়েই কিছুদিন আগে ইন্টারমিডিয়েটের (এইচএসসি) রেজাল্ট বের হয়। যেখানে শতকরা ৭৭ জনের কিছু বেশি শিক্ষার্থী পাশ করে এবং বাকিরা ফেল করে।

 

 

 

 

যারা ফেল করে তারাই আবার আন্দোলনের মধ্যে আছে। তারা তাদের ফলাফল নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারেনি। শিক্ষার্থীরা এখন মাঠে নামছে, কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে। তারা নতুন স্বাধীনতা এনেছে এবং ভাবছে আমার কথা বলার অধিকার আছে। তবে আমরা কোন কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়ে উন্মাদনা প্রকাশ করা এবং তাদের শারীরিক ভাষা যেন এগ্রেসিভ না হয়।
 

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন