Logo
Logo
×

বিনোদন

হাঙর নদী গ্রেনেড-এর ‘রইস’

Icon

যুগের চিন্তা বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২১, ০৫:৪৪ পিএম

হাঙর নদী গ্রেনেড-এর ‘রইস’

১৯৯৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কারপ্রাপ্ত সিনেমা। মুক্তিযুদ্ধকে ঘিরে এই কালজয়ী ছবি ‘হাঙর নদী গ্রেনেড’-এর রইস চরিত্র সবার নজড় কেড়ে নেয়। ছবি শেষের দিকে রইস চরিত্রের মৃত্যু সবার মনকে নাড়া দিয়ে দেয়।

সেলিনা হোসেন-এর উপন্যাস থেকে নির্মিত এই সিনেমার পরিচালক ছিলেন চাষী নজরুল ইসলাম। এটি ১৯৯৭ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়। শ্রেষ্ঠ পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম, শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার সেলিনা হোসেন এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী সুচরিতা।

পরিচালক ছবির 'রইস' চরিত্রের জন্য উপযুক্ত অভিনেতা খোঁজ করতে থাকেন। তাঁর সহকারী পরিচালক বিজয়ের কথা বলেন। বিজয়ের সাথে যোগাযোগ করা হয়। বিজয় যান এফডিসিতে। এবং তাকেই চরিত্রের জন্য চ’ড়ান্ত করা হয়। বিজয় চৌধুরীর এই সিনেমার আগেও চার-পাঁচটি সিনেমায় ছোট চরিত্রে অভিনয় করার অভিজ্ঞতা ছিলো।

বিজয় চৌধুরী ঢাকার দক্ষিণ বাড্ডার ছেলে। গ্রামের বাড়ি গাজীপুর। ছবির জন্য সিনেমার পরিচালক বিজয়কে একটা কুকুর সংগ্রহ করতে বলেন যে সবসময় রইসের সাথে থাকবে। ছবিতে যে কুকুরটিকে দেখা যায় তার কথা বলা হচ্ছে। বিজয় কুকুরটির নাম দেন 'ভোলা।' ভোলার সাথে দারুণ সখ্য গড়ে ওঠে বিজয়ের।

ছবির স্যুটিং হয় মানিকগঞ্জের ঝিটকা গ্রামে। চাষী নজরুল ইসলামের মতো কিংবদন্তি পরিচালকের অধীনে সুচরিতা, সোহেল রানা, শর্মিলী আহমেদ, মিজু আহমেদ সহ আরো অনেক বাঘা অভিনেতা এই চলচিত্রে অভিনয় করেন। তাদের মাঝে রইস চরিত্রে অভিনয় করা বিজয় খুব সহজেই স্নেহধন্য হয়ে ওঠে।

ছবিতে কাজ করা নিয়ে রইস চরিত্রে অভিনয় করা রইস বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পরে অন্তরা-কে তার বাবা যখন বাড়ি নিয়ে যাবার জন্য আসে চাষী নজরুল ইসলাম দৃশ্যটা বুঝিয়ে দেন বিজয়কে। দৃশ্যে বোঝাতে হবে অন্তরাকে নিয়ে যাবার সময় তার কষ্ট হচ্ছিল। কিন্তু বারবার দেখানোর পরেও দৃশ্যটার টেক ওকে হচ্ছিল না। তখন পরিচালক রেগে চড় বসিয়ে দেন। এর পরের শটেই ওকে হয় তখন বিজয় তার অভিনয়ে পারফেক্ট ছিল।’

তিনি আরো বলেন, ‘শেষ দৃশ্যে পাকিস্তানি হানাদার যখন রইসকে গুলি করে আর রইসের মৃত্যু হয় স্যুটিং-এ ক্যামেরার বাইরে থাকা শেকল দিয়ে আটকানো কুকুর ভোলা সর্বশক্তি দিয়ে দৌড়ে আসে। কুকুরটি মনে করে রইস বা বিজয় সত্যি সত্যি মারা গেছে। সে পাক হানাদার চরিত্রে অভিনয় করা লোকটিকে তাড়া করে। লোকটি ভয় পেয়ে ঘরে ঢুকে দরজা আটকে দিলে কুকুরটি চারপায়ে লাথি দিতে থাকে দরজায়। তখন বিজয় উঠে 'ভোলা' বলে ডাক দিতেই কুকুরটি জাস্ট সারপ্রাইজড হয়ে যায়। বিজয়ের ভাষায়-পোষা প্রাণীকে ভালোবাসলে তারাও যে মানুষকে ভালোবাসে সেদিন চাক্ষুষ দেখেছি।’

'হাঙর নদী গ্রেনেড' ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে বিজয় চৌধুরী ধন্য মনে করেন নিজেকে। তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম-এর প্রতি। আমরাও আনন্দিত তার সাথে পরিচিত হতে পেরে এবং মানুষকে জানাতে পেরে। 'রইস' চরিত্রটি নিজগুণে মুক্তিযুদ্ধের ছবির দর্শকের মনে অমর হয়ে আছে, থাকবে পাশাপাশি বিজয় চৌধুরী নামটিও বেঁচে থাকবে 'রইস' চরিত্রের অসাধারণ অভিনয়গুণে।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন