Logo
Logo
×

সংগঠন সংবাদ

সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে ঝুট ব্যবসায়ী হাতেমের বাধা

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে ঝুট ব্যবসায়ী হাতেমের বাধা

মোহাম্মদ হাতেম

নারায়ণগঞ্জে বেশ কয়েকটি গার্মেন্টস কারখানা পরিদর্শন করেন ইউরোপিয়ান রাষ্ট্রদূত মি. মাইকেল মিলার। পরবর্তীতে শহরের চাষাঢ়ায় বিকেএমই’এ এর প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জে প্রকাশিত দৈনিক যুগের চিন্তা পত্রিকার সাংবাদিকদের পেশাগত কাজে বাধা প্রধান করেন বিকেএমই’ এ এর কথিত সভাপতি ঝুট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হাতেম। যা নিয়ে নারায়ণগঞ্জের সাংবাদিক সমাজে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ১৩ জানুয়ারি (সোমবার) বিকেএমই’এ এর নেতৃবৃন্দ’র সাথে ইউরোপিয়ান রাষ্ট্রদূত মি. মাইকেল মিলার বেশ কয়েকটি কারখানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মিলার। রাষ্ট্রদূত কারখানা পরিদর্শন শেষে বিকেএমই’এ এর ভবনে পৌছালে যুগের চিন্তা পত্রিকার কয়েকজন সাংবাদিক বিকেএমইএ’র গেইটের সামনে পেশাগত কাজে ভিতরে যেতে চাইলে বাধা প্রদান করেন বিকেএমই’এ এর সিকিউরিটি গার্ড।



সাংবাদিকরা জানান,  সে সময় প্রবেশ মুখে থাকা সিকিউরিটি গার্ডের হাতে ছিলো একটি লম্বা লিষ্টের কাগজ। তিনি প্রথমে জিজ্ঞেস করলেন কোন চ্যানেলে কাজ করেন। পরে সেই সাংবাদিক যুগের চিন্তার কথা বললে সিকিউরিটি গার্ড বলেন। যুগের চিন্তার কাউকে ভিতরে ঢুকতে (প্রবেশ করতে) দেওয়া যাবে না। কেন ঢুকতে দেওয়া যাবে না জানতে চাইলে সেই সিকিউরিটি গার্ডসহ আশপাশে থাকা কয়েকজন বলে উঠেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট হাতেম সাহেবের নির্দেশ রয়েছে। তিনি যুগের চিন্তার কাউকে বিকেএমইএ’র ভিতরে প্রবেশ করতে না করেছেন। শুধু যারা হাতেম সাহেবের ঘনিষ্ট সাংবাদিক তারাই প্রবেশ করতে পারবেন।



এদিকে ঝুট ব্যবসায়ী হাতেমে ছিলেন নারায়ণগঞ্জের কুখ্যাত ওসমান পরিবারের অন্যতম আস্থাভাজন। মোহাম্মদ হাতেম ওরফে (ঝুট ব্যবসায়ী হাতেম) ৫ আগষ্ট পটপরিবর্তনের পর (২৪ আগষ্ট) আওয়ামী লীগের অন্যতম দোসর সেলিম ওসমানের পদত্যাগপত্রের প্রেসক্রিপশনে শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন বিকেএমইএ'র সভাপতি পদ দখলে নেন। এর আগে বেশ কয়েক বছর যাবত সেলিম ওসমানের বানানো নির্বাহী সভাপতির পদে অধিষ্ঠিত ছিল হাতেম।



ওসমানদের ছত্রছায়ায় ২০১০ সাল থেকেই বিসিক এলাকার বহু ব্যবসায়ীকে চাঁদার অত্যাচারে ব্যবসা ছেড়ে যেতে বাধ্য করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এ সময় একদিকে ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ, অন্য দিকে জমি ব্যবসায় রমরমা সিন্ডিকেট গড়ে তোলে হাতেম। ওসমান পরিবারের প্রত্যক্ষ ঠিকাদার হিসেবে কাজ করতেন তিনি। একদিকে সেলিম ওসমান, শামীম ওসমান এবং অয়ন ওসমানের নিয়ন্ত্রিত বাহিনীকে ঝুট বিতরণ করতেন, অপরদিকে আজমেরী ওসমানের সাথে সখ্যতা রেখে তার ক্যাডারবাহিনীর মাধ্যমেও বিসেকের বহু ফ্যাক্টরির ঝুট নিয়ন্ত্রণ করতেন।



তবে শুধু ঝুট নয়, তিনি বিসিক শিল্প মালিক সমিতির পদ দখলে রাখায় সেখানকার বিচার- শালিশের নামে তার অবাধ্য ব্যবসায়ীদের উপর নানা অত্যাচারের কথা এখন সেখানকার মানুষের মুখে মুখে। হাতেমের কথার নড়চড় হলেই ব্যবসায়ীদের উপর অত্যাচারের খড়গ নেমে আসতো। এদিকে পটপরিবর্তনের পর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বিকেএমইএ’র সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করা। সেলিম ওসমানের প্রেসক্রিপশনে সেই বাসনা পূরণ হওয়ায় তিনি পুরনো মুখোশ পাল্টে ক্লিন ইমেজ হিসেবে নিজেকে আলোচনায় রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। যার কারণে সেলিম প্রেসক্রিপশনে হওয়া সভাপতি সেই বিষয়টি সকলের সামনে প্রকাশ্যে না এনে, সবাইকে বলেছিলেন যে তিনি সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন বাণিজ্যে মন্ত্রণালয় থেকে।



কিন্তু সত্য কখনো লুকিয়ে থাকে না সেলিম ওসমানের দেওয়া সেই প্রেসক্রিপশন প্রকাশে আসলে ও গত জুলাই-আগষ্টের আন্দোলনে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পাশে থাকার অঙ্গিকার ব্যক্ত করে দ্রুত আন্দোলনকারী ছাত্রদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছিলেন। এদিকে এই ওসমানদের দোসর মোহাম্মদ হাতেম ও বিকেএমইএ'র বর্তমান পর্ষদের বিরুদ্ধে অন্তবর্তীকালীন সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা, ও সচিব বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন বৈষম্যর শিকার বিকেএমইএ এর সাধারণ ব্যবসায়ীরা।



তা ছাড়া গত ১১ জানুয়ারি প্রেসক্লাবের ৭তলায় আমরা কেমন নারায়ণগঞ্জ চাই শিরোনামে অনুষ্ঠিত এক আয়োজনে চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাসুদুজ্জামান মাসুদ প্রকাশ্যে তার বক্তব্যে হাতেমকে স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। এই হাতেম যে বর্তমানে দেশের ব্যবসা ধ্বংসের কারন হয়ে দাড়িয়েছে প্রকাশ্যে এনেছেন। যাকে ঘিরে দ্রুত ব্যবসায়ীদের অন্যতম সংগঠন বিকেএমইএ’র পদ থেকে পদতাগ করার হুঁশিয়ারী দিয়েছেন। তা না হলে ব্যবসায়ীদের নিয়ে রাস্তায় নামার ঘোষণা দিয়েছিলেন মাসুদুজ্জামান মাসুদ।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন