লুটপাটের কৌশল জানায় দলে টানেন নেতারা
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
দীর্ঘ ১৬ বছর হোসিয়ারী ব্যবসায়ীদের আস্থার সংগঠন বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশন ছিলো সন্ত্রাসী ওসমানদের নিয়ন্ত্রণে।
নাজমুল আলম সজলের মতো ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে লুটপাট ও কৌশলে চুরি না বুঝায় নেতৃত্বের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বে ও আমরা সুযোগ পাই না বলে আক্ষেপ করছেন কয়েকজন ব্যবসায়ী। যাকে ঘিরে বর্তমানে সেই সেলিম ওসমান ও নাজমুল আলম সজলের পিছনে পিছনে যারা ছিলো তা ছাড়া বিগত কমিটিতে থেকে ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে রেখেছিলেন তারা আবারো নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপির দুই নেতার প্যানেলকে ভুলন্ঠিত করার চেষ্টায় মেতে উঠেছে।
এর আগে দীর্ঘ ১৬ বছর হোসিয়ারী ব্যবসায়ীদের আস্থার সংগঠন বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশন ছিলো সন্ত্রাসী ওসমানদের নিয়ন্ত্রণে। যাকে ঘিরে বছরের পর বছর ওসমানদের যারা পদলেহনকারী ছিলেন তারাই প্যানেল সাজিয়ে জিম্মি করে রেখেছিলেন হোসিয়ারী এসোসিয়েশন। কোন যোগ্য প্রার্থী বা ব্যবসায়ীদের পছন্দের কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে ও অত্যাচার, নির্যাতনের ভয়ে কেউ অংশ ও নিতে চাইতেন না। যাকে ঘিরে ওসমানদের প্রেসক্রিপশনে সিলেকশনেই হয়ে যেত নির্বাচন। কিন্তু পট পরিবর্তনের পর সংস্কারের মাধ্যমে ইতিমধ্যে হতে শুরু করেছে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোরম তফসিল, মনোনয়ন বিক্রিসহ নির্বাচন। ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী সংগঠনেরগুলোর নির্বাচন মধ্যে প্রথমই হচ্ছে বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের নির্বাচন। কিন্তু এই নির্বাচনে দুইটি বিএনপি মাইন্ডেট প্যানেলে আবারো সাবেক ওসমান দোসর সজলের প্যানেলের প্রার্থীদের অংশগ্রহণ নিয়ে ব্যবসায়ীদের মাঝে নানা সমালোচনা সৃষ্টি হচ্ছে। সকলেই বলছেন, যারা বিগত দিনে আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে চিহ্নিত সজলের সাথে ছিলেন তাদের মধ্যে ১২ জন কিভাবে দুইটি প্যানেলে ছিটিয়ে পড়লেন সেটা ভাবা বরই কঠিন। কারণ বর্তমানে একটি প্যানেলে যিনি রয়েছেন তিনি যোগ্যতা সম্পূর্ণ ব্যবসায়ী নেতা হিসেবে পরিচিত।
বিগত দিন হোসিয়ারী সমিতি নিয়ে নানাভাবে কাজ করেছেন এবং হোসিয়ারী সমিতির বর্তমান যে জনপ্রিয়তা ও আলোচনা সব কিছুর পিছনেই এই বদুর একটি আলাদা অবদান রয়েছে। কিন্তু তার অন্তরালে চোখে ফাঁকি দিয়ে কিভাবে তার প্যানেলে ৯ জন সাবেক কমিটির দোসর অংশ নেয় সেটা অকল্পনীয়। তা ছাড়া আরেক প্যানেল সতন্ত্র মালিক ঐক্য ফোরাম। যেখানে রয়েছে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রেজা রিপনসহ, সদর থানা বিএনপির সভাপতি মাসুদ রানাসহ অনেকেই কিন্তু ঠিক একই ভাবে এই প্যানেলে ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামীসহ জড়িত না থাকা অনেকেই। এ ছাড়া অভিযোগ রয়েছে এই প্যানেলে উচ্চ পদে প্রার্থী হয়েছে এমন কয়েকজনের কোন প্রকারের ব্যবসা নেই। এদিকে বিগত দিনে বছরের পর বছর জিম্মি থাকা হোসিয়ারী সমিতির নির্বাচন না হওয়ায় হতাশা দেখা মিলছিলো ব্যবসায়ীদের কিন্তু সকল আশা আকাঙ্খার উর্ধ্বে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারী নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে (২০২৫-২০২৭) সালের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে হোসিয়ারী সমিতির দুই প্যানেলের ৩৩ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। যার মধ্যে বর্তমানে বদু প্যানেলে থাকা ৯ জনই বিগত দিনের ওসমানদের হাতে বানানো নাজমুল আলম সজলের প্যানেলেই ছিলো। এর বাহিরে আরো ৩ জন রয়েছে। দুই প্যানেলের প্রায় ১২ জন যারা বিগত দিনে ওসমানদের পদলেহনকারী ছিলেন। অন্য দিকে রেজা রিপনের প্যানেলে ৪ জন যারা বিগত দিনে ওসমানদের দোসর ছিলেন।
এদিকে জানা গেছে, গত ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসা পর থেকে বাংলাদেশ হোসিয়ারি সমিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন ওসমান পরিবার। ওই সময় প্রয়াত নাসিম ওসমানের পর সেলিম ওসমান আঙ্গুলের ইশারায় করা হয় হোসিয়ারি সমিতি কার্যনির্বাহী কমিটি। ২০১৪ সালে সেলিম ওসমানের ইশারায় হোসিয়ারী সমিতির সভাপতি হন নাজমুল আলম সজল। শহর স্বেচ্ছাসেবকলীগের তৎকালীন সভাপতি ছিলেন তিনি। যিনি বিগত দিনে একগুচ্ছ করে রেখেছিলেন হোসিয়ারী এসোসিয়েশন। হতে দেয়নি কোন নির্বাচন সিলেকশনের মাধ্যমেই সজল-কবির বারবারই সভাপতি ও সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এরা ব্যবসায়ীদের উপর বহু মাত্রায় নির্যাতনের খড়গ চাপিয়ে দিতেন। এ ছাড়া সেলিম ওসমানের নামে বিভিন্ন কৌশলে চাঁদাবাজি, পিকনিকের নামে চাঁদাবাজি, অনুষ্ঠানের নামে চাঁদাবাজি করে সবই শামীম ওসমান, সেলিম ওসমান ও সজল-কবিরের পকেটে যেত। বিভিন্ন অপকর্মের ভয়ে গত ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর সজল দুবাই পালায়। সজল ও কবির হোসেনের অনুপস্থিতিতে তাদের অন্যতম দোসর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হন সাঈদ আহম্মেদ স্বপন। যিনি বিগত দিনে সজল ও কবিরের ঘনিষ্ঠ লোক ও এসোসিয়েট গ্রুপের পদে ছিলেন। এদিকে বিগত দিনে ও বর্তমানে চুরি শিখতে পাড়ায় পূনরায় চাঞ্জ পাওয়াদের মধ্যে রয়েছেন, সাঈদ আহমেদ স্বপন, আলহাজ্ব মোঃ মনির হোসেন, বৈদ্যনাথ পোদ্দার, আলহাজ্ব মোঃ আবদুল হাই, হাজ্বী মোঃ শাহীন হোসেন, আলহাজ্ব নাছিম আহমেদ, আলহাজ্ব মোঃ নাছির শেখ, আলহাজ্ব মোঃ মিজানুর রহমান, মোঃ আতাউর রহমান, মোঃ আবুল বাশার (বাসেত), সুশান্ত পাল চৌধুরী, বাবুল চন্দ্র দাস। যাকে ঘিরে বর্তমানে হোসিয়ারী সমিতির দুই প্যানেলেই ফ্যাসিবাদীদের দোসরদের লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যা নিয়ে ব্যবসায়ী ভোটারদের মাঝে সমালোচনার ঝড় বইছে।