Logo
Logo
×

সংগঠন সংবাদ

চেম্বারের সভাপতি হলেন শামীম ওসমানের পারিবারিক বন্ধু দিপু ভূঁইয়া

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

চেম্বারের সভাপতি হলেন শামীম ওসমানের পারিবারিক বন্ধু দিপু ভূঁইয়া
Swapno

নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি একটি ঐতিহ্যবাহী ব্যবসায়ী সংগঠন হলেও গত দেড় যুগ থেকে ওসমান পরিবারেরর কবলে ছিল এর নিয়ন্ত্রণ। অনেকটা পারিবারিক সংগঠন হিসেবে ওসমান পরিবার এটিকে পরিণত করেছিলেন। সর্বশেষ যাকে চেম্বারের সভাপতি করা হয়েছিল সেই খালেদ হায়দার খান কাজল ছিলেন শামীম ওসমানের ন্যাংটাকালের বন্ধু এবং ওসমান পরিবারের বিশ^স্ত সহচর। যার কাজই ছিল সেলিম ওসমান, শামীম ওসমান এবং নাসিম ওসমানের লেজুরবৃত্তি করা।

ঐতিহ্যবাহী সংগঠনটি কখনো ওসমান পরিবারের রাহু থেকে মুক্ত হতে পারেনি। ভাড়াটিয়া ভবন থেকে চাষাঢ়ার চানমারিতে নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের নিজস্ব ভবন হলেও গোলামীর শৃঙ্খল থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীরা। বছরের পর বছর বিনাভোটে সেলিম ওসমানের নির্দেশে চেম্বারের সভাপতি নির্বাচিত হতো। ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর ওসমান ভ্রাতৃদ্বয় গা ঢাকা দেয়। শামীম ওসমান সীমান্ত পাড়ি দিয়ে চলে যান কলকাতা হয়ে দুবাই। আর সেলিম ওসমান থেকে যান লোকচক্ষুর অন্তরালে।

ওসমান সাম্রাজ্যের পতন ঘটলেও তাদের দোসররা থেকে যান আনাচে-কানাচে। ব্যবসায়ীদের বিশ^াস ছিল, একটি জেলার সর্ববৃহৎ সংগঠন নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির গণতন্ত্র ফিরে আসবে। ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হবে পরিচালক। জনরায়ের ভিত্তিতে প্রতিনিধি নির্বাচনের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার তার স্বাতন্ত্র ধারায় ফিরে আসবে। কিন্তু শুরু থেকে দেখা গেছে, চেম্বারকে ঘিরে নানা নাটক মঞ্চস্থ হতে। নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণা হলেও অজানা ভয়ে ও আতঙ্কে ব্যবসায়ীদের বড় একটি অংশ নির্বাচনে অংশ নিতে কোন আগ্রহই দেখায়নি।  শেষ মুহুর্তে কছিু লোকজন ও ব্যবসায়ী নির্বাচনের বিষয়ে আগ্রহ দেখালেও রহস্যজনক কারণে তারাও নির্বাচনের মাঠ ছেড়ে দিয়ে পেছন দিকে দৌড়াতে শুরু করে। আর যা হবার তাই হলো। বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়ে গেলেন ১৯ জন পরিচালক।

তালিকা দেখেই শুরুতে ধারণা হয়েছিল বহুদূও থেকে উড়ে আসা বিএনপি নেতা দিপু ভূঁইয়া এবার নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি হচ্ছেন। কারণ এর আগে কখনোই দিপু ভূঁইয়াকে নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো নিয়ে মাথা ঘামাতে দেখা যায়নি। তিনি রাজনীতি করেছিলেন রূপগঞ্জে। যা কিছু করেছিলেন সব রূপগঞ্জকে ঘিরেই।  এই দিপু ভূঁইয়া রূপগঞ্জের একটি ঐতিহ্যবাহী পরিবারের সন্তান। এক নামেই তাঁর পরিবারটিকে চেনেন দেশের মানুষ। শামীম ওসমানের পারিবারিক বন্ধু দিপু ভূঁইয়া। গুলশানের দিপু ভূঁইয়ারা মালিকানাধীন ‘গাউছিয়া এপার্টমেন্টে’ বসবাস করতেন শামীম ওসমান ও তার পরিবারের সদস্যরা। ৬ হাজার স্কয়ার ফিটের সেই ফ্ল্যাটটি শামীম ওসমানকে দিয়েছিলেন দিপু ভূঁইয়া। বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, দিপু ভূঁইয়া শামীম ওসমান পরিবারের এতোটা ঘনিষ্ট ছিল যে, ৫ আগস্ট দেশ যখন উত্তাল,  শেখ হাসিনা যখন পালিয়ে যাচ্ছেন তখন শামীম ওসমানের স্ত্রী সালমা ওসমান লিপি, তার মেয়ে লাবিবা জোহা অঙ্গনা, অয়নের স্ত্রী ইরফানা আহমদ রাশমী, অয়নের শিশু পুত্র আরজিয়ান এই চারজনকে গুলশান থেকে উদ্ধার করে নিজেই সিলেটে রেখে আসেন। সিলেট সীমান্ত পাড়ি দিয়ে পালাতেও সাহায্য করেন। নিউ জামতলায় শামীম ওসমানের শ^শুরবাড়িটি তৈরি করে দিচ্ছেন দিপু ভূঁইয়ার মালিকানাধীন বিল্ডার্স।

ব্যবসায়ী তখা নারায়ণগঞ্জবাসীর আশা-আকাঙ্খা ছির চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিতে এবার অন্তত রাহুমুক্ত হবে। সেই আশায় গুড়েবালি। শামী ওসমানের পারিবারিকবন্ধু হিসেবে পরিচিত দিপু ভূঁইয়া চেম্বার অব কমার্সের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে ওসমানের পরিবারের বলয়কে ভেঙে ফেলবেন না কি আঁকড়ে ধরে তাদের পৃষ্ঠপোষকতা চালিয়ে যাবেন তাই এখন দেখার বিষয়।  

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দিপু ভূঁইয়া চেম্বারে আসা, নির্বাচনে অংশ নেওয়া এবং সভাপতি নির্বাচিত হওয়া সবকিছুর পেছনেই রয়েছে ওসমান পরিবারের হাত। 

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন