Logo
Logo
×

নগরের বাইরে

বেপরোয়া শাহেনশাহকে রুখবে কে

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট :

প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:০১ পিএম

বেপরোয়া শাহেনশাহকে রুখবে কে

# তার শেল্টার পেয়ে গত সপ্তাহে একজনকে হত্যা করেছে তার অনুসারীরা


সাবেক ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাথে আতাঁত করে চলা সাবেক কাউন্সিলর শাহেন শাহ বর্তমানে বন্দরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। পট পরির্বতনের দুই মাসে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়িতে আগুন ও মামলার ভয়-ভীতি দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। এ ছাড়া তার শেল্টারে তার লোকজন চাঁদাবাজি, দখল, লুটপাট, মামলা বাণিজ্যে, ভূমিদস্যূতা, থানা নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন কায়দায় অপকর্মের মাধ্যমে বন্দরে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্যে করেছেন এই বন্দর থানা বিএনপির সভাপতি শাহেনশাহ আহম্মেদ।

 

আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হলে এর পরবর্তী সময় থেকেই শাহেনশাহর ইশারায় বন্দর জুড়ে সন্ত্রাস, নৈরাজ্যে লুটপাট লিপ্ত হন বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীরা। আর এই সকল অপরাধের নিয়ন্ত্রণ বা নেতৃত্বে সঙ্গ দিতেন সন্ত্রাসী হত্যা মামলার আসামী পিংকি, বিএনপি পরিচয়দানকারী নেতা টিপু, যুবদল নেতা সূজনসহ আরো বেশ কয়েকজন। এদের মাধ্যমে বন্দর জুড়ে বিভিন্ন শিল্পাঅঞ্চলে বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা দখল করে চাঁদাবাজি করছেন তিনি। এ ছাড়া বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র হত্যা মামলা দায়ের করিয়ে শুরু করেন মামলা বাণিজ্য এবং এই মামলার বাণিজ্যের অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মামলায় সংযোজন এবং আর্থিক সুবিধায় বিয়োজন করছেন। এর বাহিরে ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের দ্বারা সংগঠিত চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন মিল ইন্ডাষ্ট্রির নিয়ন্ত্রণ আওয়ামী লীগের সাথে আঁতাত করে শাহেনশাহ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন। 

 

তাছাড়া সবচেয়ে লোমহর্ষক ঘটনা হচ্ছে বন্দর জুড়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল ও জোরপূর্বক ভূমি জবরদখল করছেন এই শাহেনশাহর সমর্থকরা। বর্তমানে হাট-ঘাট দখল, ব্যবসা-বানিজ্যে নিয়ন্ত্রণ, মামলা বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন শাহেনশাহ। ক্ষমতায় না থেকে ও  বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন শাহেনশাহ ও তার বাহিনীরা। যার ধরন হিসেবে গত (১৩ অক্টোবর) রাতে বন্দর রূপালী এলাকায় শাহেন শাহ এর অনুসারী সন্ত্রাসী কয়েকটি হত্যা মামলার আসামী পিংকিসহ আরো বেশ কয়েকজন মিলে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কুপিয়ে হত্যা করেন। যা নিয়ে ইতিমধ্যে বন্দর জুড়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত দিন থেকেই বন্দরে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে এই শাহেনশাহ ও তার বাহিনীদের নাম আলোচনায় ছিলো। বর্তমানে সেই রূপ ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের নাম সহ বিক্রি করে তার সাথে গাড়িতে এক সাথে বসানো ছবি স্থানীয় নেতাকর্মীদের দেখিয়ে আরো ব্যাপক আধিপত্য বিস্তার শুরু করেছেন তিনি। এখন বন্দরের ভোক্তভোগীদের একটাই কথা শাহেন শাহকে রুখবে কে?
সূত্র বলছে, বহু বছর যাবৎই বন্দর জুড়ে সুবিধাভোগী নেতাকর্মীদের তালিকায় সর্বপ্রথম নাম উঠে আসে শাহেনশাহ আহম্মেদের। গত কয়েক বছর নিজ এলাকায় নিজেকে আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসা সেই শাহেন শাহ গত ৫ আগষ্টের পর থেকে নিজেকে ত্যাগী বিএনপি নেতা হিসেবেই দাবী করছেন তিনি। যার বলে পটপরিবর্তনের রাতেই  কর্ণফূলী ডক ইর্য়ার থেকে লুটপাট করেছেন বড় একটি জাহাজ যা কার্টার মেশিন দিয়ে যুবদল নেতা সূজনসহ ২০/২৫ জন এবং ফরাজিকান্দা এলাকার কিছু লুটতরাজদের সমন্বয়ে একাই কোটি টাকার জাহাজ কেটে নিয়ে যায় এই শাহেনশাহ। কেটে তার নিজস্ব ডকইর্য়ারে পৌঁছানো হয়। 

 

তা ছাড়া কলাগাছিয়া ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের কাছ থেকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ৩০ লক্ষ টাকা নিয়ে তার একটি পেট্রাল পাম্প পরিচালনা করতে সহযোগিতা করেন এই শাহেনশাহ। সেই টাকার পাশাপাশি তার সেই পেট্রোল পাম্পের ব্যবসা থেকেও মাসিক টাকা আর্থিক সুবিধা নিতে থাকে। যা দুই মাস যাবৎ চলমান। তা ছাড়া ও ফরাজিকান্দা এলাকার বসুন্ধরা সিমেন্ট ফ্যাক্টরীর ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে শাহেনশাহ। যেখান থেকে তিনি কম দামে ভয়-ভীতি দেখিয়ে মাল বেড় করছেন। সোনাকান্দার ঐতিহাসিক সপ্তাহিক হাট যা সিটি কর্পোরেশনের ইজারা ভুক্ত সেই হাটের ইজারাদারের দায়িত্ব তিনি বুঝে নিয়ে সেই হাট দখলে নিয়েছেন।

 

তাছাড়া সোনাকান্দা এলাকার একটি কমিটি সেন্টার দখল, জাতীয় পার্টির নেতা সানাউল্লাহ সানুর পুকুরের মাছ চুরিসহ বন্দর জুড়ে ব্যাপক অত্যাচার চালাচ্ছে এই শাহেনশাহ। বিগত দিনে নাসিক ২০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর থাকাকালীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ফুলের তোড়া দিয়ে বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেয়া, এলাকাবাসীর কাছ থেকে নেওয়া হাঁটের কমিশনের লাখ লাখ টাকা মেরে দেয়া। দফায় দফায় টিসিবির মাল চুরি, মহিলা কাউন্সিলরকে মারধরসহ বন্দরে ঢুকতে না দেওয়ার ভয়-ভীতি দেখিয়ে বিএনপি নেতা পনেছকে বিএনপির পদ থেকে সরিয়ে সম্মেলনের মাধ্যমে নিজেই থানা বিএনপির সভাপতি বনে যাওয়া।

 

তার বিরুদ্ধে বিগত দিন থেকে নানা অভিযোগ থাকলে ও কোন কিছু তোয়াক্কা না করেই আরো অপকর্মের জন্ম দিচ্ছেন তিনি। তা ছাড়া এই শাহেনশাহর সহযোগী যুবদল নেতা সূজনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ রেখেছেন বন্দর থানা। যেখানে বসে বসে করছেন মামলা বাণিজ্য। তাছাড়া বন্দর এলাকায় থানায় কোন মামলা আসলে সেটা যদি শাহেনশাহর পরিচিত হয় বা তাকে তদবির করে সেই অভিযোগ বা মামলা থানায় নেওয়া হয় না। এদিকে বিএনপি হোক বা আওয়ামী লীগ শাহেনশাহর কথার বাহিরে যে যায় তার বিরুদ্ধেই মামলা দেওয়া হয়। বন্দর জুড়ে গুঞ্জন উঠছে পুরো থানা বর্তমানে কুক্ষিগত রয়েছে শাহেনশাহ ও তার বাহিনীর কাছে। 

 

তাছাড়া তার অনুসারী একজন বিএনপি নেতার মাধ্যমে গত ৫ আগষ্টের পর থেকে আওয়ামী লীগ নেতাদের লিষ্ট করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নেতা বুঝে ১০ হাজার থেকে শুরু করে ৫ লাখ টাকা ও তুলেছেন বহু আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের কাছ থেকে এমন অভিযোগ উঠে আসছে। এদিকে বন্দর এলাকার মেরাজ হত্যা মামলার আসামী পিংকি বিগত দিনে আওয়ামী লীগের সাথে থাকলেও বর্তমানে শাহেনশাহর সহযোগী হিসেবে এলাকা জুড়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। কিছুদিন পূর্বেও সোহান নামের এক যুবককে হত্যা করেছেন পিংকী ও তার অনুসারীরা। তাছাড়া যুবলীগ-ছাত্রলীগের কিছু লোকজনদের মাধ্যমে অস্ত্র মহড়া দিয়ে বন্দর জুড়ে নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন শাহেনশাহ ও তার সহযোগীরা। বর্তমানে বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা হাইকমান্ডের নিকট বিষয়টি অবগত করেছেন। কিন্তু এখনো কেন্দ্রীয়ভাবে কোন দিক বার্তা আসেনি। কিন্তু বর্তমানে যৌথবাহিনীর রেড সিগন্যালে শাহেন শাহ এর নাম পাওয়া গেছে বলছে সূত্র।

 

এ বিষয়ে জানতে বন্দর থানা বিএনপির সভাপতি শাহেনশাহর মুঠোফোনে একাধিক বার কল করলে ও তিনি তা রিসিভ করেননি।
 

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন