Logo
Logo
×

নগরের বাইরে

পাঁচ ইঞ্চি ইটের দেয়ালের উপরে দোতলা বাড়ি, ঝুঁকিতে এলাকাবাসী

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২০ পিএম

পাঁচ ইঞ্চি ইটের দেয়ালের উপরে দোতলা বাড়ি, ঝুঁকিতে এলাকাবাসী


কোনো বিম নেই, কলাম নেই। চারদিকে পাঁচ ইঞ্চি দেয়াল দিয়ে তার উপর তোলা হয়েছে দো’তলা বিল্ডিং। সেই বিল্ডিং দোতলায় গিয়ে আবার বাড়ানো হয়েছে। নেই রাজউকের বা সিটি কর্পোরেশনের অনুমোতি। বিল্ডিং কোড অনুযায়ী চারদিকে জায়গা ছাড়ার কথা থাকলেও সে নিয়ম মানা হয়নি। এলাকাবাসি এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নির্মাণের বিরোধিতা করলে আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসী বাহিনী এনে হুমকি দেয়া হয় তাদের। যে কোনো সময়ে এই ভবন ধ্বসে বিশ-ত্রিশ জনের মৃত্যুর আতংকে আছেন এলাকাবাসি।  

 


ঝুঁকিপূর্ণ এই বাড়িটি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জের ওয়াপদা কলোনী রোডের বায়তুর রহমান জামে মসজিদের পাশে। বাড়িটির পাশের বাসিন্দা আবু রশিদ মোহাম্মদ রাহাগীর এর স্ত্রী মাসুমা রাহাগীর জানান, তাদের প্রতিবেশি তোফাজ্জল হোসেন প্রায় দুই বছর আগে কোনো বিম কলাম ছাড়াই পাঁচ ইঞ্চি ইটের দেয়াল তোলেন। প্রথমে তিনি জানিয়েছিলেন দেয়ালের উপরে টিন দেবেন।

 

 

পরে তিনি এসে বলেন যে, টিন আর পাকা ছাঁদের মধ্যে খরচের পার্থক্য সামান্য। এছাড়া টিনের ছাঁদ দ্রুত জং ধরে যায়। তাই তিনি পাকা ছাঁদ-ই দিতে চাচ্ছেন। এরপর বছর খানেক আগে তিনি সেই একতলার উপরে পাকা দো’তলা তোলা শুরু করলে এই বাড়ির চারদিকে থাকা এলাকাবাসি বাঁধা দেয়। কারন যে জায়গাটিতে ভবন করা হয়েছে সেটি অল্প কয়েক বছর আগেই ডোবা ছিলো।

 

 

জায়গাটি পলিথিন, ময়লা আবর্জনা দিয়ে ভরা। ফলে দো’তলা নির্মাণ করলে এটি ধ্বসে ব্যাপক প্রাণহানীর সম্ভাবনা থাকে। এলাকাবাসির বাধার প্রেক্ষিতে তোফাজ্জল হোসেন সে সময়ের সিটি কর্পোরেশনের স্থানীয় চার নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুদ্দিনের কাছে এলাকাবাসির বিরুদ্ধে বিচার দেন। কিন্তু কাউন্সিলর এলাকাবাসির বক্তব্য শুনে এ ভবনটি ঝুঁকিপূর্ন বলে রায় দেন।

 

 

তখন তোফাজ্জ্বল হোসেন ও তার ছেলের বউ জান্নাতুল সাথী আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসী ভাড়া করে এনে আবু রশিদ, তার ছেলে সাকিবসহ প্রতিবাদকারি এলাকাবাসিকে হুমকি ধামকি দিয়ে দ্বিতীয় তলা নির্মাণ করে। ৫ আগষ্টের গণঅভ্যুত্থানের পরে এই সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলে এলাকাবাসির মধ্যে আব্দুর রশিদের স্ত্রী মাসুমা রাহাগীর ও মরহুম নুরুল ইসলামের স্ত্রী শামীম আরা রাজউক ও সিটি কর্পোরেশনে এ বিষয়ে পৃথক অভিযোগ করেন। রাজউকের ইন্সপেক্টর সোহেল রানা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসলেও কোনো ব্যবস্থা নেননি। সিটি কর্পোরেশন থেকে এখনো এ ব্যাপারে কেউ খোঁজ নিতে আসেনি।

 


অভিযোগের ব্যাপারে তোফাজ্জ্বল হোসেন ও তার ছেলের বউ জান্নাতুল সাথী বলেন, দো’তলা বাড়ি করতে বিম পিলারের প্রয়োজন পড়েনা। তারপরেও নিচে পিলার দেয়া হয়েছে বলে মিস্ত্রী জানিয়েছে। এই এলাকায় বাড়ি করতে কেউ রাজউক, সিটি কর্পোরেশন থেকে পারমিশন নেয়নি। তাই তারাও নেননি। তাদের বাড়ি ঝুঁকিপূর্ন নয় বলে তিনি দাবী করেন। জান্নাতুল সাথী বলেন, আমার স্বামী শহীদুল ইসলাম সুমন বিদেশে থাকার সুযোগে প্রতিবেশিরা আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।

 


ঘটনাস্থলে তদন্তে যাওয়া রাজউকের ইন্সপেক্টর সোহেল রানা টেলিফোনে বলেন, ‘এই বাড়ির রাস্তা, ভবন কোনো কিছুতেই বিল্ডিং কোড মানা হয়নি। এটি ঝুঁকিপূর্ন ভবন।’ তাদের বিরুদ্ধে রাজউক কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে কিনা- এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এই মুহুর্তে ব্যস্ত আছি। অফিসে আসেন কথা বলি।’

 


এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নগর পরিকল্পনাবিদ মঈনুল হক বলেন, এর আগে সিদ্ধিরগঞ্জে ডোবা ভরাট করে নির্মাণ করা একটি ভবন হেলে পড়লে আমরা সেটি ভেঙ্গে ফেলি। এ ভবনটিও ঝুঁকিপূর্ন বলে পাওয়া অভিযোগে মনে হচ্ছে। সরেজমিন তদন্ত করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।      এন. হুসেইন রনী  /জেসি

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন