স্ত্রীকে হত্যা করে পলাতক স্বামী মুন্না, পুলিশ হেফাজতে সন্ত্রাসী তোফাজ্জল
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
অভিযুক্ত মুন্না, (নিহত) স্ত্রী মোসা. ফিজা ও সন্ত্রাসী তোফাজ্জল
ফতুল্লার কুতুবপুর লামাপাড়া নয়ামাটি এলাকায় স্বামী মুন্না কর্তৃক স্ত্রীকে হত্যা করে শিশু সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে নিজ বাড়িতেই মুন্না তার স্ত্রী মোসা. ফিজাকে হত্যা করে ঘরের জানালার গ্রিলের মধ্যে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রাখে। তবে এই ঘটনায় এলাকায় রোষানলে পরে কুখ্যাত সন্ত্রাসী পুইক্কার ছেলে ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্রহত্যা মামলার আসামি যুবলীগ ক্যাডার চুন্নুর ভাই তোফাজ্জলকে আটক করে এলাকাবাসী পুলিশের হাতে তুলে দেন। আটক তোফাজ্জল অভিযুক্ত মুন্নার চাচাতো ভাই। এই তোফাজ্জল এলাকায় চিহ্নিত ভূমিদস্য হিসেবে পরিচিত, সে বিগত দিনে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমানের আস্থাভাজন সন্ত্রাসী শাহ নিজামের ঘনিষ্ট হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। তবে ৫ আগস্টের পর শামীম ওসমান, শাহ নিজাম পালালেও এই কুখ্যাত তোজাজ্জল ভোল পাল্টে এলাকায় অপকর্ম করতে থাকে। তোফাজ্জলের ভাই চুন্নু বৈষম্যবিরোধী ছাত্রহত্যা মামলার আসামি। গোটা পরিবারই ওই এলাকার কুখ্যাত সন্ত্রাসী।
হত্যাকাণ্ডের শিকার ফিজার বাবা মোহাম্মদ আলী জানান, প্রায় ৫ বছর পুর্বে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক কুতুবপুর নয়ামাটি এলাকার মনু মিয়ার ছেলে আসাদুজ্জামান মুন্নার সাথে তার একমাত্র মেয়ে ফিজাকে বিবাহ দেন। তাদের সংসাওে মোরসালিন নামে ৩ বছরের এক পুত্র সন্তানও রয়েছে। তিনি বলেন,বিয়ের পর থেকেই মুন্নার আচরন ভাল ছিলনা। কারণে অকারণে তার মেয়েকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতো। এ নিয়ে একাধিকবার পারিবারিকভাবে বিচারও হয়েছে। এ নিয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরী ও অভিযোগও করা হয়েছিলো মুন্নার বিরুদ্ধে। প্রায় ৬ মাস পুর্বে আমাদের সবাইকে মুন্না বলে যে, পুর্বের মত আর কোন খারাপ আচরণ করবে আমার মেয়ের সাথে। এ কথা বলে আমার মেয়েকে পুনরায় তাদের বাড়িতে নিতে আসেন। আমরা পরিবারের সবাই একত্রিত হয়ে একমাত্র নাতির কথা চিন্তা করে আমার মেয়ে ফিজাকে মুন্নার সাথে তাদের বাড়িতে পাঠাই। বৃহস্পতিবার বিকেলে আমার মেয়েকে মারধর করে ঘরের গ্রিলের সাথে ওড়না পেঁিচয়ে ঝুলিয়ে রেখে মুন্না তার মা ও বোনদের নিয়ে এবং আমাদের ৩ বছরের নাতি মোরসালিনকে নিয়ে গা ঢাকা দেয়।
এ দিকে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো.ইমানুর। তিনি লাশের সুরতহাল দেখে লাশটি পোষ্টমর্টেম করার জন্য নগরীর ১০০ শয্যা হাসপাতালে পাঠায়। তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে মুন্নার শেল্টারদাতা ও তাঁর চাচাতো ভাই তোফাজ্জলকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় এলাকাবাসী।
অপরদিকে গৃহবধু ফিজাকে হত্যা করে ঘরের জানালার গ্রিলের সাথে ওড়না পেচিয়ে ঝুলিয়ে রাখার পর স্থানীয়রা বলেন, অত্র এলাকার সবচেয়ে খারাপ পরিবার হিসেবেই পরিচিত মুন্না গং। মুন্নার বাবা মনু মিয়া একজন চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ী, তাার চাচাতো চুন্নু ও রানা মোল্লা মামলা রয়েছে। গত সপ্তাহে ফতুল্লা মডেল থানার এসআই মাহমুদ রনি ১০০ কেজি গাজাঁসহ মুন্নার অপর চাচাতো ভাইকে গ্রেফতার করেছিলো। আমরা চাই গৃহবধূ ফিজা হত্যাকাণ্ডে তার স্বামী মুন্না ও সন্ত্রাসী পরিবারকে গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করা হোক।
এ বিষয় ফতুল্লা থানা ওসি শরিফুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল থেকে এলাকাবাসীর সাহায্যে তোফাজ্জলকে আটক করা হয়েছে। এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য তাকে পুলিশ হেফাজতে আনা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, যুগের পর যুগ এক সন্ত্রাসী পরিবারের হাতে জিম্মি ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকার জনপদ। ডাকাতি, হত্যা, অস্ত্রব্যবসা, খুন, মাদকব্যবসা, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ব্ল্যাকমেইলিংসহ সবরকমের রোমহর্ষক অপরাধ ফতুল্লার লামাপাড়া নয়ামাটি এলাকার এই পরিবারের নিত্যদিনের খেলা। পুলিশ-ডিবি-র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়ে জেলে যাওয়াকে এই সন্ত্রাসী পরিবার নিছক ছেলে খেলায় পরিণত করেছে।ব্যবসায়িক করিডোর হিসেবে পরিচিত ফতুল্লা থানা এলাকার কুতুবপুর ইউনিয়নের লামাপাড়া নয়ামাটি এলাকার মৃত আবু তালেব হোসেন ওরফে পুইক্কার চার ছেলেই সন্ত্রাসী। পুইক্কার চার ছেলে মোফাজ্জল হোসেন চুন্নু, তোফাজ্জল, রানা, উজ্জল। এরমধ্যে সন্ত্রাসী উজ্জল বেবি ট্যাক্সি (সিএনজির পূর্বে ছিল) চুরি করতে গিয়ে গণপিটুনিতে মারা যায়। জীবিত তিন সন্ত্রাসী ভাই কখনো যুবলীগ আবার কখনো আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয়ে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিল। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকারের আমলে গডফাদার খ্যাত শামীম ওসমানের ডানহাত মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সন্ত্রাসী শাহনিজামের শেল্টারে ছিলো এই সন্ত্রাসী পরিবারটি। এখন ক্ষমতার পালাবদলে ভোল পাল্টে বিএনপির শেল্টারে গিয়ে আগের মতো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে লামাপাড়ার ত্রাস এই সন্ত্রাসী পরিবারটি।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, দুর্ধর্ষ এক সন্ত্রাসী এই পুইক্কার চার ছেলে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোড হওয়ার পর পুইক্কার চার ছেলের মূলকাজই ছিল মহাসড়কে ডাকাতি করা। শিবু মার্কেট থেকে জালকুড়ি পর্যন্ত পুইক্কার দুই ছেলে চুন্নু ও তোফাজ্জল ডাকাত বাহিনী নিয়ে ডাকাতির নেতৃত্ব দিতো। খুন, ডাকাতি, ধর্ষণ, জমি দখল, জুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ, মাদকব্যবসা, ছিনতাই, অস্ত্রব্যবসা, সর্বশেষ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যামামলাসহ ৩০টির বেশি মামলা রয়েছে পুইক্কার ছেলে মোফাজ্জল হোসেন চুন্নুর বিরুদ্ধে। কখনো আওয়ামী লীগ, কখনো বা ভোল পাল্টে একের পর এক কুখ্যাতসব অপরাধ কর্মকাণ্ড যুগের পর যুগ চালিয়ে যাচ্ছে চুন্নু ও তাঁর ভাইয়েরা। এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেই যে পুইক্কা পরিবারের এক সময় যার নুন আনতে পান্তা ফুরাতো, এখন বিশাল বিত্ত বৈভবের মালিক, সাথে অস্ত্রভাণ্ডারে সজ্জিত এক বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী।
সূত্র জানিয়েছে, চুন্নুর হাতে রয়েছে বিশাল অস্ত্রের ভাণ্ডার। লামাপাড়া নয়ামাটি এলাকার এক সময়ের ত্রাস ও মূর্তিমান আতঙ্ক রেকমত ও ফজল হকের ক্রসফায়ারের পর তাদের অবৈধ অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী, মাদক বিক্রেতা, ডাকাত সর্দার ও ছিনতাইকারী চক্রের মূল হোতা পুইক্কার ছেলে মোফাজ্জল হোসেন চুন্নুর হাতে। ক্রসফায়ারে রেকমত বাহিনীর প্রধান রেকমত নিহতের পর তাঁর অস্ত্রের ভাণ্ডার হাতে পেয়ে গোটা লামাপাড়া এলাকায় দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীতে পরিণত হয় চুন্নু। শুধু দুই ভাই তোফাজ্জল ও রানার নেতৃত্বে সব ধরণের অপরাধ কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য বিশাল বাহিনী গড়ে তোলে। গডফাদার শামীম ওসমানের ক্যাডার সন্ত্রাসী শাহ নিজামের শেল্টারে আরো দুর্ধর্ষ হয়ে ওঠে এই চুন্নু। গোটা লামাপাড়ায় ক্রসফায়ারে নিহত রেকমতের মতোই আতঙ্ক তৈরি করে চুন্নু ও তার দুই ভাইয়ের বাহিনী। বারবার র্যাব পুলিশের হাতে অস্ত্র, মাদকসহ গ্রেফতারও হয়েছিলো চুন্নুসহ তার সন্ত্রাসী ভাইয়েরা। তবে প্রতিবার গ্রেফতারের পর সে আরও বেশি দুর্ধর্ষ হয়ে ফিরে আসে এলাকাতে। ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের বিভিন্ন সভা-সমাবেশে তাঁকে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে মিছিল নিয়ে যোগ দিতে দেখা গেছে। লামাপাড়া এলাকায় সাংসদ শামীম ওসমানের ছবি সম্বলিত ব্যানার ফেস্টুনও টাঙিয়েছিলো সে নিজেকে যুবলীগ নেতা দাবি করে। সেসব ফেস্টুনে সাঁটানো ছিলো তাঁর নিজেরও ছবি।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পুরোটা সময় স্থানীয় মিল ফ্যাক্টরীর ঝুট সেক্টর থেকে শুরু করে মাদক ব্যবসার একচ্ছত্র অধিপতি ছিল এই দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী চুন্নু। এছাড়াও এলাকার শীর্ষ ভূমিদস্যু হিসেবেও তাঁর কুখ্যাতি ছিল। এছাড়াও বিদেশী মদ থেকে শুরু করে ইয়াবার পাইকারি ব্যবসায়ীও সে। তাঁর রয়েছে মাদকের বিশাল নেটওয়ার্ক। নিজ বাড়ি পুরোটাই সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এছাড়াও তাঁর বাড়ির পথের দিকে বেশ কিছু স্থানে স্থাপন করা হয়েছে সিসি ক্যামেরা। ফলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি খুব সহজেই সে অনুমান করতে পারে। আর এভাবেই গোটা পরিবার নিয়ন্ত্রণ করে অপরাধ জগতের এই সাম্রাজ্য।
৩০টির বেশি মামলা থাকলেও একের পর এক অপরাধ করে বিশাল অস্ত্রভাণ্ডার নিয়ে নির্ভার ছিল চুন্নু ও তার গোটা সন্ত্রাসী বাহিনী। সূত্র জানিয়েছে, ২০১৯ সালের গত ২০ এপ্রিল রাতে চুন্নুকে কুতুবপুর নয়ামাটি এলাকার তার নিজ বাসার সামনে থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ সময় চুন্নুকে ছাড়িয়ে নিতে তার বাহিনীর সদস্যরা পুলিশ উপর হামলা চালালে ৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়। তাদেরকে খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। এর আগে বিদেশী পিস্তল, ম্যাগাজিন, ৬ রাউন্ড গুলি ও বিদেশী মদ বিয়ারসহ ২০১৫ সালের ৩ মার্চ ফতুল্লার লামাপাড়া নয়ামাটি এলাকা থেকে মোফাজ্জল হোসেন চুন্নুকে গ্রেফতার করে র্যাব-১১।
ওই সময় পুরাতন কোর্ট এলাকার র্যাব-১১ এর সিপিসি-১ এর এএসপি মাসুদ আনোয়ার জানিয়েছিলেন, চুন্নু একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী এবং চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তাঁর রয়েছে নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী। এই বাহিনী দ্বারা সে ভূমি দখল ও মাদক বিক্রি করাতো। চুন্নু গ্রেফতার হওয়ার পর তাঁর অস্ত্র ভাণ্ডারের সন্ধানে নামে র্যাব-১১। এর আগেই র্যাব জানতে পেরেছিলো চুন্নু তাঁর স্ত্রীর মাধ্যমে তাঁর অস্ত্র নিকট আত্মীয়দের বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছে।
এরপরই একই বছরের ১৪ মার্চ র্যাব-১১ চুন্নুর শ্যালিকা সুমাইয়া আক্তার মুন্নির চোধুরী বাড়ি এলাকার বাড়িতে অভিযান চালায় এবং সেখান থেকে একটি বিদেশী পিস্তল, ২টি ম্যাগজিন, ৮ রাউন্ড গুলি ও চাইনিজ কুড়াল উদ্ধার করে।
২০১৭ সালের ৩ আগস্ট চুন্নু ও তাঁর বাহিনীর বিরুদ্ধে জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন লামাপাড়া এলাকার মো. হাবিব মিয়া। এখানে হাবিব মিয়া দাবি করেছিলেন চুন্নু ও তাঁর বাহিনী অস্ত্র নিয়ে তাঁর উপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং তাঁর কাছ থেকে নগদ টাকাসহ মোবাইল ফোন লুটে নেয়।
একই বছরের ১০ নভেম্বর ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আতাউর রহমান চুন্নুকে গ্রেফতারে অভিযান চালায়। এসময় চুন্নুর বাড়ির দ্বিতীয় তলা থেকে তাঁকে আটক করলেও তাঁর সহযোগিরা পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে তাঁকে ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় চুন্নু পালিয়ে গেলেও তাঁর সহযোগি আরফান মাদবরকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনার ঠিক সাড়ে তিন বছর আগে চুন্নুর সেকেন্ড-ইন-কমান্ড রাফেদ আলীকে একই থানার এসআই জিন্নাহর উপর হামলা চালিয়ে ছিনিয়ে নিয়েছিলো চুন্নু বাহিনী। পরে ২৫ অক্টোবর এই রাফেদ আলীকে গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
২০১৮ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের ২ নম্বর ঢাকেশ্বরী এলাকার আবু বক্করের নির্মাণাধীন বাড়ির দোতলা থেকে মাদক সেবনরত অবস্থায় চুন্নুকে গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ।
এর আগে ২০১৬ সালের ১৬ জুলাই সন্ধ্যায় ফতুল্লার লামাপাড়া নয়ামাটি এলাকা থেকে অবৈধ অস্ত্র ও মাদক ব্যবসায়ী মোফাজ্জাল হোসেন চুন্নুকে (৪৪) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের অভিযোগ ছিল, চুন্নু ও তার দুই ভাই তোফাজ্জল ও রানা বাহিনীর অত্যাচারে এলাকায় কোন সাধারণ লোক অথবা ব্যবসায়ীরা নয়ামাটি এলাকায় শান্তিতে বসবাস করতে পারেন না। নয়ামাটি এলাকায় কেউ বাড়ি করলে সেই বাহিনীকে চাঁদা দিতে হয়। কেউ ব্যবসা করলে প্রতিমাসে চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা না দিলে কাউকে শান্তিতে বসবাস করতে দেয় না তারা। চুন্নুর কারণে নয়ামাটি, লামাপাড়া এলাকায় কেউ নতুন বাড়ি করতে সাহস পায়না। তাকে ও তাঁর বাহিনীকে মোটা অংকের টাকা চাঁদা না দিলে কেউ বাড়ি বা ফ্যাক্টরীতে একটি ইটও লাগাতে পারেনা। নতুন জমি বেচাকেনাতেও চুন্নু বাহিনীকে মোটা অংকের টাকা দিতে হত। আশেপাশের এলাকায় জমির দাম বাড়লেও চুন্নু বাহিনীর চাঁদাবাজীর কারণে এই এলাকায় এখনও জমির দাম অনেক কম। এরকারণ চুন্নু ও তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনী। আওয়ামী লীগের পতনের পর এখন ভোল পাল্টে আবারো সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে মৃত পুইক্কার সন্ত্রাসী পরিবারটি। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে চুন্নু সাম্রাজ্যে পতনের পর আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠেন নয়ামাটি-লামাপাড়া এলাকাবাসী।