বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাহজারুল ইসলাম হিরণ ও সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ লিটন
পট পরির্বতনের পর নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার আওতাধীন বিভিন্ন শিল্প-কারখানায় চাঁদাবাজি, ঝুট সন্ত্রাসী, ভূমিদুস্যতা, দখলদারিত্ব, আওয়ামী লীগের মাথায় বিএনপির টুপি পড়িয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন অপকর্মে প্রকাশ্যে লিপ্ত হয়ে নানান অপকর্মে জড়িয়ে পরেছেন বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাহজারুল ইসলাম হিরণ ও সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ লিটন। যা তথ্য প্রমাণ সাপেক্ষে দৈনিক যুগের চিন্তা পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই বন্দর উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দদের মাঝে ব্যাপক অস্থিরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যাকে ঘিরে বর্তমানে হিরণ ও লিটন নিজ দলের নেতাকর্মীদের কাছে কোনঠাসা হয়ে পড়ছেন।
এদিকে অনেকেই হিরণ ও লিটনের নেতৃত্ব ছেড়ে দিচ্ছেন আবার অনেকেই বন্দর উপজেলা বিএনপি থেকে হিরণ ও লিটনকে বয়কটের ডাক দিয়েছেন। তা ছাড়া বিএনপির অনেক ত্যাগী নেতাকর্মীরা বলছে, বিগত দিনে বন্দর উপজেলার আওয়ামী লীগের লিয়াজুকৃত সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ আন্দোলন সংগ্রামের নাম উঠে আসলেই বেশির ভাগ সময় অসুস্থ হয়ে পড়তেন। কিছু সময় হাত ভেঙে গেছে, আবার কিছু সময় পাঁ ভেঙে গেছে এমনটাই বলে আন্দোলন সংগ্রামের বাহিরে থাকতেন। তা ছাড়া যিনি ২৮ অক্টোবরের আন্দোলন থেকে শুরু করে জুলাই-আগষ্টের ছাত্র জনতার আন্দোলনে কোন প্রকারের নেতৃত্ব বা দিক নির্দেশনায় দেখা যায়নি।
তা ছাড়া সূত্র বলছে, এর আগে ও কোন আন্দোলন সংগ্রামে হিরণ ও লিটনের সম্পৃক্ততা ছিলো না বলা চলে। কিন্তু পট পরিবর্তনের পর এই হিরণ বন্দর উপজেলা বিএনপির বড় নেতা সেঁজে গিয়ে বিএনপির একজন কেন্দ্রীয় নেতার নাম বিক্রি করে বহু অপকর্ম করেই যাচ্ছেন। এখন আর অসুস্থতার বাহানা দেখাতে হয় না এই হিরণকে। এদিকে বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে যুক্ত হয়ে বহু ত্যাগী নেতাকর্মীরা হিরণ ও লিটনকে সুদিনে সমর্থন করতে চাইছেন না। যার ফলপ্রশ্রুতি হিরণ ও লিটন কর্মী শূন্যতায় ভেঙে পড়ছেন। বর্তমানে দলীয় পোগ্রামসহ বিভিন্ন পোগ্রামে হিরণ ও লিটনের পিছনে বিশাল কর্মী বাহিনী এখন আর দেখা যায় না।
এদিকে বিগত দিনে হিরণ ও লিটনকে সমর্থন দেওয়া বন্দ উপজেলা বিএনপির ৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৪৩ জন নেতাকর্মী তাদের ৫ ই আগষ্টের পরের সকল অপকর্মের কর্মকাণ্ড প্রমানসহ তুলে ধরে তাদের বহিস্কার চেয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বরাবার লিখিত অভিযোগ করেছেন এদের মধ্যে রয়েছেন, বন্দর উপজেলার আওতাধীন মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, মদনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, ধামঘর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, বন্দর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতিসহ আরো বেশ কয়েকজন। যাকে ঘিরে বর্তমানে বন্দর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন বিএনপির নেতাদের কাছ থেকে বিছিন্ন হয়ে পড়ছেন হিরণ ও লিটন। সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে হিরণ ও লিটনের কাছে রয়েছে, মদনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হিরনের ভাগিনা মামুন ভূ্ইঁয়া, ধামঘর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম খন্দকার, মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তারা মিয়া, বন্দর উপজেলা যুবদর নেতা বাদল ও বাবুল। এর বাহিরে বর্তমানে সাইনিং পাওয়ারের বহু নেতকার্মী হিরণ ও লিটনকে বয়কট করেছে। তা ছাড়া ৫ আগষ্টের পর থেকে এদের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকার চাঁদাবাজিসহ শতকে শতকে জমি দখল, মাসিক মসোয়ারাসহ বন্দর উপজেলা জুড়ে বহু অপকর্ম উঠে আসছে যাকে ঘিরে বর্তমানে হিরণ ও লিটনের বিরুদ্ধে দ্রুত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে জোর দাবী করছেন দলের ত্যাগী নেতৃবৃন্দ।
এ দিকে গত শনিবার বন্দর উপজেলা বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীরা হিরণ ও লিটনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তারা বলেন, হিরন ও লিটন ২৮ শে অক্টোবরের পর কোন আন্দোলন সংগ্রামে ছিল না তারা একটি ছবিও দেখাতে পারবেনা। তারা যদি কোন একটি ছবি দেখাতে পারে তাহলে আমরা বন্দর উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দগুলো আর রাজনীতি করবো না। তা ছাড়া গত ৫ই আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলন হল তাদের কোন ভূমিকা ছিল না। সভাপতিকে কোন কর্মসূচির কথা বললে উনি নিজেকে অসুস্থ দাবি করতেন। আর ৫ তারিখের পরের থেকে উনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে গেছেন। আর সেক্রেটারি লিটন তার ভাই হলেন বন্দর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল কাদির। আরেক ভাই হলেন মাদকসম্রাট কিছুদিন পূর্বে তার বিরুদ্ধে ১০ হাজার পিছ ইয়াবা সহকারে গ্রেপ্তারের পরে তাকে আদালত ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। তার পরিবার হলো আওয়ামী লীগের পরিবার। বিগত ১৭টি বছর আমরা রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি আর সে কন্ট্রাক্টধারি করেছে আওয়ামী লীগের সাথে লেয়াজু করে। আর তার ভাইরা লুটপাট করেছে। আজকে বলে সেও নাকি বলে নির্যাতিত।
তারা আরো বলেছিলেন যে, হিরণ সাব সবার কাছে বলে উনি নাকি ৪০বছর ধরে রাজনীতি করে। আর উনার সাথে কার ছবি উনার সাথে যত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ছবি। জেলা পরিষদের নির্বাচনের পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য মাসুম চেয়ারম্যান কে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন হিরণ। উনার সাথে যত আওয়ামী লীগ যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সাথে সুসম্পর্ক ছিল। যারা গত ছাত্র আন্দোলন ও বিগত সময় আমাদের বিএনপি নেতাকর্মীদের উপরে হামলা মামলা নির্যাতন করেছে তাদের সাথেই সুসম্পর্ক বজায় রেখেছেন হিরণ-লিটনের। এই সবকিছুর প্রমাণ কিন্তু আমাদের কাছে আছে। আজকে উনাদের জন্য বন্দর উপজেলা বিএনপির সুনাম ও মান ইজ্জত যা আছে সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। সভাপতি আর সেক্রেটারি যে সকল কার্যক্রম করছে বিএনপির আর ইজ্জত সম্মান থাকবে না। বিএনপির ভাপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন জনগণের পাশে থাকতে আর আমাদের সভাপতি হিরন সাহেব গিয়ে মানুষের জায়গা দখল করে। মানুষের জায়গা দখলতো করে আবার চাঁদাবাজি করে বিভিন্ন মিলস ফ্যাক্টরি থেকে জোরপূর্বক তারা মালামাল নামিয়ে আনেন আর নিজেদের এসে ত্যাগী নেতা দাবী করেন।