Logo
Logo
×

নগরের বাইরে

কুতুবপুরের ১০ কুতুবের দায়িত্বে কারা

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

কুতুবপুরের ১০ কুতুবের দায়িত্বে কারা

কুতুবপুরের ১০ কুতুবের দায়িত্বে কারা



অপরাধ ও অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য বলে খ্যাত ফতুল্লার কুতুবের অধিকাংশ অপরাধের পেছনে সরকারদলীয় রাজনৈতিক নেতা, হোমড়া-চোমরা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা দায়ী করছেন সচেতন মহল। শুধু তাই নয়, প্রত্যেক্ষ এবং পরোক্ষভাবে তারা অপরাধের সঙ্গেও জড়িত। এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। এক সময় নামধারী তারকা সন্ত্রাসীরা কুতুবপুরে সর্ব মহলে কুতুবগিরি করলেও সময়ের পরিবর্তনে বিভিন্ন সময়  তারাই লেবাস পাল্টে কেউ আবার কেউ রাজনৈতিক নেতা ছিলেন।


আওয়ামী লীগের আমলে দলীয় সাইনবোর্ড ব্যবহার করে নগদ অর্থ উপার্জন ও প্রভাব বিস্তার করে তৈরি করেছে কুতুবপুরের একাধিক  সন্ত্রাসী বাহিনী। উঠতি বয়সী যুবক এবং কিশোরদের ব্যবহার করেই এ সকল অর্থ পিপাসু এবং অসাধু রাজনীতিবিদরাই ভূমি দস্যুতা, চাঁদাবাজী, মাদক কারবার, জোরপূর্বক নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহ, বিচার-শালিসীর নামে অর্থ আদায়সহ নানা অপরাধের জন্ম দিয়ে স্থানীয়বাসীদের জিম্মি করে রেখেছে।


সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাদের প্রভাব । যার ফলে নির্যাতিত, ভুক্তভোগী ও ক্ষতিগ্রস্থরা তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না। এলাকাবাসীর তথ্যমতে, সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার বহুল আলোচিত কুতুবপুর ইউনিয়নের প্রতিটি এলাকার প্রকৃত চিত্র গা শিউরে ওঠার মতো। এখানে অবস্থা এমন পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে যে, অধিকাংশ নেতাই সরাসরি মাদক ও কিশোর গ্যাং পালনে জড়িত ছিলো।



জানা যায় স্থানীয় সাংসদ শামীম ওসমানের নেতৃত্বে এই সকল মাদক ব্যবসায়ীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে শামীম ওসমান একদিকে মাদক নিরসনের কথা বললেও অন্যদিকে তারই ঘনিষ্ট নেতাকর্মীরাই এই মাদক বিক্রির সাথে সরাসরি জরিত থেকে মাদকের ব্যবসা চালিয়ে যায়।



রসিকতা করে অনেকেই বলেছেন, কুতুবপুর হলো নারায়ণগঞ্জের টেকনাফ। আদতে এই ইউনিয়নে মাদকের টাকা কোন কোন নেতা খায়, সেই তালিকা করার চেয়ে মাদকের টাকা কে কে খান না, সেই তালিকা করাই সহজ। অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিগত বিএনপি সরকারের আমল থেকে কুতুবপুরে মাদকের বিকিকিনি শুরু হতো প্রকাশ্যে তৎকালীন সময়ে বিএনপি ক্যাডারেরা উপর মহলের আশীর্বাদ নিয়েই অবাধে মাদক ব্যবসা করেছেন।পট পরিবর্তনে পর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর পরই স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা মাদক সহ নানান সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে।



কুতুবপুর ইউনিয়নে যুগে যুগে একাধিক সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রনে ছিলো এক সময়ে এই কুতুবপুরে কুক্যাত  সন্ত্রাসী মেছের ছিলো পরবর্তীতে তার ভাই তোফাজ্জল নিয়ন্ত্রণ নেয় এই কুতুবপুরের অপরাধ জগৎ। তবে তারা দুজনই ক্রসফায়ারে নিহত হয়। তবে কুতুবপুরে রেখে গিয়েছিলেন মূর্তিমান আতঙ্ক মীর হোসেন মীরু যিনি আওয়ামী লীগের কোন রকম ভাইটাল পদে না থাকলেও নিজের সন্ত্রাসী বাহীনি ও কিশোর গ্যাং নিয়ে এলাকায় দারড়িয়ে বেড়িয়েছেন। আর নেতৃত্বে এমন কোন অপরাধ বাদ যায়নি।


তার নামে ২ ডজনেরও বেশি মামলা রয়েছে। যার মধ্যে বেশির ভাগই  হত্যা ও মাদকের মামলা।তবে এই কুখ্যাত মীরুর হাতিয়ার হিসেবে সব কিছু টেকেল দিতেন কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী জসিম উদ্দিন। আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়েও সন্ত্রাসী কার্যক্রমে সামিল হওয়ার জন্য সঙ্গ দিতেন সন্ত্রাসী মীরুর সাথে।


শাহী বাজার, বউ বাজার, রসুলপুর ,ভাঙ্গারপোল ,নয়ামাটি সহ বিভিন্ন এলাকায় ছিলো। অন্যদিকে নয়ামাটি এলাকায় চাঁদাবাজি ভূমিদস্যুতা নারী কেলেঙ্কারি সহ নানান অপকর্মে জরিত ছিলেন আলাউদ্দিন হাওলাদার যিনি কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ২ নং ওয়ার্ড সভাপতি ছিলেন। অন্যদিকে ভূইগড় এলাকার আরেক আতঙ্কের নাম ছিলো আল মামুন মিন্টু ভূইয়া যার কোন রকম জনপ্রিয়তা না থাকা সত্বেও জালিয়াতি করে হয়ে যান মেম্বার এমনকি এক সময় হয়ে যান প্যানেল চেয়ারম্যান এমনকি তার শামীম ওসমানের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে হয়ে যান বনে যান ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগ নেতা।


ভূইগড় এলাকা থেকে একটু সামনে আগালেই ধখা মিলতো মুর্তিমান আতঙ্ক দুই মুখ যাদের নিয়ন্ত্রনে চলতো সাইনবোর্ড এলাকায় যতো ধরনের চাঁদাবাজি ,সন্ত্রাসী, মাদক কারবারি সহ নানান অপকর্ম জুলাই -  আগষ্ট আন্দোলনে ছাত্রদের ওপর হামলা চালাতেও দেখা গেছে তাদেরকে। কুতুবপুরে আরেক আতঙ্কের নাম ছিলো খালেক যিনি কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির আদর্শ নগর, মুন্সিবাগ এলাকার আতঙ্কের নাম ছিলো এমনকি তার ভাই মালেক এলাকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবেও এলাকায় ব্যাপক সমলোচিত ছিলো।


এলাকায় বাড়ি করতে হলে তাদের কাছ থেকেই মালামাল নিতে হতো তা না হলে মালেক নিজেই প্রকাশ্যে পেটাতো। তবে এই সকল সন্ত্রাসীরা ৫ আগষ্টের পর আর দেখা যায়নি। শেখ হাসিনা ও পালিয়ে যাওয়ার পর পরই তারাও যে যার মতো পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তবে কুতুবপুরে আর কেউ যে তাদের কায়দায় সন্ত্রাসী না করতে পারে সেই আসাই করে এলাকার সাধারন মানুষ।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন