Logo
Logo
×

নগরের বাইরে

স্বেচ্ছাসেবকদল নেতাকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘিরে রহস্য ও আতঙ্ক!

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

স্বেচ্ছাসেবকদল নেতাকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘিরে রহস্য ও আতঙ্ক!

ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক মো. মামুন হোসাইন

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক মো. মামুন হোসাইনকে গুলি করে হত্যা করেছে দুবৃর্ত্তরা। গতকাল শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ভোর পৌনে ৫টায় ফতুল্লা রেললাইনের উপরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান বলে জানিয়েছেন ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। নিহত মামুন হোসাইন ফতুল্লা পূর্ব লালপুর রেললাইন এলাকার মৃত সমন আলী বেপারীর ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শী নিহতের প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার আজাদ মিয়া জানান, বালু, ইট, বালু সিমেন্ট লোড আনলোড করে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টায় বাসায় চলে যান মামুন হোসাইন। তিনি আবার ভোর পৌনে ৫টায় প্রতিষ্ঠানে সামনে এসে দাড়াঁন, ওই সময়ে অনেকগুলো গুলি শব্দ শুনতে পায়। দৌড়ে গিয়ে দেখেন মামুন হোসাইন নিচে লুটে পড়ে আছে। ওই সময় দুইজন যুবক (আনুমানিক ২৬-২৮ বছরের) দৌড়ে পালিয়ে যান।

ফতুল্লা রেললাইনে উপরে গুলিবিদ্ধ মামুন হোসাইনকে নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন ডাক্তার।

এদিকে নিহত মামুনের স্ত্রী ইয়াসমিন জানান, মামুন তাদের পাঁচ ভাই দুই বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। আমাদের সংসারে মামুনের ১৪ বছর বয়সী এক মেয়ে ও ১০ বছর বয়সী এক ছেলে সন্তান আছে। মামুনের উপার্জন দিয়েই সংসার চলতো। সন্তানরা লেখা পড়া করে। এখন আমাদের সংসারে হাল ধরার কেহ রইলো না। আমি সন্ত্রাসীদের বিচার চাই।

তিনি আরো বলেন, কার হুকুমে আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে এলাকার সবাই জানে। পুলিশও বুঝতে পেরেছে। আমি বলতে চাইনা। পুলিশ আমার স্বামীর হত্যাকারী ও হুকুমদাতাদের বের করে গ্রেফতার করবেন।

তবে এ ঘটনা নিয়ে রহস্য দানা বেধেছে। ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জাকির হাসান রবিন গণমাধ্যমকে জানান, কিছুদিন পূর্বেও আওয়ামী ফ্যাসিস্ট এর প্রেতাত্মারা আমাকেও হত্যার চেষ্টা করেছিল। হতে পারে তারাই আবার এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করেছে। যেহেতু মামুন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক। এ সময় তিনি স্থানীয় আক্তার সুমনের দিকে ইঙ্গিত করেন।

এ বিষয়ে  আক্তার  বলেন, আমি চিকিৎসার কাজে দীর্ঘদিন ধরে থাইল্যান্ড অবস্থান করছি। আমার ভাই ও বাসায় নেই। ঘটনার ব্যাপারে আমি গণমাধ্যমে দেখেছি। সেখানে বলা হচ্ছে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে এসে হত্যা করেছে। যেহেতু কারো ডাকে সে বাসা থেকে বের হয়েছে তার মানে তারা পূর্ব পরিচিত। না হলে সে বাসা থেকে বের হয়ে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত আসতো না। এ ঘটনায় আমার দিকে যে ইঙ্গিত করা হচ্ছে তা একেবারেই ভিত্তিহীন। প্রশাসন সুষ্ঠু তদন্ত করলেই আসল সত্যি বের হয়ে আসবে।

অন্যদিকে এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই আমজাদ জানান, সন্দেহ করার মত কিছুই পাইনি। আর এই মুহূর্তে এ নিয়ে কথা বলার মত পরিস্থিতিও নেই।

এদিকে ঘটনার পরে সেনাবাহিনী, পুলিশসহ একাধিক টিম আক্তার ও সুমনের বাসা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দফায় দফায় পরিদর্শন করতে দেখা যায়। এ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে রহস্য। অন্যদিকে এ ঘটনায় আতঙ্কে রয়েছেন বিএনপি'র নেতাকর্মীরাও।

ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ উপ-পরিদর্শক (এসআই) কামাল মিয়া জানান, নিহত মামুন হোসাইনের ইট, বালু, সিমেন্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতি রাতে লোড আনলোড সময়ে তিনি উপস্থিত থাকেন। শুক্রবার  ভোর সাড়ে ৪টায় তাকে ফোন করে ডেকে আনা হয়, ওই সময় তাকে গুলি করা হয়।

এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক শরিফুল হক জানান, ঘটনার পরপরই আমরা স্পট পরিদর্শনে এসেছি। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। এই বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। হত্যাকারীদের শনাক্ত করতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন