Logo
Logo
×

নগরের বাইরে

ওসমানদের সহযোগী ফজর আলীর বিচ্ছু বাহিনীর লিডার রুবেল ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হতে মরিয়া

Icon

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

ওসমানদের সহযোগী ফজর আলীর বিচ্ছু বাহিনীর লিডার রুবেল ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হতে মরিয়া

ওসমান পরিবারের আস্থাভাজন দুর্ধর্ষ ভূমিদস্যু চেয়ারম্যান ফজর আলীর বিচ্ছু বাহিনীর লিডার গোগনগর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার রুবেল।

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার গোগনগর ইউনিয়নের প্রতিটি এলাকাকে অপরাধের জগত হিসেবে আখ্যা দেওয়া ওসমান পরিবারের আস্থাভাজন দুর্ধর্ষ ভূমিদস্যু চেয়ারম্যান ফজর আলীর বিচ্ছু বাহিনীর লিডার গোগনগর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার রুবেল। গত ৫ আগষ্টের পর বিগত সকল অপকর্মের খোলস পাল্টিয়ে সেই ইউনিয়নে আবারো ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এদিকে গত বছরের (২৯ সেপ্টেম্বর) এই রুবেল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত পোশাক শ্রমিক মিনারুল ইসলাম হত্যা মামলায় র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর কিছুদিন পূর্বে হাইকোর্ট থেকে জামিনে বেড়িয়ে গোগনগর ইউনিয়ন বিএনপির একজন প্রভাবশালী নেতা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন প্রভাবশালী নেতাকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এই দুর্ধর্ষ রুবেল মেম্বার।



এলাকাবাসী জানায়, বিগত দিনে ফজল আলীর নির্দেশনায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা শামীম ওসমান, তার ছেলে অয়ন ওসমান এবং উভয়ের সহযোগী যুবলীগ ক্যাডার আহম্মেদ কাউসারের নাম বিক্রি করে গোগনগর জুড়ে সকাল থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত এই রুবেলের নেতৃত্বে চলতো একের পর এক অপরাধ। হত্যা, মাদক, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ একাধিক মামলার আসামী এই রুবেল মেম্বার। এলাকা জুড়ে শামীম ওসমান, অয়ন ওসমানের নামে বড় বড় ব্যানার ফেস্টুন লাগিয়ে প্রভাব খাটাতেন তিনি। এদিকে ২০২২ সালে গোগনগর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার দুর্ধর্ষ আরেক সন্ত্রাসী দৌলত মেম্বারকে হত্যা শাহ সিমেন্ট ও ক্রাউন সিমেন্ট ফেক্টরিতে ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করার বিরোধে শীতলক্ষ্যা সেতুর নিচে পিটিয়ে হত্যা করেন রুবেল মেম্বারসহ তার বাহিনী। পরবর্তীতে দৌলত মেম্বারের ছেলে কাশেম সম্রাট মামলা করলে সেই হত্যা মামলায় গ্রেফতার হন রুবেল। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের (২৩ নভেম্বর) জামিন পেয়ে গাড়ি ও মোটর সাইকেল বহর নিয়ে গোগনগরে আতঁশবাজি ফুটিয়ে শত শত লোক নিয়ে খিচুরী রান্না  করে আনন্দ উল্লাস করে রবেল বাহিনী। এর পর থেকেই বিগত দিন থেকে এলাকায় আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেন তিনি। এ ছাড়া শামীম ও অয়ন ওসমানের শেল্টারে কখনো অস্ত্র হাতে প্রকাশ্যে দাবড়ে বেড়িয়েছেন, কখনো হামলা-মামলা করে লুটপাট করেছেন। এতে কেউ বাধা দিলে নেমে আসতো নির্যাতনের খড়গ। অয়ন ওসমানের সাথে রুবেল মেম্বারের ছিল দহরম মহরম সম্পর্ক। এমপি পুত্রকে নানা উপঢৌকন উপহার দিয়ে গড়ে তুলেছিলেন নিজের বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী।


পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিগত দিনে রুবেলের বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ ১৩টি মামলা ছিল। রুবেল মেম্বারকে ইতোপূর্বে সকলে বিচ্ছু বাহিনীর প্রধান হিসেবে চিনতো। অনেকের জমি জোর পূর্বক দখল করে নেয়ার অভিযোগ ছিল রুবেল মেম্বার বাহিনীর বিরুদ্ধে। তা ছাড়া ও গত ৮ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন ভুক্তভোগী ভূমিহীনদের কয়েকজন। লিখিত অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, বিগত দিনে ওসমান পরিবারের ঘনিষ্ঠ গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. রুবেল ও প্যানেল চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ভোল পাল্টে বিএনপির লোক বনে গিয়ে গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদের পুরান সৈয়দপুর আশ্রয় কেন্দ্রে ১৬ জন ভূমিহীনের ঘরে তালা দিয়েছে। এদিকে রুবেল মেম্বারের বিচ্ছু বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে ছিলেন, মাসুদ, রিয়ান, সেলিম, আনসার, শাওন, হিমু, ইমরান, হাবিব।


 বিগত দিনে এই রুবেল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে লাইসেন্স খুলে শামীম ও অয়ন ওসমানের মধ্যস্ততায় বিভিন্ন টেন্ডার পেতেন পরবর্তীতে বিভিন্ন টেন্ডার নিয়ে রড সিমেন্ট এনে আবার তার লোক দিয়ে চুরি করিয়ে দিতেন যেটা ফের সেই মালিকানাধীনদের উপরে জোর পূর্বক চাপিয়ে দিয়ে এমন দূর্নীতির মাধ্যমে বনে গেছেন কোটি কোটি টাকার মালিক। এ ছাড়া ২০২২ সালের ৪ মার্চ গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সন্ত্রাসী ফজর আলী বিদেশ সফরে যাওয়ায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন রুবেল আহম্মেদ। সে সময় দীর্ঘদিন তিনি এই দায়িত্বে থাকার কারণে গোগনগরের আওতাধীন মসিনাবন্দ, বাড়ীরটেক, সৈয়দপুর পূর্ব, সৈয়দপুর পশ্চিম, সৈয়দপুর কদমতলী, নতুন সৈয়দপুর,  পুরাতন সৈয়দপুর, চর সৈয়দপুর সবই তার লোকবলদের মাধ্যমে দখলে নিতে ব্যাপক হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। তা ছাড়া সেই ভারপ্রাপ্ত চেয়াম্যানের দায়িত্ব পেয়েই রুবেল বড় আকারে ভূমিদস্যু হিসেবে গোগনগরে চিহ্নিত হয়ে উঠেছিলেন। বর্তমানে ভোল পাল্টিয়ে নিজেকে বিএনপি নেতা হিসেবে দাবি করে ওসমানদের সেই দোসর রুবেল মেম্বার ফজর আলীর প্রেশক্রিপশনে বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ বিএনপির কয়েকটি বলয়ের নেতাকর্মীদের মোটা অংকের টাকার মাধ্যমে ম্যানেজ করে ফের পুরো গোগনগর জুড়ে লুটপাট-জুলুম চালাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।



বিগত দিনে ওসমানদের দোসর হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর এ ছাড়া ছাত্র-হত্যা মামলায় কারাভোগ করে ও ফের গোগনগর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হতে চাওয়ার পিছনে কার ইন্দন রয়েছে তা জানতে রুবেলের মুঠোফোনে একাধিক কল করলে ও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন