কাশীপুরে ভয়ঙ্কর ভূমিদস্যু বাপ-বেটা

যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

কাশীপুরে ভয়ঙ্কর ভূমিদস্যু বাপ-বেটা
আওয়ামী লীগের আমল থেকেই ভয়ঙ্কর ভূমিদস্যুদের কবলে পরেছে কাশীপুরের সাধারণ মানুষ। যারা কাশীপুর ইউনিয়নের নরসিংপুর এবং উত্তর নরসিংপুর এলাকায় বহু খালি জায়গা তথা খাস জমি থেকে শুরু করে ওয়ারিশ জমি, বেজাল জমি, নাল জমি সবই ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম. সাইফুল্লাহ বাদলের ছত্রছায়ায় নিজ দখলে নিয়েছিলেন কুখ্যাত ভমিদস্যু বাপ-বেটা কাশীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গিয়াস উদ্দিন ওরফে ডাকাত গেসু এবং তার বড় ছেলে কাশীপুর ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শামীম আহম্মেদ ও তার আরেক ভাই ভূমিদস্যু সুমন আহম্মেদ। এই বাপ বেটা এখন শত শত কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক। অথচ এক সময় ভূমিদস্যু গিয়াস ভাত খেতে ভাত পেতো না। ভাতের অভাবে সে ডাকাতি করে সংসাদ চালাতো। ছিলো ডাকাত সর্দার। বিগত দিনে বহু পত্রপত্রিকায় এই গিয়াস উদ্দিনকে “ডাকাত গিয়াস বা ডাকাত গেসু” নামে আখ্যায়িত করে বহু রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে।
এই ‘ডাকাত গেসু’ এবং তার দুই ছেলে ভয়ংকর ব্যাক্তি ছিলেন। তারা সরাসরি সাইফউল্লাহ বাদলের শেল্টারে ছিলেন এ ছাড়া শামীমের ভিতরে ভিতরে অয়ন ওসমানের সাথে ব্যাপক সখ্যতা ছিলো। গিয়াস ও শামীম এবং সুমনের ভূমি ব্যবসার পার্টনারও ছিলেন সাইফউল্লাহ বাদল। সেই সুবাধে গিয়াস উদ্দিন সাইফউল্লাহ বাদলকে বগলদাবা করার জন্য তার ছেলে সুমনের বিয়েতে উকিল দেন সাইফউল্লাহ বাদলকে। সাইফউল্লাহ বাদল সুমনের উকিল বাবা। মূলত এভাবেই নিজেরদের মাঝে গভীর সখ্যতা গড়ে তুলে বেপরোয়া ভূমি সন্ত্রাস চালিয়ে এই ডাকাত পরিবার চক্র। শামীম ও সমুন এতত্রিত হয়ে বাদলের ছত্রছায়ায় চর নরসিংপুর এবং উত্তর নরসিংপুর তথা বক্তাবলীর রাজাপুর থেকে শুরু করে সেখানে কয়েকটি এলাকায় বাদলের শেল্টারে আজমেরী ওসমানের নাম বিক্রি করে ব্যাপক ভূমি খেকো তাণ্ডব চালিয়েছেন এই সুমন। এ ছাড়া সুমনের দখলকৃত দিঘলীপট্টি সামসুল আলমের মোড়ে হাজার শতাংশ জায়গা রয়েছে।
এমনইভাবে বাপ-বেটারা আওয়ামী লীগের নামে মানুষকে নিবর্যাতন করে বনে গেছেন শত শত কোটি টাকার মালিক। এ ছাড়া ছাত্র আন্দোলনে ৫ আগষ্ট সৈরাচার আওয়ামী সরকারের পতনের ছাত্র-জনতার রক্ত ও আদর্শের সাথে বেঈমানি করে বিএনপির কিছু কথিত নেতাকর্মীদের শেল্টারে দিব্বি নিশ্চিতে রয়েছে এই ডাকাত গেসু পরিবার। এদিকে বিগত দিনে আওয়ামী লীগের দেওয়া বিএনপি বিরুধেী প্রতিটা কর্মসূচি ও হরতালে কাশীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যে হরতাল বিরোধী মিছিল হয়েছে তাতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আইয়ূব আলীর পাশে হরতাল বিরোধী প্রতিটা মিছিলে দল বল নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা শামীম মেম্বার দাড়ি টুপি পাঞ্জাবী-পায়জামা পড়ে দাপটের সাথে অংশ গ্রহণ করতেন তার বাবা আওয়ামী লীগ নেতা গেসুসহ মিছিল মিটিং এ থাকতেন ও গেসুর আরেক ছেলে সুমন নিজ অর্থায়নে বিএনপি বিরোধী ব্যানার থেকে শুরু করে মিছিলে অংশ নেওয়া লোকদের খরচ দিতেন। এ ছাড়া গিয়াস উদ্দিন ও শামীম মেম্বার ১৮ জুলাই ও ১৯ জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শামীম ওসমানের সাথে রাইফেল ক্লাবে বসে ছিলেন মিটিং এ এটেন্ট করেছেন বলে জানিয়েছে সূত্র। কিন্তু বর্তমানে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আওয়ামী লীগের এই শামীম মেম্বার এখন ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসে গেছেন।
সূত্র জানিয়েছে, বিগত দিনে বিএনপি শাশনামলে জাকির খানের বড় ভাই কবির খানকে নিজ বাড়ি কাশিপুরে নানাভাবে নানা উপহার দিয়ে তুষ্ট করে গিয়াস ও তার পরিবার সকল ধরনের অপকর্ম বুঝতে থাকেন। পরবর্তীতে ২০০১ এ আওয়ামী লীগ পরাজয়ের পর শামীম ওসমান পালিয়ে গেলে তৎকালীন সময়ে ই আওয়ামী লীগ নেতা সাইফ উল্লাহ বাদলকে বিএনপির রোষানল থেকে রক্ষা করতে নিজ বাড়িতে আশ্রয় দিয়ে কবির খানের মতো একই জায়দায় মদ নারীসহ নানা উপঠৌকনে তুষ্ট করে নিজের অবস্থান দৃঢ় করে । ২০০৮ সালে ফের আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে এবার সেই চোরা গেসু ওরফে ডাকাত গেসু ও তার পরিবারকে আর ঠেকানো যায়নি। আওয়ামী লীগ সরকারের এই ১৬ বছবের শাসনামলের সব সময় এমপি শামীম ওসমান, এমপি সেলিম ওসমান, প্রয়াত এমপি নাসিম ওসমানের পুত্র আজমেরী ওসমান ও শামীম পুত্র অয়ন ওসমানের নাম ব্যবহার এবং রাইফেল ক্লাবের সেই কুখ্যাত রাজাকারপুত্র কাজলের নাম ব্যবহার করে ভূমিদস্যুতা, গ্যাস চুরি, বিদ্যুৎ চুরি, ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদাবাজিসহ সকল অপরাধ যেন নিত্যকার কর্মকাণ্ডে পরিনত হয়েছে । অতি সম্প্রতি সেই গিয়াস পুত্র সেই আজমীর ওসমানের নাম ব্যবহার করে সদর উপজেলার বক্তাবলীর চর রাজাপুরের ব্যবসায়ী আলমাস দেওয়ানের মিল দখল করে নিয়েছে ডাকাত গিয়াসউদ্দিন এর পুত্র সুমন এবং তার সাঙ্গপাঙ্গরা । তা ছাড়া ৮০ এর দশকে সেই চোরা গেসু ওরফে ডাকাত গেসু ওরফে গিয়াস উদ্দিনের বোন নূরজাহান কে পেটের দায়ে টানবাজার পতিতাপল্লীতে আশ্রয় নিলেও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের পর নুরহাজানকে বাড়ি ফিরিয়ে নিলেও অপরাধ সাম্রাজ্য বন্ধ না করে বিরামহীনভাবে অব্যাহত রেখেছে তাদের কর্মকাণ্ড।