Logo
Logo
×

নগরের বাইরে

জীবনের হাত থেকে মুক্তি চায় ইসদাইর-গাবতলীবাসী

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম

জীবনের হাত থেকে মুক্তি চায় ইসদাইর-গাবতলীবাসী

গডফাদার শামীম ওসমানের ক্যাডার শাহ-নিজাম, এহসানুল হক নিপু ও লিটনসহ অন্যান্য সন্ত্রাসীদের সাথে মহড়া দিচ্ছেন রফিকুল ইসলাম জীবন

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শামীম ওসমানের সহযোগী হিসেবে আধিপত্য বিস্তার করে রফিকুল ইসলাম জীবন। সাংবাদিকতার আড়ালে পুরো এলাকার অপরাধ সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ হাতের মধ্যে নিয়ে নেয় জীবন। শামীম ওসমান ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর দাপটে কেউ জীবনের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পেতোনা। শামীম ওসমান ও তার ক্যাডারদের দাপটকে সাথে নিয়ে ওই এলাকা ও আশেপাশের এলাকার স্কুল, মসজিদ, পঞ্চায়েত, বিভিন্ন ফ্যাক্টরীর ঝুট ব্যবসা, জমি ব্যবসাসহ সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ নিজের দখলে নিয়ে নেয় জীবন। এসবের বিরুদ্ধে কেউ যদি প্রতিবাদ করতো তাহলে তার উপর নেমে আসতো অমানুষিক নির্যাতন।



বিচার সালিশের নামে জীবন ও তার মনোনিত ব্যক্তিদের দিয়ে যাচ্ছে তাই করিয়ে দিতো। জীবনের কথার উপরই বিচার নির্ভর করতো। গাবতলী হাউজিং সোসাইটিতে শামীম ওসমান যে প্রেসক্রিপশন দিতো এই জীবনের কথাতেই। উপদের দেখাতো শামীম ওসমানের বিপক্ষে জীবন আদতে পেছনে ও বাস্তবায়তায় শামীম ওসমান ও তার দুর্ধর্ষ সকল ক্যাডারের সাথেই ছিল জীবনের গভীর সখ্যতা। ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর ও শামীম ওসমানসহ তার ক্যাডাররা পালিয়ে গেলে ভোল পাল্টে নতুন রূপে পুরনো মজমা ঠিক রাখতে মাঠে নামে রফিকুল ইসলাম জীবন। স্থানীয় বিএনপি নামে কিছু নেতাকে সামনে এনে ছবি তুলে নিজেকে এই মতাদর্শের লোক দাবি করে দলে ঢুকার চেষ্টা করে। এরমূলে গাবতলী, ইসদাইর, মাসদাইর এলাকার বৃহৎ ঝুট ব্যবসাকে হাতিয়ার করে জীবন।



সূত্র জানিয়েছেন, এসব গার্মেন্টের ঝুটের টাকা নিয়ন্ত্রণ করে জীবন। ঝুট সেক্টর থেকে ২০% এবং পার্টি থেকে ৫% কমিশন দিতে হয় গাবতলী এলাকার এই ব্যক্তিকে। এমনকি ভ্যান চালকদের কাছ থেকেও তিনি চাঁদা আদায় করে থাকেন বলে স্থানীয়রা জানান। স্থানীয় কিছু বিএনপি নেতাকে ঝুটের টাকা জীবন নিজের হাতে বিলি করায় তাদের মধ্যে কেউ কেউ তাকে সহযোগিতা করছেন পেছন থেকে। ইসদাইর ও গাবতলীর বিভিন্ন স্তরের মানুষের সাথে কথা বললে তারা রফিকুল ইসলাম জীবনের সম্পর্কে জানান, জীবন সাংবাদিকতার প্রভাব খাটিয়ে শামীম ওসমানের গোটা সময়কাল থেকে এলাকায় নিজের একটা বলয় সৃষ্টি করেছেন, যারা বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত।



নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, জীবনন গাবতলী সোসাইটির সভাপতি। এই গাবতলী সোসাইটির নামে প্রতিটি বাসা ও দোকান থেকে মাসিক হারে চাঁদা তুললেও কত টাকা তোলা হয়েছে এবং কত খরচ করা হচ্ছে তা নিয়ে কাউকে কোনো হিসেব দিচ্ছে না। কেউ হিসেব চাইতে গেলেও তাদের পরোয়া করছেন না। তবে সর্বশেষ গত সপ্তাহে এ বিষয় নিয়ে কথা হলে তিনি সোসাইটির ব্যক্তিদের জানান, ঈদের পর তিনি পুরো হিসাব দিয়ে গাবতলী সোসাইটি থেকে বিদায় নেবেন। এলাকাবাসী আরও জানায়, তার অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তার নামে একটা সংবাদ করে দেওয়া হয় ভিত্তিহীনভাবে। এর ফলে সম্মানের ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলার সাহস পায়না।



এলাকার শীর্ষ এক বিএনপি নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এই রফিকুল ইসলাম জীবন বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকারের শাসনামলে আওয়ামী এমপিদের সাথে এমন ভাবে নিজেকে জাহির করতেন মনে হতো সে নিজেও এমপি। বিভিন্ন প্রোগ্রামের বাইরে গিয়েও এই জীবনন সেইসব আওয়ামী দোসর এমপিদের সাথে কেমন সখ্যতা রেখে চলেছে তা সবাই জানে। তারা বলেন, এই সমস্ত লোকদের বিরুদ্ধে অবশ্যই রুখ দাড়াতে হবে। ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশের পর যেনো ঈদের আনন্দ বইছে। তারা সংবাদ প্রকাশের পর আনন্দ প্রকাশ করে বলছেন, আমরা এতদিন জীবনের দ্বারা শোষিত ছিলাম। তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন আমাদের শোষণ করার সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় সবার মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে। জীবনের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় তারা নিজেরা পত্রিকা কিনে এনে মসজিদে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে,পঞ্চায়েতসহ এলাকার দেয়ালে দেয়ালে পত্রিকা সাঁটিয়ে দিচ্ছেন। তারা বলেন, জিবনের বিরুদ্ধে এলাকার প্রতিটি মানুষ ক্ষিপ্ত। কিন্তু ভয়ে এতোদিন কেউ মুখ খুলতো না। তবে এখন সবাই স্বোচ্চার তার বিরুদ্ধে।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন