থানায় টাকা নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল, ওসির দাবি ষড়যন্ত্র

যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম

আড়াইহাজার থানার ওসির টাকা নেওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।
আড়াইহাজার থানায় জিডি করতে গিয়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে থানার ওসির বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে টাকা গ্রহণের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তবে ভিডিওটি কবে ধারণকৃত তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন একটি কাগজের সঙ্গে স্টাপলারে আটকানো টাকা গ্রহণ করছেন এবং বলছেন, ‘আপনার কি মানসম্মান নাই?’ এরপর তিনি টাকাসহ আবেদনটি নিজ ড্রয়ারে রেখে দেন। এ সময় তাঁর সামনের চেয়ারে দুজন ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হচ্ছে, আড়াইহাজার থানার ওসি জিডি করার জন্য ঘুষ নিচ্ছেন। তবে কাগজটি জিডি নাকি অন্য কিছুর তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টাকাসহ কাগজ ওসির হাতে দিয়েছেন আড়াইহাজার উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বেলায়েত হোসেন। তবে এ বিষয়ে কথা বলতে নারাজ বেলায়েত হোসেন। তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে আমার কিছু মনে নেই।’
ভিডিওর বিষয়ে জানতে চাইলে থানার ওসি এনায়েত হোসেন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে একটি গ্রুপ মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক পারভীন আক্তার ও তার স্বামী আনোয়ার হোসেন অনু পুলিশি নিরাপত্তায় এলাকায় তোরণ বসাতে চায়। পুলিশ তো কাউকে রাজনৈতিক শেল্টার দিতে পারে না। এ নিয়ে আমার ওপর ক্ষিপ্ত। তারাই আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
‘আর টাকার নেওয়ার ঘটনাটি হচ্ছে তিন-চার মাস আগে খাগকান্দা এলাকায় এক নারীর কিস্তির টাকা নিয়ে মারামারির ঘটনা ঘটে। বেলায়েত ভাইকে বলেছিলাম বিষয়টি মীমাংসা করে দিতে। সেই টাকা লিখিতভাবে দেওয়ার পর কাগজে স্টাপলার করে আমার কাছে দিয়ে গেছে। তখন আমি বলেছি এই সামান্য টাকা নিয়ে আমার কাছে আসলে কি মান সম্মান থাকে? এগুলোও কি ওসির করতে হবে? সেখানে সামনে আরও কয়েকজন ছিল। সবার সামনে আমি জিডির জন্য ঘুষ নেব?’
গতকাল সর্বশেষ ওসি জানান, ঘটনাটি ৫-৬ মাস আগের। খাগকান্দা ইউনিয়নে এক মহিলার পাওনা টাকা ছিল। বিচার সালিশ করে টাকা আদায় করে দেন খাগকান্দা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বেলায়েত হোসেন । এটি মীমাংসার টাকা ছিল। সালাউদ্দিন নামে এক বিএনপি নেতা ১৫ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ওসির বিরুদ্ধে। ওই সম্পর্কে ওসি বলেন, এটি অপপ্রচার ও মিথ্যা। উনি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার। তিনি জানান তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট। এনায়েত হোসেন আরো জানান থানায় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এবং জিডির জন্য কোন টাকা নেওয়া হয় না। তিনি সকল অপপ্রচারের তীব্র প্রতিবাদ জানান সাংবাদিকদের সামনে। ভাইরাল হওয়া ভিডিও সম্পর্কে মাহমুদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাসুম শিকারি ও খাগকান্দা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বেলায়েত হোসেনও সাংবাদিকদের কাছে ব্যাখ্যা দেন ।
এদিকে আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ ও অন্যান্য অনিয়মের অভিযোগে দু’টি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি ও নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার পৃথক ভাবে কমিটি দু’টি গঠন করেন। এরমধ্যে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজির নির্দেশে এক সদস্য এবং নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের নির্দেশে ২ সদস্যের কমিটি গঠিত হয়। দু’টি কমিটিই শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছেন।