Logo
Logo
×

রাজনীতি

পালিয়ে গিয়ে কর্মীদের ভুলে গেছেন

লুটপাট-দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত নেতাদের প্রতি তীব্র ক্ষোভ কর্মীদের

Icon

এম মাহমুদ

প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

লুটপাট-দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত নেতাদের প্রতি তীব্র ক্ষোভ কর্মীদের

স্থানীয় সাংসদসহ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর থানা উপজেলা আওয়ামীলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতা

 গত ৫ই আগস্টে আওয়ামীলীগ সরকারের পতন ঘন্টার সাথে সাথেই দেশ ত্যাগের জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেন নারায়ণগঞ্জের  তৎকালীন স্থানীয় সাংসদসহ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর থানা উপজেলা আওয়ামীলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা। যারা অধিকাংশই ছিলেন লুটপাট দুর্নীতি জবরদখল বিভিন্ন অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত এবং তাদের অত্যাচার নির্যাতন ঠেকে ছিল অপরাধের এক স্বার্গরাজ্যে। কিন্তু আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের ফলে এসকল আওয়ামীলীগ নেতারা তাদের অপরাধের পাহাড়ের ভাড়ে ভীত হয়ে দেশত্যাগের পথ খুঁজেন। সেই আলোকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে কেউবা গা ডাকা দিয়ে থাকছেন এবং দেশত্যাগে কেউ সক্ষম হয়ে প্রথমত কর্মী সমর্থকদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম ছিন্ন করেছেন। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে নেতাদের দেশত্যাগের পরবর্তী অবস্থান নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে কর্মী সমর্থকদের কাছে পৌছালে তারা যোগাযোগ স্থাপন করলেও কোন প্রকার কর্ণপাত ও সহযোগীতার হাত বাড়াচ্ছেন না। এছাড়া ৫ই  আগস্টের পর বিভিন্ন মামলায় আওয়ামীলীগ নেতারা ভূমিহীন হলেও তাদের মামলার কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রেও কর্মী সমর্থকদের পাশে দাড়াচ্ছেন নেতারা। অথচ, অধিকাংশ আওয়ামীলীগ সমর্থিত নেতারা বিএনপি সমর্থিত নেতাদের সাথে আঁতাত করে মামলা থেকে নাম প্রত্যাহারের জন্য কোটি কোটি টাকা বিনিময় করেছেন। যার কারণে কর্মী সমর্থকরা ক্ষুদ্ধ হয়ে বলেছেন আমাদের সহযোগীতায় লুটপাট দুর্নীতির মাধ্যমে নেতারা কোটি কোটি টাকার অর্থ সম্পদ মালিক বনে গেলেও সেই অর্থের মাধ্যমেও খোঁজ নিচ্ছে না স্থানীয় সাংসদসহ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর থানা উপজেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতারা।



সূত্র বলছে, বিভিন্ন সময়ে আমেরিকা,ইন্ডিয়া, ডুবাই মালোয়শিয়া থেকে নেট দুনিয়ায় ছবি ভাইরাল হতে দেখা যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জের তৎকালীন স্থানীয় সাংসদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের। এরমধ্যে সর্বত্ত দেখা যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সাংসদ শামীম ওসমানকে তাঁকে প্রথমত দেশত্যাগের পর নিজামউদ্দিন মাজারে দেখা যায় পরবর্তীতে দুবাইয়ের আজমান শহর তথা বিভিন্ন শপিং মলে নির্বিঘ্নে নিশ্চিন্তে কখনো জুলাইয়ের আন্দোলনের ছাত্র জনতার উপর হামলার চালানো বন্ধু অনুপ ও স্ত্রী লিপি ওসমানের দেখা যায়। দেশত্যাগের পর শামীম ওসমান তার পুত্র ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী বাহিনীর সর্দার অয়ন ওসমান বিভিন্ন সময় বড় গলায় বলতেন ২/৪/৫ লখ লোক তাদের জমায়েত করা ব্যাপার না। সেখানে ২/৪/৫জন নেতাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করছে না। এমনকি দেশে ফেলে রেখে যাওয়া লক্ষ লক্ষ সেই সমর্থকদের কথা মনেই নেই। অথচ মামলার ভয়ে দৈন্দিন কর্মকান্ডে অনেক কর্মী সমর্থকরা ঘর থেকে বের হতে পারছে  না। এমনকি কেউ বাড়ি ছাড়া তারা অনেকেই শামীম ওসমান তার পুত্র অয়ন ওসমানের সাথে একাধিকবার যোগযোগ স্থাপন করতে গিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন। এদিকে শামীম ওসমান ও অয়ন ওসমানের সন্ত্রাসী বাহিনীর অন্যতম হাতিয়ার অনেকেই তাদের দেশত্যাগ করে দুবাই মালোয়শিয়াতে অবস্থান করছেন। অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবুর গত ৫ই আগস্টের পর কোন হুদিস না মিললেও কিছুদিন আগে তাঁকে পরিবারসহ সুইজারল্যান্ডে দেখা গিয়েছে। যিনি গত ৫ই আগস্টের পর আড়াইহাজার উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের কাছে ছিলেন নিখোঁজ। সুইজারল্যান্ডের একটি ছবি ভাইরাল হওয়ার পর সকলে নিশ্চিত হতে পেড়েছেন তিনি দেশত্যাগ করেছেন। নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সাংসদ গোলাম দস্তাগীর গাজী গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করছেন। অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সাংসদ কায়সার হাসনাতের হুদিস এখনো মেলেনি। এমনকি সোনারগাঁয়ের আওয়ামীলীগের কর্মী সমর্থক অনেকেই মামলায় জর্জরিত হয়ে থাকলেও কোন প্রকার সহযোগীতা পাচ্ছেন না। এদিকে সোনারগাঁয়ে দুর্নীতি লুটপাটের ভরপুত্র ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম বিএনপির সাথে সুকৌশলে আঁতাত করে চুপিচুপি বিভিন্ন মামলা থেকে নিস্তার নিচ্ছেন। এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই এবং সাধারণ সম্পাদক ভিপি বাদল ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা তাদের গত ৫ই আগস্টের পর দেখা যায়নি। এমনকি গত ৫ই আগস্টের পর নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের শীর্ষ পদে থাকা নেতারা ভূল করেও কর্মীদের খোঁজ নিচ্ছে না।


এছাড়া ৫ই আগস্টের পর তাদের অবস্থানও নিশ্চিত করছেন না। উল্টো যোগাযোগের সকল মাধ্যম থেকে গা ডাকা দিয়ে আছেন। তাছাড়া নারায়ণগঞ্জ শহরের আলোচিত নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক  শাহ্ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন ভূইয়া সাজনু,জেলা যুবলীগ নেতা এহসানুল হক নিপু এই তিন নেতা নারায়ণগঞ্জে ব্যাপক লুটপাট চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজি বিভিন্ন অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত থেকে কর্মী সমর্থকদের ব্যবহার করে পাহাড় সমান অর্থ সম্পদ গড়ে তুললেও কর্মী সমর্থকদের খোঁজ নিচ্ছেন না। গত ৫ই আগস্টের পর তারা নিখোঁজ হয়ে আছেন নেতাকর্মীদের কাছ থেকে। কিন্তু আওয়ামীলীগের শাসন আমলে এইসকল নেতারা কর্মীদের ব্যবহার করে শহরজুড়ে ব্যাপক সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বিশাল বিশাল শোডাউন করে জনমনে আতর্ক সৃষ্টি করেন। অথচ এসকল নেতারাই কর্মীদের সাথে কোন প্রকার যোগযোগ স্থাপন করছে না। নাম প্রকাশে অনচ্ছিুক এক নেতা বলেন, যারা আমেরিকা,ইন্ডিয়া,ডুবাই মালোয়শিয়া থেকে আরাম আয়েশ করছেন আমাদের বিপদে ফেলে তাদের উপর গজব পড়ুক। আমাদের সাধারণ কর্মীদের কোন প্রকার খোঁজ বা যোগাযোগ রাখছে না যোগেযোগের কোন মাধ্যম রাখছে না তাদের দেশত্যাগের পর নিশ্চিন্তে নির্বিঘ্নে আরাম আয়েশের অসুবিধা যেন না হয়। এদিকে কর্মীদের কাউকে বিপদে ফেলে গিয়েছে কাউকে মৃত্যুর মুখে ফেলে গিয়েছে। এছাড়া কেউ কেউ মামলায় জর্জরিত হয়ে গৃহহীন। জীবিকা নির্বাহের জন্য দৈন্দিন কর্মকান্ডেও লিপ্ত হতে পারছেন না আতঙ্কে। আমরা তাদের কাছ থেকে টাকা চাচ্ছি না আমাদের ব্যবহার করে যে পরিমাণ দলের নাম ব্যবহার দুর্নীতি লুটপাট একের পর এক অপকর্ম অর্থ পাচার করে দেশের বাহিরে নির্বিঘ্নে আরাম আয়েশ করছেন আমাদের সেই টাকাই সহযোগীতা করুন এবং দলের দুঃসময়ে দলকে শক্তিশালী করতে কর্মীদের পাশে দাড়ান।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন