মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং অন্তর্র্বতী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম সামনে রেখে দলের পূর্বঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা ৩১ দফাকে নতুন করে ব্র্যান্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। দলটির নেতারা বলছেন, এই ৩১ দফা হচ্ছে আগামী দিনে বিএনপির রাষ্ট্র পরিচালনার একটি দলিল। এখন পর্যন্ত যারা রাষ্ট্র সংস্কারের ব্যাপারে নানা কথা বলছেন, বিভিন্ন ফর্মুলা দিচ্ছেন, তাদের কোনো ভাবনাই ৩১ দফা রূপরেখার বাইরে নয়। গত বছর এই রূপরেখা ঘোষণা করা হলেও নানা কারণে এটি জনগণের মাঝে ব্যাপকভাবে তুলে ধরা যায়নি। ফলে ৩১ দফা সম্পর্কে মানুষের ধারণাও স্পষ্ট নয়। তাই রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের এই রূপরেখাকে আবারও আনুষ্ঠানিকভাবে জাতির সামনে তুলে ধরবে বিএনপি। এদিকে গত ১৭ ডিসেম্বর জেলায় ও ১৮ ডিসেম্বর মহানগরে দিনব্যাপী কর্মশালা পরে সর্বশেষ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভাচুয়ালি উপস্থিত হয়ে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেন শীগ্রই বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে ৩১ দফার সুফল পৌঁছে দিতে। ইতিমধ্যে থানায় থানায় নেতাকর্মীদের নিয়ে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে প্রতিটি ঘরে ঘরে ৩১ দফার সুফল পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এদিকে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপুর নির্দেশনায় ও উপস্থিতিতে ইতিমধ্যে আলীরটেক ইউনিয়ন, গোগনগর ইউনিয়ন, ১৩, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮ নং ওয়ার্ডে ইতিমধ্যে ৩১ দফা সংস্কারের দাবিতে জনসম্পৃক্ততা উঠান বৈঠক করছেন মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা। এদিকে লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে ৩১ দফা বাস্তবায়নের কার্যক্রম চলমান রেখেছেন মহানগর বিএনপি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে তিন ধাপে ৩১ দফা রূপরেখাকে ব্যাপক আকারে মানুষের কাছে নিয়ে যেতে চায় বিএনপি। সেটি হলো প্রচার, বিতরণ ও মতামত গ্রহণ। এর অংশ হিসেবে দল, অঙ্গসহযোগী সংগঠন এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে তারা। এরই মধ্যে অনেককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আগামীতেও এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে দলটি। প্রশিক্ষিত লোকরা সারা দেশের বিভাগীয় শহর ও গুরুত্বপূর্ণ জেলাগুলোতে ওয়ার্কশপের মাধ্যমে জনগণকে ৩১ দফা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবে। একই সঙ্গে এই রূপরেখাকে আরও সমৃদ্ধ করতে বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের মতামতও গ্রহণ করবে দলটি। এ লক্ষ্যে বিভাগীয় শহর ও গুরুত্বপূর্ণ জেলাগুলোতে পর্যায়ক্রমে সেমিনার আয়োজন করা হবে। সেখানে প্রাপ্ত মতামতগুলো সন্নিবেশিত করে ৩১ দফাকে আরও যুগোপযোগী ও সমৃদ্ধ করা হবে। আর বিএনপি আগামীতে নির্বাচনে বিজয়ী হলে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে দলগুলোর সমন্বয়ে জাতীয় সরকার গঠন করে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের এই রূপরেখা বাস্তবায়ন করবে।
এদিকে গত ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর ফ্যাসিবাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলন শুরুর পর আন্দোলনরত সমমনা দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় ঐকমত্যের ভিত্তিতে ৩১ দফা প্রণয়ন করে বিএনপি। যেটা গত বছরের ১৩ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে দলটি। সেটি মানুষের কাছে তখন ব্যাপক আকারে তুলে ধরতে পারেনি। এজন্য তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের দমনপীড়নসহ উপযুক্ত পরিবেশ না থাকার কথা বলেছে বিএনপি। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন করে ৩১ দফার প্রচার-প্রচারণায় নামে বিএনপি। এক মাস ধরে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের সারা দেশে যৌথ ক্যাম্পেইন চলছে। তারা একদিকে ৩১ দফা রূপরেখা এবং অন্যদিকে ধানের শীষ-সংবলিত লিফলেট বিতরণ করছেন। গ্রামেগঞ্জে, হাটে-বাজারে, অফিস-আদালতে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই প্রচার চলছে। তাদের দাবি, প্রচারে তারা ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন। এদিকে ইতিমধ্যে সদর থানা, বন্দর উপজেলা, বন্দর থানাসহ এর আশ পাশের ওয়ার্ড, ইউনিয়নে ইতিমধ্যে সেখানকার নেতার্মীরা লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি অবহৃত রেখেছেন। শীগ্রই সেখানে ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের উপস্থিতিতে ৩১ দফা সংস্কারের দাবিতে জনসম্পৃক্ততা ও উঠান বৈঠকের আলোচনা হবে বলে জানিয়েছে নেতাকর্মীরা।