মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন
নারায়ণগঞ্জে এই মুহূর্তে শামীম ওসমান বা তার লোকদের চোখের বালি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন। বিগত দিনগুলোতে যারা শামীম ওসমানের হয়ে কাজ করেছিলেন, সুবিধা ভোগ করেছিলেন, বিএনপি ছেড়ে গিয়ে নৌকা নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন, যারা নম পার্কে গিয়ে ভূমিদস্যুতা করেছিলেন তারা এখন সবাই একাট্টা হয়েছেন গিয়াসউদ্দিন সাহেবের বিরুদ্ধে। তাদের সবারই এখন অভিন্ন লক্ষ্য ‘গিয়াস ঠেকাও’।
বিগত দিনে যখন বিএনপির অনেক নেতাই শামীম ওসমানের ভয়ে জুবথুব, তার বিরুদ্ধে যখন সাহস করে সত্য উচ্চারণ করতে পারেননি, তখন গিয়াসউদ্দিন সাহেব ছিলেন ব্যাতিক্রম ও অন্যতম ব্যক্তি। এ কারণে শামীম ওসমান যখন যেষানে সুযোগ পেয়েছেন সেখানেই গিয়াসউদ্দিন সাহেবের বিরুদ্ধে অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য রাখার পাশাপাশি যারপরনাই হুমকিমূলক বক্তব্য দিতেন। কিন্তু দমে যাওয়ার পাত্র ছিলেন না গিয়াসউদ্দিন সাহেব। তিনিও পাল্টা বক্তব্য এবং চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতেন সারা দেশব্যাপী চিহ্নিত গডফাদার শামীম ওসমানকে। এখন শামীম ওসমান নেই। বোরখা পরে পালিয়েছেন তিনি। কিন্তু তারা রয়েছেন, যারা শামীম ওসমানের উচ্ছিষ্টভোগি। বর্তমানে এই উচ্ছিষ্টভোগিরা গডফাদারের প্রেসক্রিপশনে ‘গিয়াস ঠেকাও’ মিশনে নেমেছেন। অর্থলগ্নি করে নানাভাবে অপপ্রচারও চালাচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন শামীম ওসমান ও শাহ নিজামের লেজুরবৃত্তি করে চলা তথাকথিত বিএনপি নামধারী নেতারাও যারা ৫ আগস্টের পর ব্যাপকভাবে লুটপাট, চাঁদাবাজি, অগ্নিসংযোগ করে মানুষের ভিতরে ভয়ের সৃষ্টি করেছেন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, গিয়াসউদ্দিন সাহেবকে থামিয়ে দিলে কার বা কাদের লাভ? এই উত্তর পাঠকই খুঁজে নিক। আমি শুধু বলবো, গিয়াসউদ্দিন সাহেবকে থামিয়ে দিতে পারলে সব থেকে বড় ক্ষতির সম্মুখিন হবেন সাধারণ, ছাপোষা মানুষেরা।
তবে, ষড়ন্ত্রকারিদের আপাত এটুকু বলতে পারি, ন্যায় নীতি আদর্শে অটল গিয়াসউদ্দিন সাহেবকে দমানোর সাধ্য বিগত ষোল বছর কারো হয়নি। গডফাদার নানাবিধ চেষ্টা করেও তাকে থামাতে পারেননি। বিগত সময়ে ৬৭টি মামলা দিয়ে দিনের পর দিন কোর্টের বারান্দায় ঘুরিয়েছিল গুডফাদার। ৭৫ বছর বয়সী এই রাজনীতিককে মিথ্যা মামলায় কারাগারেও প্রেরণ করিয়েছিলেন। তারপরও তিনি থামেননি। গডফাদারের সঙ্গে কোনো আপসও করেননি। মনে রাখতে হবে গিয়াসউদ্দিন সাহেব একজন রণাঙ্গণের বীর। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বুলেটকে উপেক্ষা করে তিনি বীরের মতো বুক চিতিয়ে লড়াই করা একজন যোদ্ধা। এই দেশের একজন সূর্য সন্তান তিনি। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে যখন শামীম ওসমানের উচ্ছিষ্টভোগিরা গর্তে লুকিয়ে ছিলেন তখন গিয়াসউদ্দিন সাহেব ও তার দুই সন্তানসহ তার অনুগামিরা ছিলেন ফ্রন্টলাইনে, ছাত্র-জনতার পাশে।
নারায়ণগঞ্জে যদি অপরাধিদের উত্থান ঠেকাতে হয়, তাহলে গিয়াসউদ্দিন সাহেবের বিকল্প নেই। সাধারণ মানুষের জন্য শান্তি প্রতিষ্ঠায় গিয়াসউদ্দিন সাহেবকে প্রয়োজন। অপরাধিদের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ অবস্থানের জন্য গিয়াসউদ্দিন সাহেবের প্রয়োজনীয়তা অপরসীম। ভুল-ত্রুটির উর্ধ্বে কেউ নন। হয়তো চলার পথে তারও কিছু ভুল হয়ে যেতে পারে। থাকতে পারে। তবে এটুকু নিশ্চিত করে বলা যায়, যারা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন তাদের থেকে বহু বহুগুণ শুদ্ধ একজন মানুষ গিয়াসউদ্দিন সাহেব। সাধারণ মানুষের সাহসের বাতিঘর তিনি।