জেলা জমিয়তে ইসলামের সভাপতি কাশেমী, সেক্রেটারি ফেরদৌসুর
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
মুফতি মনির হোসাইন কাশেমী ও মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান
মুফতি মনির হোসাইন কাশেমী’কে সভাপতি ও মাওলানা ফেরদাউসুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর কমিটি গঠন করা হয়। গতকাল শুক্রবার (২৭ডিসেম্বর) বিকালে চাষাঢ়া জামতলা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। নারায়ণগঞ্জ জেলা জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতি মুফতি মনির হোসাইন কাশেমী’র সভাপতিত্বে ও জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ফেরদাউসুর রহমানের পরিচালনায় উক্ত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী।
এসময় সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে মুফতি মনির হোসাইন কাশেমী বলেন, “আপনারা জমিয়তে ইসলামকে যদি এক কথায় বুঝতে চান তাহলে, এবারের ২৪শে যে গণঅভ্যুত্থান ও বিপ্লব হয়ে গেলো, এই বিপ্লবের প্রথম সারিতে ছিলো ছাত্র সমন্বয়করা। পিছন থেকে হেফাজতে ইসলাম সহ এদেশের গণ মানুষের এক ধাক্কা লাগছে আর ১৫ বছরের নেড়ে ফেলা নেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে। ঠিক তেমনই ভাবে ১০০-৯০ বছর যখন গোটা ভারতবর্ষকে জুলুম-নির্যাতনের রক্ত পাশে যে ডেকে রেখেছিলো, সেই সময় আমার দাদারা-আপনার দাদারা যে দিন কথা বলার সাহস পাইনি যে সময়, ঠিক সেই সময় তখন এই সমন্বয়দের ভূমিকা পালন করেছিলো জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ। সেই জমিয়তে উলামায়ে হিন্দদের আশে-পাশে সেদিন মুসলিমলীগ ভিড় করেছে, যার কারনে এক সাথে ধাক্কা দিয়েছিলো আর ইংরেজরা যাইতে বাধ্য হয়েছে। আমার জমিয়ত হলো তখনকার সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করা জমিয়ত। সেই ঐতিহাসিক জমিয়তকে দিয়েই আমরা আগামী দিনের স্বপ্ন দেখতে চাই।” তিনি আরও বলেন, যারা ইসলামী ভাবধারায় বিশ্বাসী, সেই দল, সেই গণমানুষ এবং ওলামায়ে কেরাম মিলে-মিশে আছি কিন্তু পাঁচ সিটের মধ্যে এক সিটে আলেম ওলামায়েরা থাকবে না। নারায়ণগঞ্জের মধ্যে এবার আলেম ওলামায়েদের হাতে এবার একাধিক সিট আসতে যাচ্ছে। আপনারা এখন থেকেই নামেন, ইনশাল্লাহ আমরা সিট দেবো, নিয়ে আসবো এবং তাদেরকে সর্বোচ্চ পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব আমাদেরও নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের পয়সায় বাংলাদেশের অনেক অংশের বাজেট পুরা করে আর আমাদের নারায়ণগঞ্জকে ফকিন্নি মার্কা রেখে দেবে তা হতে পারে না। নারায়ণগঞ্জ হবে মডেল জেলা। নারায়ণগঞ্জ শহরের চারদিকে লিংক রোড হবে, সড়কের পাশে বাড়াবো তিনগুণ ও উপরেও হবে তিন তলা। যেন আগামী ৯০বছর পরে আমাদের প্রজন্ম বলতে পারে জমিয়তে আসছিলো, আলেম ওলামায়েরা আসছিলো এ কাজটি করে গেছে। আমি আপনাদের আসস্ত করতে চাই জমিয়তের হাতকে শক্তিশালি করুন, জমিয়তের নেতৃত্বে ইনশাল্লাহ এই নারায়ণগঞ্জের উন্নতি হবে, মডেল জেলা হবে, তার দেখাদেখি সারা বাংলাদেশে সোনার বাংলাদেশ হবে।
এসময় বক্তব্যে মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান বলেন, লড়াই করতে হবে, যুদ্ধ করতে হবে, যে যুদ্ধের মাধ্যম হবে সত্যিকারের স্বাধীনতা আমার ঘরে ফিরে আনা। এই স্বাধীনতাকে আমাদের ঘরে ফিরে আনার জন্যে, আমাদেরকে সত্যিকারের অর্থে আমাদের একজন সত্যিকারের নেতার পেছনে মেহনত করা লাগবে। আমরা বহুবার গোলপার্ক খেয়েছি, আমরা আর নতুন করে গোলপার্ক খেতে চাই না। আপনারা আমাদেরকে বলেন, আপনারা ২০১৮ সনে ধানের শীষের প্রতীক কিভাবে আনছেন। আমি আপনাদের বলি এবার একটা কয়টা নিবো দেখেন। এবার ধানের শীষের প্রতীক বা ভোট কোথায় যাবে, নারায়ণগঞ্জের পাঁচটা আসন থেকে আমরা কয়টা আসন নেই আপনারা দেখে নেন। নারায়ণগঞ্জের প্রশাসনকে বলি, কিছু দিন আগে নারায়ণগঞ্জে এসপি একজন পলাতক আসামীকে ধরে তাকে ছেড়ে দিয়েছেন। সাবধান করে দিচ্ছি নারায়ণগঞ্জের প্রশাসনকে, নারায়ণগঞ্জের মাটি ও মানুষের নেতারা, নারায়ণগঞ্জের জণগন জেগে উঠেছে, এই জাগ্রত হওয়াকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুফতি মনির হোসাইন কাশেমীকে বিপুল ভোটে পাশ করিয়ে সংসদে নিয়ে যেতে হবে। নারায়ণগঞ্জের মাটি আলেমদের ঘাঁটি, নারায়ণগঞ্জের মাটি মুফতি মনির হোসাইন এর ঘাঁটি, এই নারায়ণগঞ্জের মাটিতে আমরা আর কোন ফ্যাসিবাদীদের দেখতে চাই না। তিনি আরও বলেন, রক্ত জীবনে বহু দিয়েছি, আমার ভাইয়ের জীবন বহু দিয়েছে, আর কোন প্রাণ দিতে চাই না, জীবন দিতে চাই না। আগামী দিনের খেলা হবে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত খেলা, আগামী দিনে হবে সত্যি কারের দেশ প্রেমিকের খেলা। আমরা আঙুল বেঁকা করতে যানি, আমরা যানি আমাদের সংসদ সদস্যকে কিভাবে উদ্ধার করতে হবে, আমরা দিয়েছি ইনশাল্লাহ। আমাদের অসংখ্য সংসদ সদস্য হয়েছেন। আগামীতেও দেখবে বাংলাদেশে ইসলামের সংসদ সদস্য হবে। আগামী দিনে আমরা কোন রক্তচক্ষুকে ভয় পাবো না। আমরা প্রতিটি থানা, ওয়ার্ডে আমাদের কমিটিকে শক্তিশালি করবো ইনশাল্লাহ।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটি ঘোষণা করেন সম্মেলনে কমিটিতে যারা ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মুফতী মনির হোসাইন কাসেমী, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান, সহ-সভাপতি মুফতী আব্দুস সবুর কাসেমী, মুফতী তৈয়ব আল হোসাইনী, মুফতি শিব্বির আহমদ, মুফতি মনির উজ জামান, মাওলানা ইব্রাহীম খলিল, মুফতি কাজী দেলোয়ার হোসাইন, হাজী মুক্তার হোসাইন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুফতি হারুনুর রশিদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মাসনূর আহমাদ ভূঁইয়া, মাওলানা জমির উদ্দিন ফারুকী, হাজী জসিম আলী, মাওলানা রুহুল আমীন, মুফতি আলাউদ্দিন ফরাজী, মাওলানা তানইম মাদানী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা গিয়াস উদ্দিন আড়াইহাজারী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মোফাজ্জল ইবনে মাহফুজ, মাওলানা রিয়াজ উদ্দিন, মুফতী সোহাইল তায়েফী, মুফতী মাহমুদুল হাসান রাসেল কাসেমী, অর্থ সম্পাদক হাজী আনোয়ার হোসাইন, সহ-অর্থ সম্পাদক আলহাজ্ব আবু সাঈদ, আলহাজ্ব মিসবাহ উদ্দিন, মাওলানা মাসুদুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক মুফতী ইসমাঈল সরকার, সহ দপ্তর সম্পাদক মাওলানা ফয়সাল ইবনে মাহফুজ, মাওলান দীন ইসলাম, প্রচার সম্পাদক মাওলানা তাজুল ইসলাম আব্বাস, সহ প্রচার সম্পাদক মুফতী মাহদী বিন ইব্রাহীম, আব্দুর রহমান আল কাফী, শহীদুল ইসলাম, মাওলানা শরিফুল ইসলাম, হাফেজ মোখলেছুর রহমান আংশিক কমিটি গঠন করা হয়েছে।