শামীম ওসমান, অয়ন ওসমান, হাবিবুর রহমান রিয়াদ, রাফেল প্রধান
নারায়ণগঞ্জে ওসমানীয় শাসনতন্ত্রের যে বিলোপসাধন ঘটবে এটা নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দাদের কাছে ছিল অকল্পনীয়। কিন্তু গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের সাথে সাথে নারায়ণগঞ্জে ওসমানীয় সাম্্রাজ্যের পতন ঘটে। এছাড়া ওসমানদের অপরাধের সাম্্রাজ্যের অন্দর মহল হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাব ও নম পার্ক ওসমানদের দ্বারা অত্যাচার নির্যাতনে নিপীড়িত জনগণ বিক্ষুদ্ধ হয়ে ভাঙচুর করে ওসমানদের সাম্রাজ্যকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেন। তবে বহু কাঠখড় পুড়িয়ে নারায়ণগঞ্জের সাধারণ মানুষের চোখ ফাঁকি দিয়ে নারায়ণগঞ্জ ত্যাগ করে দেশে লুকায়িত থেকে ইন্ডিয়ার নিজাম উদ্দিন আউলিয়া দরবারে ৫ই আগস্টের পর প্রথম বারের মত দেখা দেন শামীম ওসমান। পরবর্তীতে তাকে দুবাইতেও দেখা যায়। অথচ, তার পুত্র নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রক বহু অপকর্মের হোতা অয়ন ওসমানকে কোথাও না দেখা গেলেও ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় হতে দেখা যায়। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় হয়েই একটি উদ্দেশ্যমূলক পোস্ট শেয়ার করেন। এছাড়া অয়ন ওসমান সক্রিয় হওয়ার আগেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় হোন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের তার অন্যতম দুই হাতিয়ার নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রাফেল। এদিকে তারা সক্রিয় হওয়ার পর ২ জানুয়ারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় হন। শামীম ওসমান গত ৫ আগস্টের পর ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রকাশ্যে বক্তব্য বা বিবৃতি দিয়েছেন। তবে এধরণের ভিডিও বা ফুটেজ কোথাও দেখা যায়নি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কিন্তু এই ঘটনার আলোচনার মধ্যেই শামীম ওসমান পুত্র অয়ন ওসমানের সক্রিয় ফেইসবুক আইডি নিস্ক্রিয় করে ফেলেন।
সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জে অপরাধ জগৎতের অন্যতম নিয়ন্ত্রক ছিলেন ওসমান পরিবার। কিন্তু ৫ আগস্ট ওসমানদের পতনে স্বস্তিতে ফিরেন নারায়ণগঞ্জের সর্বমহলের ব্যক্তিবর্গ জনসাধারণ। কিন্তু গত ৫ই আগস্টের পর ২০২৫ সালের ১জানুয়ারি বা ২ জানুয়ারিতে ওসমানীয় সাম্রাজ্যের অন্যতম নিয়ন্ত্রক শামীম ওসমান ও তার পুত্র অয়ন ওসমান এবং তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীর অন্যতমদের। শামীম ওসমানের সর্বশেষ অবস্থান সম্পর্কে পর্যালোচনা করে দেখা যায় দুবাই সে অবস্থান করছেন। যেখানে নিয়মিত তার স্ত্রী লিপি ওসমানকে নিয়মিত দেখা যায়। অপরদিকে তার পুত্র অয়ন ওসমানকে গত ৫ আগস্টের পর কোথাও দেখা যায়নি। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছিল নিস্ক্রিয়। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় হয়েছেন ২০২৫ সালের ১জানুয়ারি। কিন্তু সে সক্রিয় হওয়ার আগেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় হোন অয়নস ওসমানের লালিত পালিত ছাত্রলীগের ক্যাডার খ্যাত নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রাফেল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় হন। তবে তার গত ৫ আগস্টের পর দেশত্যাগ করে মালোয়শিয়াতে অবস্থান করছেন। যার কারণে অনেকে ধারণাও করছেন অয়ন ওসমান মলোয়শিয়াতে এবং শামীম ওসমান দুবাইতে অবস্থান করছেন। কেননা নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে থাকা অধিকাংশ নেতাই বর্তমানে মালোশিয়াতে অবস্থান করছেন।
এছাড়া দুবাইতেও অবস্থান করছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে আওয়ামীলীগের অনেক কেন্দ্রীয় নেতা নারায়ণগঞ্জ জেলার নেতারা অবস্থান করছেন। কিন্তু ওসমানের হঠাৎ সক্রিয়তা নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছে ফের অশনি সংকেত মনে করা হচ্ছে। কেননা ২ জানুয়ারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উত্থাপিত হতে থাকে শামীম ওসমান গত ৫ আগস্টের পর ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রকাশ্যে বক্তব্য বা বিবৃতি দিয়েছেন। তবে এধরণের ভিডিও বা ফুটেজ কোথাও দেখা যায়নি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের তৃণমূলের অনেকেই বোধগম্য নয় শামীম ওসমানের এই বিবৃতি সম্পর্কে। কিন্তু স্থানীয় এক অনলাইন পোর্টালে শামীম ওসমানের ফেজবুক পেইজ উল্লেখ করে এই বিবৃতি নিয়ে একটি নিউজ করেন। তবে শামীম ওসমানের সক্রিয়তার আলোচনার মধ্যেই আবারও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে গাঁ ডাকা দেন তার পুত্র অয়ন ওসমান। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক নারায়ণগঞ্জের একজন রাজনীতিবীদ বলেন, ওসমানীয় সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রকদের হঠাৎ দল বেঁধে সক্রিয়তা নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছে অসনি সংকেতের বার্তা। কেননা ওসমানদের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় তাদের রাজনৈতিক দল ক্ষমতাচ্যুত থাকলেও তারা দেশের বাহিরে থেকেও কলকাঠি নেরে তাদের দোসরদের দ্বারা নারায়ণগঞ্জে বহু আলোচিত ঘটনা ঘটিয়েছেন।