ত্বকীর হত্যাকারীরা বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আস্থাভাজন ছিলো : মাওলানা আব্দুল হালিম

যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম
জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেছেন, আজকের এই জনসভা জুলাই বিপ্লবের যে স্বৈরাচার ফ্যাসিস্টরা পালিয়ে গিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে দেশ আজ ঐক্যবদ্ধ যে তাদের বিচার হতেই হবে। বিগত দুই তিন দিন স্বৈরাচার আবারও উঁকিঝুকি দিয়েছিলো এবং ছাত্রজনতার যে বর্তমান রক্তমাখা অবস্থা, এ অবস্থায় ভাষণ দেওয়ার নামে আঘাত করে ছিলো। কোনো দল নয়, কোনো ব্যক্তি নয়। বিক্ষুব্ধ ছাত্রজনতা ও শহীদদের পরিবার এই দুই দিনে প্রতিবাদ করে আবারো দেখিয়ে দিয়েছে যে, এই বাংলাদেশের অতীত স্বৈরাচার আওয়ামী বাকশালীদের আর কোনো জায়গা দেওয়া যাবে না। গতকাল নারায়ণগঞ্জ শহরের ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামে নারায়ণগঞ্জ মহানগরী জামায়াত আয়োজিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, তিনটি কথা একসাথে জড়িত। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন। আগে খুনিদের বিচার করতে হবে। যারা আমাদের এই নারায়ণগঞ্জের ৪ বছর বয়সের শিশু রিয়াকে হত্যা করা হয়েছিলো হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে। এই নারায়ণগঞ্জে ১১বছর আগে ত্বকী হত্যা হয়েছিলো। এই ত্বকী হত্যার বিচারও হয়নি। এই ত্বকীর হত্যাকারীরা বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আস্থাভাজন ছিলো। এই খুনিকে ধরে এনে বিচার করতে হবে। নারায়ণগঞ্জে ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারী ৭টি খুন সংগঠিত করেছে র্যাব পুলিশও সাথে মিলে। সেই ৭খুনের খুনিদের এখনো বিচার কার্যকর এখনো হয় নি। সেই ৭জনের মধ্যে একজন সনাতন ধর্মের এডভোকেট চন্দন কুমার সরকার ছিলো। এই ৭ খুনের যেই বিচার হয়েছে, যা এখন হাইকোর্টে সুপ্রিমকোর্টে আছে, এই বিচারটি নিশ্চিত করার জন্য বর্তমান সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, বিচার এর সাথে সংস্কারও করতে হবে। কারন এই সংস্কার না হবার ফলে ২০১৪ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচন হয়েছিলো। ২০১৮ সালের বিরোধীদলসহ যে নির্বাচনটি হয়েছে, তা হলো নিশিরাতের নির্বাচন। ২০২৪ সালের নির্বাচন হয়েছিলো নামের নির্বাচন। আমরা সংস্কার ছাড়া এই ধরনের কোনো বাজে নির্বাচন চাই না। এই দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য জিবন দিয়েছে। সুষ্ঠ নির্বাচন ও সংস্কারের কাজ সম্পাদন করার জন্যে বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি। সুষ্ঠ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এই দেশ নতুনভাবে এগিয়ে যাবে। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন, এই তিনটি কাজের প্রস্তুতি সরকারকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে নিতে হবে।
বৈষম্যহীন সমাজের জন্য আমাদের ছাত্রজনতা স্লোগান দিয়েছিলো। গত ৫৩ বছরের ইতিহাসে এই দেশে যাদেরকে সংখ্যালঘু বলে আওয়ামী লীগ আমাদেরকে ধোঁকা দিয়েছিলো, তাদের উদ্দেশ্যে আমাদের আমীরে জামায়াত বলে দিয়েছেন, আমরা সবাই গর্বিত নাগরিক। কেউই সংখ্যালঘু নয়, কেউই সংখ্যাগুরু নয়। সবাই আমরা বাংলাদেশের নাগরিক। ৫৩ বছর ধরে সাম্প্রদায়িকতার নামে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার করা হয়েছিলো, তাদের সম্পদ দখল করেছে। সেই সম্পদ দখলকারী গডফাদাররা এখন নারায়ণগঞ্জে আছে কি না? ইতিহাস সাক্ষী, বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী এই দেশের মানুষের কল্যান এবং মুক্তির সংগ্রামে ছিলো, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। বৈষম্যমুক্ত ইনসাফভিক্তিক সমাজ গঠন করার জন্য বাংলাদেশের মানুষ আশা করে সৎ নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশ তৈরি হবে এবং সেই নতুন বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিবেন জামায়াতে ইসলামীর সংগ্রামী আমীর শফিকুর রহমান। আমরা অতীত স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সংগ্রাম অব্যহত রাখব এবং সম্প্রীতির বাংলাদেশ গঠনে একত্র থাকবো।