Logo
Logo
×

রাজনীতি

প্রকাশ্যে থেকে গ্রেফতার আতঙ্কে এলাকা ত্যাগ

Icon

এম মাহমুদ

প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রকাশ্যে থেকে গ্রেফতার আতঙ্কে এলাকা ত্যাগ

প্রকাশ্যে থেকে গ্রেফতার আতঙ্কে এলাকা ত্যাগ

Swapno

‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ আতঙ্কে এবার প্রকাশ্যে থাকা আওয়ামীলীগের বিভিন্ন মামলার আসামী হওয়া নেতারা এলাকা ছেড়েছেন। গত ৫আগস্ট আওয়ামীলীগের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এসকল নেতারা গুটিকয়েক দিন এলাকার বাহিরে থাকলেও এলাকায় ফিরে ফের বিএনপির সাথে আঁতাত করে আধিপত্য বিস্তারে ব্যস্ত হয়ে উঠেন। তবে গত ৮ফেব্রুয়ারির গভীর রাত থেকেই ডেভিল হান্টদের ধরতে অপারেশন পরিচালনা করছেন যৌথ ভাবে প্রশাসন। আর এই অভিযানে আওয়ামীলীগের চিহ্নিত বিভিন্ন মামলার আসামীরাও গ্রেপ্তার হচ্ছেন। যার কারণে আতঙ্কে এলাকা ত্যাগ করছেন প্রকাশ্যে থাকা আওয়ামীলীগের নেতারা।  



সূত্র বলছে, দীর্ঘদিন ধরে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের ওয়ার্ড উপজেলা ও থানার আওয়ামীলীগ নেতারা নিজেদের ব্যক্তিগত ও স্বার্থনিষ্ট বিষয়ের কারণে বিএনপি নেতাদের সাথে আঁতাত ও যোগসাজশে প্রকাশ্যে চলাফেরা করছেন। তবে এসকল অধিকাংশ নেতারাই আওয়ামীলীগের শাসন আমল এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় প্রকাশ্যে ছাত্র জনতার উপর হামলায় চালিয়েছিলেন তাদের হামলার চিত্র গণমাধ্যমেও প্রকাশ পেয়েছে। আওয়ামীলীগ পতনের বিএনপি নেতাদের সাথে আঁতাত করে এলাকায় প্রবেশ করলেও তাদের এলাকায় চলাফেরার ক্ষেত্রেও ছিল বিধি নিষেধ। তারপরও শহরতলীর বিভিন্ন স্থানে দেখা মিলত এসকল আওয়ামী নেতাদের। তাছাড়া এলাকায় থেকে অন্তরাল থেকে আওয়ামীলীগের বিভিন্ন এজেন্ডা বাস্তাবায়নে বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালনা করতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছিলেন। ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ পরিচালনার পর থেকেই নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রকাশ্যে থাকা অধিকাংশ নেতরা গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে পদধারী চিহ্নিত ওয়ার্ড এবং শহরে নেতৃত্বে থাকা নেতারা এবার প্রকাশ্যে থেকে গ্রেফতার আতঙ্কে এলাকা ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। এরমধ্যে অন্যতম নারায়ণগঞ্জ ১৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবু। যিনি জুলাই আগস্টের আন্দোলনের সময় প্রকাশ্যে গুলি ছুড়েছেন আব্দুল করিম বাবু। তবে গত ৫ই আগস্টের পর আওয়ামীলীগের পতনের সাথে সাথে এলাকা ত্যাগ করলেও এলাকায় ফিরতে ছিলেন মরিয়া। বিএনপির সাথে আঁতাত করে এলাকায় ফিরলেও ছিলেন অন্তরালে তবে নগরবাসীর চোখ কিছুতে ফাঁকি দিতে পারেননি তাকে শহরের দক্ষিণ অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে দেখা মিলেছিল। তবে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ পরিচালনার পর তার অস্তিত্ব কোথাও পাওয়া যায়নি। এদিকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম মুন্না কখনো ছিলেন আইভী এবং কখনো শামীম ওসমানের আস্থাভাজন এবং সেলিম ওসমানের পিএস খ্যাতিও পেয়েছিলেন এই মুন্না।


অথচ গত ৫ই আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর এখনও প্রকাশ্যে এবং ১৮নং ওয়ার্ডে এখনো রাজনৈতিক কর্মকান্ড বা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন। এছাড়া পূর্বের ন্যায় ১৮নং ওয়ার্ডে নিতাইগঞ্জে প্রভাব প্রতিপত্তি সমন্বত রাখার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন বিএনপি নেতাদের ম্যানেজের মাধ্যমে। তবে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ পরিচালনার পর তার অস্তিত্ব কোথাও পাওয়া যায়নি। নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সি.সহ-সভাপতি রবিউল হোসেন গত ৫ই আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর থেকেই প্রকাশ্যে নারায়ণগঞ্জ শহরসহ তার গলাচিপা এলাকায় চলফেরা করছেন। আওয়ামীলীগের পতনের পরই সে গলাচিপা এলাকার বিএনপি নেতাদের কাছে আত্মসমর্পন করেন। তবে সে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও গডফাদার শামীম ওসমানের বন্ধু খোকন সাহার আস্থাভাজন। তারপরও নারায়ণগঞ্জ শহরজুড়ে বুক চেতিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এই রবিউল। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র জনতার উপর হামলার অভিযোগ রয়েছে। তারপরও দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ছিলেন প্রকাশ্যে প্রশাসনের নাকের ডগায়। তবে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ পরিচালনার পর তাকে দেখা যাচ্ছে না।  ১৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি এস এম পারভেজকে প্রায় সময়ই নগরীর চাষাড়া এলাকায় দেখা যায়। জানা গিয়েছে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খাজা মার্কেটে তিনি জনসম্মুখে ব্যবসায় কার্য পরিচালনা করছেন। মূলত, এই পারভেজ নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহার এজেন্ট হিসেবে ১৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি পদ ভাগিয়েছেন। তাছাড়া খোকন সাহার এজেন্ট হওয়ার সুবাধে চাষাড়া এলাকায় তিনি প্রতিনিয়ত যাতায়ত করেন। তবে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ পরিচালনার পূর্বে খাজা মার্কেটের সোনালী ব্যাংকের পাশে তাকে বসে থাকতে দেখা যেত। ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ পরিচালনার পর তাকে দেখা যায়নি চাষাড়া এলাকায়।


১৭নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আনিস আহমেদ আওয়ামীলীগের সরকারের পতন হলেও সে ওয়ার্ডের দায়িত্ব পালন করলেও শহরতলীর বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুড়ে বেড়াচ্ছেন ও বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে তাকে যোগ দিতে দেখা যাচ্ছে। আনিস আহমেদও নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহার এজেন্ট হিসেবে বিভিন্ন ভাবে কাজ করেছেন বিগত সময়ে। ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ পরিচালনার পর তাকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। এছাড়া ২৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন জনি নবীগঞ্জ ঘাটের পাশেই তার বাসস্থান হওয়ায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সময় ছাত্র জনতার পর উপর হামলা ও নবীগঞ্জ ঘাট পারাপারে বাঁধা সৃষ্টি করেছিলেন এই জনি। মূলত নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহার আস্থাভাজন হওয়ায় তার নির্দেশেই এসকল কান্ড পরিচালনা করেন জনি। তারপরও সেই জনি এখনো ২৪নং ওয়ার্ডে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সাথে আঁতাত করে। ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ পরিচালনার তাকে ২৪নং ওয়ার্ডে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। এছাড়া এড. মামুন সিরাজুল মাজিদ ২৭ওয়ার্ডের সভাপতি হয়েছেন আনোয়ার হোসের কোঠায় যেটা নিয়ে ছিল চরম বিতর্ক। এছাড়া সাংগঠনিক ভাবে নেতৃত্ব শূণ্য পদে অযোগ্য এই নেতাকে কখনোই আওয়ামীলীগের দুঃসময়ে পাশে দেখা যেত না। কিন্তু এখন নিজের ব্যক্তি স্বার্থনিষ্ঠ কারণে প্রায়ই আওয়ামীলীগের আইনজীবী হিসেবে প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে। তবে গত ৫ই আগস্টের পরবর্তী ও পূর্ববর্তী সময়ে তার হুদিশ কোথাও পাওয়া না গেলেও বিগত কয়েকদিন যাবৎ কোর্ট পাড়ায় দেখা মিলেছিল। কিন্তু ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ পরিচালনার পর কোর্ট এলাকায় তার বিচরণের দেখা মিলেনি।




Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন