
প্রিন্ট: ১১ মে ২০২৫, ০৩:৪২ পিএম
আবারও স্বর্ণযুগের অপেক্ষায় না.গঞ্জ বিএনপি

লতিফ রানা
প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

আরো পড়ুন
বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম সফল নির্বাচন হিসেবে ধরা হয় ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে। কেননা দেশ স্বাধীন হওয়ার প্রায় দুই দশক পর এই নির্বাচনেই প্রথম বাংলাদেশের প্রধান দলগুলোসহ দেশের সাধারণ মানুষের সর্বোচ্চ সমর্থন ও অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় এবং এই নির্বাচনে নির্বাচিত সরকারই প্রথম তার পূর্ণ মেয়াদ দেশ শাসন করেন (যদিও সেই নির্বাচনে পরাজিত হয়ে ‘অগণতান্ত্রিক শক্তি সূক্ষ্ম কারচুপি করেছে’ বলে অভিযোগ করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা)। আর সেই স্বর্ণ যুগে জয়ী দল হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে বিএনপি। ’৯০এর গণ আন্দোলনে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতনের পর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনেই বিএনপির প্রার্থী সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এ সময় নারায়ণগঞ্জ-১ আসন থেকে নির্বাচিত আব্দুল মতিন চৌধুরী (প্রয়াত) বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মত গুরুত্বপূর্ণ একটি পদের দায়িত্ব পালন করেন। একই সময় নারায়ণগঞ্জ বিএনপিকে চাঙ্গা করে রেখেছিলেন নারায়ণগঞ্জ থেকে নির্বাচিত নারায়ণগঞ্জ-৫ এর সাংসদ এ্যডভোকেট আবুল কালাম ও নারায়ণগঞ্জ-৪-এ বীর মুক্তিযোদ্ধা (কমান্ডার) সিরাজুল ইসলাম (প্রয়াত), নারায়ণগঞ্জ-৩ এ রেজাউল করিম ও নারায়ণগঞ্জ-২ এ আতাউর রহমান খান আঙ্গুর। তাই ’৯০ এর গণ-আন্দোলনে এরশাদের পতনের পর যেমন বিএনপির জোয়ার ছিল, এবার ২০২৪ এর গণ আন্দোলনে আওয়ামী লীগের স্বৈরাচার সরকারের পতরেন পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচনেও বিএনপির জোয়ার আসবে বলে দলের নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের বিশ্বাস তুঙ্গে। এখন শুধু নির্বাচনের অপেক্ষায় নারায়ণগঞ্জ বিএনপিও।
বিএনপি দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, ’৯১ এর নারায়ণগঞ্জ বিএনপির স্বর্ণযুগে নেতৃত্ব দেওয়া আব্দুল মতিন চৌধুরী, এ্যডভোকেট আবুল কালাম, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম, রেজাউল করিম ও আতাউর রহমান খান আঙ্গুরের নেতৃত্বে দাপটের নারায়ণগঞ্জ বিএনপির কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এরপর একে একে বিএনপির দাপুটে নেতৃত্বে নাম লেখান বীর মুক্তিযোদ্ধা (কমান্ডার) ও শিল্পপতি মোহাম্মদ আলী, এডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার ও গিয়াস উদ্দিনসহ একাধিক নেতা। নারায়ণগঞ্জ বিএনপির রাজনীতিতে তাদের নেতৃত্ব ও কর্তৃত্বে বেশ প্রভাব ছিল বরে জানা যায়। তবে এদের মধ্যে মতিন চৌধুরী এবং সিরাজুল ইসলাম ইসলাম গত হয়েছে। বিএনপি নেতা শাহআলম দল থেকে পদত্যাগ করেন, অন্যদিকে মোহাম্মদ আলী বিএনপির দলীয় কর্মকাণ্ডে নিস্ক্রিয় হয়ে ওসমান পরিবারের সখ্যতা গড়ে তুলেন বলে অভিযোগ আসতে শুরু করে। তবে বিএনপির সেই পুরানো এবং প্রভাবশালী নেতাদের অনেকেই আবার মাঠে কাজ শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে এডভোকেট আবুল কালাম, রেজাউল করিম ও আতাউর রহমান আঙ্গুর তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নতুন করে শুরু করে যাচ্ছেন বলে দলীয় একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
সম্প্রতি বিএনপির হাই কমান্ড নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে নতুন আহ্বায়ক কমিটির আংশিক ঘোষণা দিয়ে খুব শীঘ্রই ৩১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিয়েছেন। শোনা যাচ্ছে মহানগর বিএনপির কমিটিও খুব শীঘ্রই ভেঙ্গে নতুন করে সাজানো হবে বলে। এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে অনেক তরুন ও নতুন নেতৃত্বও আশা জাগানোর মতো ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। তাদের পূর্বসূরীদের পথ অনুসরণ করে তারাও দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করার মতো প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন বলে দলীয় নতুন প্রজন্মের দাবি। তাই খুব শীঘ্রই নারায়ণগঞ্জ বিএনপি আবারও স্বর্ণ যুগে প্রবেশ করছেন বলে মনে করছেন তারা।