
আপাতত নিজেরাই প্রতিপক্ষ
আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর আলোচনায় এখন ত্রয়োদশ নির্বাচন। আর এই ত্রয়োদশ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইতিমধ্যেই নিজেদের মধ্যেই প্রতিযোগী রাজনীতিতে মগ্ন হয়ে উঠেছেন। যার কারণে নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনের বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা একে অপরকে টার্গেট করে রাজনীতির মাঠে প্রতিযোগী হয়ে উঠায় আপাতত নিজেরাই নিজেদের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছেন।
সূত্র মতে, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির পাঁচটি আসনের বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রতিযোগী রাজনীতি পর্যালোচনা করে দেখা যায় পাঁচটি আসনেই বর্তমানে নিজেরাই নিজেদের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠছেন। নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে পর্যালোচনা করে দেখা যায়- নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূইয়া।
তবে বিএনপি বিরোধী দলের রাজনীতিকালীন সময় থেকেই একে অপরের মুখ্য প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছিলেন। এছাড়া সংসদ নির্বাচন ও দলীয় নেতৃত্ব নিয়ে তাদের মধ্যে ব্যাপক মনোনয়ন যুদ্ধ ও নেতৃত্বের লড়াই চলে। যেটা এখনো চলমান রয়েছে ত্রয়োদশ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। যার ফলে প্রায়ই দেখা যায় বিভিন্ন রাজনৈতিক সভা সমাবেশে একে অপরকে টার্গেট করে তীর্যক মন্তব্য করতে। তাদের এই প্রতিযোগী রাজনীতির ফলে বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে বিএনপি নেতারাই একে অপরের প্রতিপক্ষ আলোচনার বাহিরে অন্যান্য দল।
নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে পর্যালোচনা করে দেখা যায়- নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির অন্যতম বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী ঢাকা বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ এবং সাবেক বিএনপির সাংসদ আতাউর রহমান খাঁন আঙ্গুর। তবে বিএনপির অন্যান্য প্রার্থী থাকলেও তারা এখনো আলোচনায় নেই বললেই চলে। তবে নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির ওয়ান ম্যান বিএনপির পপুলার ক্যান্ডিডেট হয়ে উঠেছেন নজরুল ইসলাম আজাদ।
কেননা নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে নজরুল ইসলাম আজাদের প্রতিপক্ষ হয়ে তিনবারের সাংসদ আঙ্গুর রাজনীতির প্রতিযোগীতায় থাকলেও নজরুল ইসলাম আজাদের সাথে নেতৃত্বের গতিতে ধোপে টিকছে না। তবে ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের এই দুজন প্রার্থীই আপাতত একে অপরের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছেন। নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে পর্যালোচনা করে দেখা যায়- নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রেজাউল করিম এবং সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান। তবে এই দুই প্রার্থীর মধ্যেই প্রতিযোগী ঠেকেছে চরমে।
কেননা আজহারুল ইসলাম মান্নান বিগত কয়েক বছর নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে একক ভাবে বিএনপিকে নেতৃত্ব দিয়ে বিএনপির রাজনীতি অগ্রভাগ তার নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন। কিন্তু সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রেজাউল করিম প্রকাশ্যে রাজনীতিতে দীর্ঘদিন নিশক্রিয় থাকায় নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপির রাজনৈতিক মাঠ তার নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে গিয়েছে।
যার ফলে রেজাউল করিম ফের রাজনীতির মাঠ নিয়ন্ত্রণ নিতে উঠে পরে লেগেছেন। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে নারাজ মান্নান যার ফলে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের রাজনীতির মাঠে রেজাউল করিমকে প্রতিরোধের এক হাত নিয়েছেন মান্নান। কেননা বিএপির সভা সমাবেশে রেজাউল করিমকে দেখলেই তীর্যক মন্তব্য করতে ছাড়েন না মান্নান এবং তাকে সভা সমাবেশে বক্তব্যের সুযোগ দেয়া হলেই উত্তেজিত হয়ে উঠেন। ঠিক এমনটাই দেখা গিয়েছে ২৫ ফেব্রুয়ারি জেলা বিএনপির সমাবেশে আয়োজিত সমাবেশে।
যার কারণে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের আপাতত এই দুজন প্রার্থীই একে অপরের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছেন বলে অনুমেয় করা যাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে পর্যালোচনা করে দেখা যায়- নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন আলোচনায় থাকলেও তার সাথে সর্বদা আলোচনায় থাকেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি শাহ আলম
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে এখনো এই দুই প্রার্থীর মধ্যকার প্রতিযোগী রাজনীতিতে জ্বলে না উঠলেও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের বিএনপির রাজনীতিতে তার প্রতিপক্ষ বলয়ের সাথে প্রায়ই প্রতিযোগী রাজনীতিতে বিভিন্ন আলোচনা সমালোচনার মধ্য রাজনৈতিক প্রতিযোগীতায় থাকতে হচ্ছে সর্বদা। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে পর্যালোচনা করে দেখা যায়- নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়ান হোসেন খান অন্যতম প্রার্থী হলেও তিনি নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না।
কেননা নারায়ণগঞ্জ সিটি মেয়র আরও বিভিন্ন বড় বড় পদে তার নির্বাচন করার আলোচনা থাকায় দলীয় সিদ্ধান্তে তাকে যেখানেই নির্বাচন করার নির্দেশনা দিবে সেখানেই তিনি নির্বাচন করতে ইচ্ছুক। অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সাংসদ আবুল কালাম রাজনীতিতে দীর্ঘদিন নিশক্রিয় থাকলেও আবারও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের আবারও প্রার্থী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু ইতিমধ্যেই সাখাওয়াত বলয় ও কালাম বলয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিযোগী রাজনীতি চলমান রয়েছে। যার ফলে সহজেই অনুমেয় করা যাচ্ছে আপাতত তারাই নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে এক অপরের প্রতিপক্ষ।