Logo
Logo
×

রাজনীতি

এমপি পত্নী পরিচয়ে মূর্তিমান আতঙ্ক

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম

এমপি পত্নী পরিচয়ে মূর্তিমান আতঙ্ক

এমপি পত্নী পরিচয়ে মূর্তিমান আতঙ্ক

Swapno

নারায়ণগঞ্জ পাঁচটি আসনের আওয়ামীলীগ শাসিত সরকারের সময়কালে সাংসদদের পত্নী পরিচয়ে হয়ে উঠেছিলেন ‘লেডি কিলার’। কেননা দলীয় কার্যক্রম থেকে থেকে শুরু করে সরকারী বেসরকারী সামাজিক ধর্মীয় বিষয়বস্তু সাংসদের পূর্বে তাদের পত্নীরা সিদ্ধান্ত দিলেই সেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে বিভেচিত হত। এছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দলীয় মনোনয়ন থেকে শুরু চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজি ভূমিদস্যুতা ঝুট সেক্টর নিয়ন্ত্রণ মাদক ব্যবসা এমপি পত্নীদের যেই বা আগে টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করতে পারতেন সেই দলীয় মনোনয়ন বা বিভিন্ন সেক্টর নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পেয়ে যেতেন। তবে এমপি পত্নী পরিচয়ে ভয়ঙ্কর লেডি কিলার হিসেবে বিভেচিত ছিলেন ওসমানদের পত্নীরা।



সূত্র বলছে,নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সাংসদ প্রয়াত নাসিম ওসমানের স্ত্রী পারভীন ওসমান ছিলেন নারায়ণগঞ্জের অন্যতম রেডি কিলার। নাসিম ওসমানের মৃত্যুর পর যার প্রধান হাতিয়ার ছিলেন তারই পুত্র নারায়ণগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী আজমেরী ওসমান। পারভীন ওসমান যেদিকই চোখ রাখতেন সেদিকই তুলে নিয়ে আসতেন পুত্র আজমেরী ওসমান। যেমন: কোন ভূমি জবর দখল অথবা চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজি ভূমিদস্যুতা ঝুট সেক্টর মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ তার ইশারায় হবে সেটাই বাস্তবায়িত করতেন পারভীন ওসমান ওরফে আম্মাজানের আদরের দুলাল সন্ত্রাসী আজমেরী ওসমান তার হোন্ডা বাহিনী নিয়ে আর এই আম্মাজান হোন্ডা বাহিনী নিয়ে পারভীন ওসমানের দেবর নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সাংসদ সেলিম ওসমান বিদ্রুপ করে বলতেন এসব হাম্মাজান এবং হোন্ডাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নেয় না কেন। এছাড়া আওয়ামীলীগ শাসন আমলে ওসমানদের জন্য জাতীয় পার্টি এবং আওয়ামীলীগ করা ছিল উমুক্ত দুই দল থেকেই যার কারণে আওয়ামীলীগ শাসন আমলে জাতীয় পার্টি করেও পারভীন ওসমান প্রভাব বিস্তার করতেন। অপরদিকে নারায়ণগঞ্জের গডফাদার শামীম ওসমানের পত্নী লিপি ওসমান নারায়ণগঞ্জের এমন কোন সেক্টর নেই যেখানে তার হস্তক্ষেপ ছিল না। কিন্তু মিষ্টি কথা মিষ্টি সুরে গান গেয়ে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তার লেডি কিলার মনোভাব লুকিয়ে রাখতেন। অথচ, আওয়ামীলীগ শাসন আমলে নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমানের অনুসারীরা তাকে ম্যানেজ করতে ব্যর্থ হয়ে দলীয় পদ মনোনয়ন বিভিন্ন সেক্টর নিয়ন্ত্রণ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। কিন্তু যারাই শামীম ওসমানের পত্নী লিপি ওসমানের লেডি কিলার মনোভাবকে প্রধান্য দিয়ে বিশাল টাকার বাস্তা উপহার বা দিতে বাধ্য থাকতেন তারাই দলীয় পদ মনোনয়ন বিভিন্ন সেক্টর নিয়ন্ত্রণ পেয়ে যেতেন এবং শামীম ওসমানে গুডবুকে গিয়ে শামীম ওসমানের প্রশংসার পাত্র হতেন। এদিকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সাংসদ সেলিম ওসমানে স্ত্রী নাসরীন ওসমান পর্দার অন্তরাল থেকে ব্যবসায়ীক মহল থেকে শুরু করে নারায়ণগঞ্জ-৫ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সেক্টরগুলোতে প্রভাব বিস্তার করতেন। কেননা সেলিম ওসমানের এমপিগিরির অধিকাংশ অংশ দিয়ে দিয়েছিলেন তার পত্নী নাসরীন ওসমান। 


এছাড়া নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের এমপি গোলাম দস্তাগীর গাজীর স্ত্রী হাসিনা গাজীকে গাজী তার অবৈধ অর্থের প্রভাবে তার প্রভাবকে আরো পাকাপোক্ত করার লক্ষ্যে তারাবো পৌরসভা মেয়র হিসেবে নির্বাচিত করেছিলেন হাসিনা গাজী। পরবর্তীতে গাজীর মত তার স্ত্রী রূপগঞ্জ জুড়ে বিভিন্ন সেক্টর নিয়ন্ত্রণ বিশেষ করে তারাবো পৌর এলাকায় ভূমি জবর দখল বিভিন্ন শিল্পকারখানা নিয়ন্ত্রণসহ সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালিত করতেন। নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের এমপি নজরুল ইসলাম বাবু তার ক্ষমতার প্রভাবে তার স্ত্রী ড.ইভাকে সরাসরি আড়াইহাজার উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হিসেবে নিযুক্ত করে পুরো আড়াইহাজারের স্বাস্থ্য খাত ধ্বংশে লিপ্ত করেন। এছাড়া আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্রকে রাজনৈতিক কার্যালয়ে পরিণত করেছিলেন তার পত্নী ইভা। কারণ  স্বাস্থ্য সেবার নামে আড়াইহাজারে প্রভাব বিস্তার করতেন ইভা। নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি কায়সার হাসনাতের স্ত্রী রুবাইয়া সুলতানা ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁ) আসন এলাকায় অঘোষিত এমপি। কেননা যেকোন ক্ষেত্রেই রুবাইয়া সুলতানের সিদ্ধান্তই ছিল চূড়ান্ত। এছাড়া দলীয় নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সমস্যা এবং দলীয় মনোনয়নের বিষয়ে কায়সারের সাথে বুঝাপড়া করতে আসলেই কায়সার খোদ নিজেই তার স্ত্রী রুবাইয়া সুলতানার সাথে যোগাযোগে নির্দেশ দিতেন। এছাড়া বিভিন্ন মিল ফ্যাক্টরীর চাঁদাবাজির টাকা মাদকের টাকার অংশ টেন্ডারবাজি,পরিবহন সেক্টরের চাঁদার টাকা রুবাইয়া খোদ নিজেই সংগ্রহ করতেন সোনারগাঁয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি রাসেল এবং সাধারণ সম্পাদক সাগরকে ব্যবহার করে।


এছাড়া ২০০৮ সালে কায়সার প্রথমবারের মত সাংসদ হওয়ার পরে রুবাইয়া সুলতানা খোদ নিজেই তৎকালীন উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালামকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন মিল ফ্যাক্টরী বালু মহালের টাকা সংগ্রহ করতেন। যে কারণে কায়সার টানা দুবার মনোনয়ন  বঞ্চিত হয়েছিলেন। কিন্তু কায়সার সাংসদ হলেই সোনারগাঁয়ের লেডি কিলার হয়ে উঠতেন রুবাইয়া সুলতানা।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন