Logo
Logo
×

রাজনীতি

আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম

আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে

(সোলডার) জাতীয় নাগরিক পার্টির ইফতার মাহফিলে নাহিদ ইসলাম

Swapno

# বিদ্যমান সংবিধান একটি প্রশ্নবিদ্ধ ও অভিশপ্ত সংবিধান : সামান্থা


সাবেক উপদেষ্টা ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সম্প্রতি সময় ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ষড়যন্ত্র চলছে। কোনভাবেই যদি ফ্যাসিবাদকে আবার পূর্ণবাসিত করার চেষ্টা করা হয় তাহলে এনপিসি তা রুখে দিবে। বিগত ১৫ বছর আগেও আওয়ামী লীগ বাকশাল কায়েম করেছিল, তারপরে ১৫ বছর কী ধরনের নির্যাতন জুলুম চলিয়েছে তা সবাই জানে। 


সে হিসেবে আওয়ামী লীগকে কখনো রাজনৈতিক দল হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ঘোষণা করে নিবন্ধন বাতিল করা হোক।’ গতকাল সোমবার (২৪ মার্চ) ফতুল্লার বাংলা ভবন কমিউনিটি সেন্টারে জাতীয় নাগরিক পার্টির ইফতার মাহফিলে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এক বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।


 তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জের অনেক ভাই ও বোন শহীদ হয়েছেন আহত হয়েছেন। জাতীয় নাগরিক পার্টি বাংলাদেশের একটি নতুন দল এবং নতুন রাজনৈতিক আকাঙ্খা নিয়েই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় দেশকে নতুনভাবে গড়তে এই দলের প্রতিষ্ঠা হওয়া। আমরা জনসাধারণের সমর্থন নিয়ে একটি নতুন রাজনীতি গড়ে তুলতে চাই, যা আগামীর বাংলাদেশকে নতুনভাবে তৈরি করবে। আমরা গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকারীদের বিচার, রাষ্ট্রের কাঠামোগত সংস্কার ও একটি গণপরিষদ নির্বাচনের দাবির কথা বলছি।


গণঅভ্যুত্থানের পর যদি আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিচার সুনিশ্চিত করা না হয়, তাহলে এই দেশে যে আরেকটি ফ্যাসিবাদ দেখব না তা নিশ্চিত নয়। তাই নির্বাচনের আগে দৃশ্যমান বিচার সুনিশ্চিত করাই আমাদের অন্যতম দাবী।  তিনি আরও বলেন, আমরা চাই না পুরনো সেই সিস্টেমের মধ্যে আবার ফিরে যেতে, কিন্তু কিছু দল তারা পুরোনো বন্দোবস্তের দিকেই ফিরে যাচ্ছেন। তারা সংস্কার প্রতি অনাগ্রহ দেখাচ্ছে। যে যতই অনাগ্রহ দেখাক, আমরা সংস্কার ও পরিবর্তনের লক্ষ্যে কাজ করে যাবো।


আমরা যে সংবিধান আছে সেজন্য একটি গণপরিষদ নির্বাচন প্রয়োজন। কারণ পুরনো সংবিধান দিয়ে নতুন বাংলাদেশ সম্ভব নয়। নারায়ণগঞ্জের নেতাকর্মীদের কাছে আমার আহ্বান থাকবে আমরা জনগণের পাশে দাঁড়াবো এবং তাদের সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করব। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে যতটুক দরকার ততটুকু আমরা সাহায্য সহযোগিতা করব। সমাজে চাঁদাবাজির দখলদারির বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান নিতে হবে।’



জাতীয় নাগরিক পার্টির জেষ্ঠ্য আহ্বায়ক সামান্থা শারমিন প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন,“গণপরিষদ ছাড়া আর কোনো সরকার বা নির্বাচনের ম্যান্ডেট নাই। যে নির্বাচন নতুন সংবিধান আমাদের তৈরী করে দিতে পারবে। বিদ্যমান এই সংবিধান একটি প্রশ্নবিদ্ধ ও অভিশপ্ত সংবিধান। এই সংবিধানে মানুষের মতামতের জায়গা রাখা হয়নি। এটি একটি দলীয় সংবিধান ছিলো।”



তিনি আরও বলেন, “রাজনৈতিক যে ধারা পরিবর্তনের দায়িত্ব আমরা কাঁধে নিয়েছি, সে দায়িত্ব আমরা শুধু মনে করি না এনসিপির। এই অভ্যুত্থান সকলের ছিলো, সকল রাজনৈতিক দলের ছিলো। রাজনৈতিক দলগুলোকে এই দায়িত্ব নিতে হবে। বাংলাদেশকে তারা কিভাবে নতুন সংবিধান প্রদান করতে পারেন, এই দায়িত্ব কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না।” সামান্থা শারমিন বলেন, “আমরা দেখেছি ঐক্যমত্যে কমিশনে অনেকেই গণপরিষদ নির্বাচনের বিরোধিতা করছেন।


কিন্তু আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, গণপরিষদ নির্বাচন ব্যতীত আর কোনো নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যুত্থানের ম্যান্ডেট ধারণ করবে না।” তিনি বলেন, “চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে আমাদের নানান ধরণের বাস্তবতা আছে। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাস্তবতার মধ্যে আছি, একধরনের। সেইসাথে আমরা পুরো জনগোষ্ঠী ধারাবাহিক সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। এই বাস্তবতা সত্ত্বেও আমরা তরুণরা যে রাজনৈতিক ধারা তৈরীর চেষ্টা করে যাচ্ছি, সেই রাজনৈতিক ধারার অংশ হিসেবে আমরা বলেছি, নতুন একটি সংবিধান প্রয়োজন এবং সে সংবিধানের জন্য আমাদের অবশ্যই গণপরিষদে নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে।”


তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ গঠনে আমাদের নতুন ধারার যে প্রতিজ্ঞা আছে, সে নতুন ধারার অংশ হিসেবে আমরা বলেছি, নানান সংস্কৃতি, নানান ধর্ম সকলের যে আচার-অনুষ্ঠান আছে, সেটাকে উন্মুক্তভাবে সকলকে প্রকাশ করতে দিতে হবে এবং সকলের অংশগ্রহণ থাকবে। সেই সাথে আমাদের মুসলমানদের যে অনুষ্ঠানগুলো আছে, যেই রীতিনীতিগুলো আছে, সেগুলোকে আমরা রাজনৈতিকভাবেও সম্মান করবো।”


ইফতার মাহফিলে উপস্থিত থেকে আরো বক্তব্য দেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন, দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক শওকত আলী, সদস্য আহমেদুর রহমান তনু প্রমুখ। এনসিপি’র এ ইফতার আয়োজনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও নাগরিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন