Logo
Logo
×

রাজনীতি

তৈমূরের সময় কী বলবে

Icon

এম মাহমুদ :

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম

তৈমূরের সময় কী বলবে

তৈমুর আলম খন্দকার

Swapno

কখনো বলির পাঠা কখনো মীরজাফর এত খেতাবের মূলে ছিল তৈমুর আলমের স্বার্থনিষ্ঠ রাজনীতিতে ব্যর্থতা এবং পরাজয়কে কেন্দ্র করে। সাব্বির আলম হত্যা মামলায় জাকির খান খালাস এবং সর্বশেষ মুক্তি পেলেও জাকির খানের মুক্তি নিয়ে মামলার বাদী তৈমূর আলম তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন সময় কথা বলবে এইটুকু বলে নিজের দায় এড়ান। তবে তিনি একজন প্রভাবশালী আইনজীবী একসময়ের প্রভাবশালী রাজনীতিবীদ থাকলেও ছোট ভাই সাব্বির আলম হত্যা মামলায়ও তার স্বার্থনিষ্ঠ রাজনৈতিক কর্মকান্ডের কারণে এখানেও তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।



কেননা নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপি থেকে বহিষ্কারের পর আওয়ামীলীগের প্রেসক্রিপশনে গঠিত বিএনপি ভাঙার পরিকল্পিত কিংস পার্টির মত দল তৃণমূল বিএনপিতে যোগদান করে মহাসচিবের দায়িত্ব নেন। সাব্বির আলম হত্যা মামলায় জাকির খান গ্রেফতার হলে এই মামলার বিচার কার্য শুরু হলে তৈমুর আলম বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা হলেও বেশ দাপট দেখান। কিন্তু তার স্বার্থনিষ্ঠ কারণে বিএনপি ছেড়ে তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দেয়ার পরবর্তীতে সাব্বির আলম হত্যা মামলার বিচার কার্যে কোন প্রকার হস্তক্ষেপই করতে পারেনি তৈমুর।




সূত্র বলছে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তৃণমূল বিএনপি থেকে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অংশ নিয়ে শেখ হাসিনার আর্শিবাদে সংসদ নির্বাচনে জয়ী হওয়ার স্বপ্নে নির্বাচনে অংশ নিলেও শেষতক আওয়ামীলীগ থেকে  আর্শিবাদ না আশায় নারায়ণগঞ্জ-১ আসলে বিপুল ভোটে পরাজিত হয়ে জামানত হারিয়ে জাতির কাছে হাস্যরশে পরিণত হন তৈমূর আলম খন্দকার। এরপর থেকেই রাজনীতি থেকে শুরু করে তার আইনজীবী পেশায় দস নেমে আসে তৈমুরের। সাব্বির আলম হত্যা মামলার জাকির খান দীর্ঘ কয়েকবছর গ্রেফতার হলে এই মামলার বিচার কার্যের প্রথম দিকে জাকির খানকে তার ভাইয়ের খুনী হিসেবে অখ্যা দিয়ে এই বিচার কার্যের প্রথম দিকে তৈমুর আলম বেশ দাপট দেখালেও তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিয়ে ব্যর্থ হয়ে পরবর্তীতে এই বিচার কার্যে কোন প্রকার ভূমিকাই করতে পারেনি তৈমুর।



প্রসঙ্গত,২০১১ সালের নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে তৈমূর আলম খন্দকার দলীয় নির্দেশে মেয়র প্রার্থীতা থেকে নির্বাচনের কয়েক ঘন্টা আগে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের মাধ্যমে বলির পাঁঠা হিসেবে খেতাব পান তৈমুর আলম। পরবর্তীতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এবং জেলা বিএনপিতে একজন প্রভাবশালী নেতা হিসেবে বিএনপি প্রতিষ্ঠিত করে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টার মত পদ তুলে দেয়া হয়। তারপরও নানা প্রলোভনে ২০২২ সালের নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও বিএনপির সিদ্ধান্তকে প্রধান্য না দিয়ে হাতি প্রতীকে নারায়ণগঞ্জের গডফাদার শামীম ওসমানের ইশরায় প্রার্থী হয়েছেন এমন তকমা নিয়ে নির্বাচন করেন শেষতক নির্বাচনের কয়েকদিন আগে শামীম ওসমান তার অবস্থান পরিষ্কার করলে তৈমুর আলম খন্দকার ২০২২ সালের নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে বিপুল ভোটে পরাজিত হয়ে হোঁচট খান।



এরপরই বিএনপি থেকে বহিষ্কার হন তৈমুর আলম খন্দকার। তারপরও বিএনপির ব্যানারে রাজনীতি করলেও ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তৈমূর আলমের ছোট ভাই সাব্বির আলম হত্যা মামলার আসামী হিসেবে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খানকে গ্রেফতার হলে তৈমূর আলমের রাজনীতিতে নয়া মেরুকরণ তৈরী হয়। জাকির খান বিচার কার্যের আদালতের সম্মুখীন করা হলে তিনি বেশ বড় গলায় ছোট ভাই সাব্বির আলম হত্যা মামলার অন্যতম আসামী হিসেবে জাকির খানকে অখ্যায়িত করেন। এরমধ্যেই হঠাৎ আওয়ামীলীগের প্রেসক্রিপশনে বিএনপি ভাঙার পরিকল্পিত কিংস পার্টির মত দল তৃণমূল বিএনপিতে যোগদান করে মহাসচিব পদে দায়িত্ব নেন এবং নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অংশ নিয়ে শেখ হাসিনার আর্শিবাদে সংসদ নির্বাচনে জয়ী হওয়ার স্বপ্নে  নির্বাচনে অংশ নেন। সেসময় সরকারের সাথে তার ব্যাপক সখ্যতা থাকায় জাকির খানের বিচার কার্যে দাপট দেখানোর চেষ্টা করে।



এরমধ্যেই আওয়ামীলীগ থেকে আর্শিবাদপুষ্ট না হয়ে ফের ব্যর্থতার অনন্য এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে বিপুল ভোটে পরাজিত হয়ে জামানত হারিয়ে জাতির কাছে হাস্যরশে পরিণত হন। এরপর থেকেই জাকির খানের বিচার কার্যে বা তার ছোট ভাই সাব্বির আলমের হত্যার বিচারের দাবিতে কোন প্রকার  প্রতিবন্ধকতা সৃষ্ট করতে পারেনি তৈমূর। এরমধ্যেই গত ৫ই  আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের গণঅভ্যুর্থানে শেখ হাসিনার পতন ঘটলে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মত তৈমূর আলমের গ্রেফতারের বিষয়টি আলোচিত হতে থাকে। কিছুদিন রাজনীতি এবং তার আইনজীবী পেশা থেকে আত্মগোপনে ছিলেন। ফের বিএনপির সুবাতাসের ঘ্রাণে বিএনপিতে প্রবেশের নানা চেষ্টা চলমান রাখলেও এরমধ্যেই গত ৭ই জানুয়ারি সাব্বির আলমের হত্যা মামলা থেকে নির্দোষ হিসেবে জাকির খানকে বেকসুর খালাশ দেন আদালত।



এরমধ্য দিয়ে তৈমুর আলমের ব্যর্থতার পাহাড় আরোও দীর্ঘ হিসেবে পরিণত হয়। কারণ তৈমূর আলম দাবি করেছিলেন সাব্বির আলম হত্যাকান্ডে অন্যতম আসামী জাকির খান এবং আদালতের মাধ্যমে বিচারের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড প্রত্যাশা করেছিলেন। কিন্তু তার এই প্রত্যাশা থেকে বহু আগেই তার একের পর এক ব্যর্থতায় ছিঁটকে পড়লেও শেষতক জাকির খান বেকসুর খালাশ পাওয়ায় তার প্রত্যাশা থেকে হোঁচট খান। যার ফলে দীর্ঘ ২২বছর ৩৩মামলা অতিক্রম করে জাকির খান মুক্ত হলে সাব্বির আলম হত্যা মামলার বাদী তৈমুর আলম তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, সময় কথা বলবে এইটুকু বলেই দায় এড়িয়ে যান। তবে তৈমুরের সময় কী আবারও তাকে ব্যর্থ হিসেবে প্রতিয়মান করবে।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন