বৃহস্পতিবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ২০ ১৪৩১   ০৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

গ্রামে সবার সাথে ঈদ উদযাপনের আনন্দ কয়েকগুণ বেশি : জসীম উদ্দীন

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০২:২৭ পিএম, ১৩ জুন ২০১৮ বুধবার | আপডেট: ০৪:২৮ পিএম, ১৩ জুন ২০১৮ বুধবার

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( রাজস্ব) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন জসীম উদ্দীন হায়দার। প্রতিবার গ্রামের বাড়িতে পরিবারের সকলকে একসঙ্গে নিয়ে উদযাপন করলেও এবারের ঈদে তা হচ্ছে না। দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে এবার বিদেশে ট্রেনিংয়ে অংশগ্রহণ করতে অস্ট্রেলিয়ায় যাচ্ছেন তিনি।

 

যুগের চিন্তা ২৪’র ঈদ আড্ডায় ঈদ উদযাপন প্রসঙ্গে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জসীমউদ্দীন হায়দার জানান, এ মাসের ১৮ তারিখে আমি ট্রেনিংয়ে অস্ট্রেলিয়ায় যাচ্ছি। বিদেশে ট্রেনিং নেয়ার প্রস্তুতিতে এবার আর বাড়িতে যাওয়া হচ্ছে না। ঢাকায় ঈদ করবো। আমার স্ত্রী ও বাচ্চারাও ঢাকায় ঈদ করবে। যেহুতু গ্রামের বাড়িতে যাওয়া হচ্ছে না কিছুটা তো ঈদ আনন্দ কমে গেলো। কোরবানির ঈদে হয়তো পরিবারের সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে ঈদ উদযাপন করা হবে। ঈদের দিন ডিসি স্যারের বাংলোতে আসবো। অনুষ্ঠান থাকবে। সচরাচর আমার জমানো অর্থ থেকে গরীব আত্মীয় স্বজন-গরীব মানুষদের মধ্যে বিলিয়ে দেই। ঈদের সময় যাকাত দেয়ার পাশাপাশি ঈদের সময় আমার বেতন ও বোনাস ব্যক্তিগতকাজে ব্যবহার করি না। বাবা-মা, ভাই-বোনকে দেয়ার পর অবশিষ্টাংশ সবার মাঝে এটা বিতরণ করে দেই। এটার মধ্যে আমার আনন্দ।

 

নিজেকে অনেক ভোজন বিলাসী জানিয়ে জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, সকাল বেলা পছন্দের সেমাই খাওয়া থেকে শুরু করে মায়ের বানানো সবকিছুই খেতে পছন্দ করি। চটপটি, পোলাও-মাংস খেতে ভালো লাগে। তবে এবার মায়ের হাতের রান্না খুব মিস করবো। যদিও স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে এবারের ঈদ কাটবে। তবে গ্রামের বাড়িকে খুব বেশি মিস করবো। ঈদের নামাজের পর যখন সালাম ফিরিয়ে কোলাকুলি করার অল্প কিছুক্ষণ পর আর পরিচিত মানুষ খুঁজে পাই না। গ্রামের বাড়িতে কোলাকুলি ও মানুষের বাসায় খেতে যাওয়ার আনন্দটা কয়েকগুণ অনেক বেশি থাকে। ছোটবেলার ঈদ উদযাপনে স্মৃতিচারণ করে জসীম উদ্দীন হায়দার জানান, ঈদের সময় নতুন জুতো, নতুন জামা বালিশের নিচে লুকিয়ে রাখতাম। কেউ দেখে ফেললে এটা পুরোনো হয়ে যাবে। সালামী নেয়ার জন্য কতদূরে চলে যেতাম। অচেনা মানুষকেও সালামীর জন্য সালাম দিতাম। এটার আনন্দই আলাদা। বড় হয়ে আসলে এই আনন্দটা সবাইকে দিতে চাই। সালামী দিতে এখন ভালো লাগে।

 

ফুটবল বিশ্বকাপে আমি ব্রাজিলের সমর্থক জানিয়ে জসীমউদ্দীন হায়দার বলেন, আগে খুব উন্মাদনা ছিলো জার্সি পড়ে পতাকা নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর। ক্লাস এইট-নাইনে পড়ার সময় জার্সি পরতাম, পতাকা বানাতাম। বয়সের সাথে সাথে আসলে অনেক কিছু পরিবর্তন হয়ে যায়। এখন ছোটদের খেলা নিয়ে এ আনন্দ করতে দেখলে ভালো লাগে। আমাদের বাসায় সবাই ব্রাজিলের সমর্থক। পরিবার ছাড়া ঈদ উদযাপনের স্মৃতি রোমন্থন করে জসীম উদ্দীন হায়দার জানান, বাড়ির সকলকে নিয়ে ঈদ না করার অভিজ্ঞতা এর আগে আরো একবার হয়েছিলো। ঈদের দিন যখন খুব কষ্ট লাগছিলে। ঈদের পর দিন সকালেই সবাই মিলে বাড়ি চলে গেলাম। ঈদের পরের দিন ঈদের আনন্দটা ভাগাভাগি করেছিলাম। এবার অবশ্য ওরকমটা করার সুযোগ নেই। ঈদে মজার স্মৃতিচারণ করে জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, আমার সম্পর্কে মামা একসময়ের এমপি আবু সুফিয়ান সাহেব একসময় ঈদী দেয়ার জন্য চেয়ারে ১০টাকার নোট নিয়ে বসে থাকতেন। বলতেন কে কে সালামী নিবে, সালাম দিয়ে আসো।

 

একবার ঈদের দিন মেঘলা থাকায় অন্ধকারে আমরা কয়েকজন দুই তিনবার করে সালাম দিয়ে বারবার ঈদি নিচ্ছিলাম। প্রায় সকলেই ডাবল করে নিচ্ছিলাম। উনি এটা বুঝতে পারার পরও ঈদী দিয়ে যাচ্ছিলেন। আমি যখন তৃতীয়বার ঈদীর টাকা নিতে গেলাম উনি আমার কানটা ধরে ফেললো। উনি বললেন তুমি তো তিনবার নিয়ে ফেলছো। আমি বললাম মামা আপনি খেয়াল করেন নি। মামা বললেন, তুমি তো একটু বেশি লম্বা, তাই তোকে ধরে ফেললাম। বলেই তিনি ডাবল ঈদ বোনাস দিলেন। আমার সেই মামা মারা যাওয়ার পর এখন ঘটনাটা প্রায়ই মনে পড়ে। এখন কাউকে ঈদী দিতে গেলে মামার ঈদ বোনাসের কথা স্মরণ হয়। ঈদুল ফিতরের আনন্দে পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মী, শুভানুধ্যায়ীসহ সকলকে ঈদের অগ্রীম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন জসীম উদ্দীন হায়দার।