বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১   ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সেদিনের কথা মনে পড়লে আজও নিজে নিজে হাসি : এটিএম কামাল

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ১০:২৭ পিএম, ১৩ জুন ২০১৮ বুধবার | আপডেট: ১২:০৫ পিএম, ২১ জুন ২০১৮ বৃহস্পতিবার

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : মায়ের হাতে বানানো সেমাই ছিল প্রিয় খাবার। ফিরনি,পায়েসের পাশাপাশি খেতে পছন্দ করেন ভুনা খিচুড়ি আর গরু গোস্ত । ঈদ নিয়ে শৈশবে যেমন বেদনার স্মৃতি আছে তেমনি এমনও ঘটনা আছে যা মনে করে এখনো নিজে নিজে হেসে উঠেন। যুগের চিন্তা ২৪ এর ঈদ আড্ডায় এমনি সব বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল। যুগের চিন্তা ২৪ এর পাঠকদের জন্য অংশ বিশেষ তুলে ধরা হলো।

যুগের চিন্তা : কেমন আছেন ?

যখন মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই। বেঁচে থাকার সম্মানটুকু নেই। তখন বেঁচে থাকাটাই বড় ব্যাপার। আলহামদুলিল্লাহ, বেঁচে আছি।

যুগের চিন্তা : এবার ঈদে বাড়তি উন্মাদনা নিয়ে এসছে ফুটবল বিশ্বকাপ । কোন দল সাপোর্ট করেন?

আমি বরাবরই ব্রাজিলের সাপোর্টার। আমার ছেলে করে আর্জেন্টিনা। তবে পরিবারে গণতান্ত্রিক অবস্থান ও পরমত সহিষ্ণুতা থাকায় এ নিয়ে আমাদের মধ্যে কখনোই কোন সমস্যা হয়নি। বিশ্বকাপ হয়তো দেখা হবে। তবে রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারনে সেটা কোন উন্মাদনা তৈরী করতে পারেনি।

যুগের চিন্তা : আমেরিকা কেমন লাগছে?

এখন আমার অবস্থা ছিন্নমূল মানুষের মতো। একটা তীব্র হাহাকার কাজ করে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য। ইচ্ছে থাকলেও তা প্রকাশ করা যায় না। অনেকটা যেন,‘ যতই মুখে হাসি থাকুক, বুকে আমার চোখের জল।’

যুগের চিন্তা : শৈশবের ঈদ কেমন ছিল?

ঈদের যত আনন্দ ছিল তা ছিলো শৈশবেই । আমার বাবা মা দুজনেই ছিলেন শিক্ষক। আমরা সাত ভাই বোন। ফলে ঈদে আমাদের সাত ভাই বোনের আবদার মেটানো তাদের জন্য দুস্কর ছিলো। কখনো কখনো নতুন জামা না পেলে কষ্ট লাগতো। বাবা মায়ের প্রতি অভিমান জাগতো। মনে হতো অবিচার করলো। কিন্তু আজ নিজে বাবা হওয়ার পর বুঝতে পারি, পাওয়ার চেয়ে দিতে পারার আনন্দটা অনেক বেশি। অনেক সময় ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও অনেক কিছুই করা যায় না।

যুগের চিন্তা : শৈশবের কোন মজার স্মৃতি মনে পড়ে?

তখন ঈদের চাঁদ দেখার পর থেকেই অপেক্ষায় থাকতাম কখন সকাল হবে ঈদের নামাজ পড়তে যাবো, ফিরনি খাবো, আতর দেবো। সেখানেই আনন্দটা ছিলো। শৈশবের আনন্দটা এখন আর নেই। তখন সালামির অপেক্ষায় থাকতাম। একবার এমন হয়েছে যে, আমি নামাজ পড়ে ঘরে এসে দেখি পাশের বাসার এক মুরব্বি বসে আছেন। আমি ঘরে ঢুকেই তাকে সালাম করলাম। কিন্তু তিনি আমাকে কোন সালামি দিলেন না। ভাবলাম তিনি হয়তো ভুলে গেছেন । তাই আবার সালাম করলাম। দ্বিতীয়বার সালাম করতে দেখে সেই মুরব্বিসহ ঘরের লোকজন হেসে ফেললেন। সালামিও দিলেন। সেদিনের কথা মনে পরলে আজও নিজে নিজে হাসি। শৈশবের এই যে সরলতা তা আজ হারিয়ে গেছে।

যুগের চিন্তা : এবার ঈদের পরিকল্পনা কি?

দেশের আনন্দটা এখানে নেই। তাই তেমন কোন পরিকল্পনাও নেই। এখানে সবাই ব্যস্ত। ব্যস্ততার মধ্যেই সময় করে হয়তো পরিবারের সঙ্গে লং ড্রাইভে যাওয়া হবে। তাছাড়াও দেশে নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় ও খোঁজ খবর নিয়েই সময় কাটবে। আমার খুব খারাপ লাগবে। নেত্রী কারাগারে দেশের মানুষ জিম্মী অবস্থায় সময় পার করছে। নেতাকর্মী, বন্ধুবান্ধব, পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, সহকর্মী-সহযোদ্ধা, সন্তানসহ দেশের সকলকে খুব মিস করবো। আই মিস ইউ অল।

যুগের চিন্তা : তাহলে দেশে ফিরে আসেন না কেন?

জীবন যেখানে যেমন। এখানেতো শখে আসিনি। পরিবেশ, পরিস্থিতি, শারিরীক, পারিবারিক ও রাজনৈতিক অবস্থার কারনে বাধ্য হয়েই এখানে এসেছি। খুব শিঘ্রই ফিরে আসবো আশা করছি।

যুগের চিন্তা : নারায়ণগঞ্জবাসীর উদ্দেশ্যে কি কিছু বলতে চান?

দেশের মানুষকে বলবো, দেশে এখন মানবিক বিপর্যয় চলছে। এই বিপর্যয় কাটিয়ে একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গঠনের জন্য এখনি রুখে দাঁড়ানোর সময়।