রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১   ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নারায়ণগঞ্জে আসলে মনে হয় এটাই সত্যিকারের ঈদ : শাহ্ নিজাম

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ১২:৫০ পিএম, ১২ জুন ২০১৮ মঙ্গলবার | আপডেট: ১১:০৯ এএম, ১৩ জুন ২০১৮ বুধবার

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ্ নিজাম। বছরের পুরোটা সময়ই নারায়ণগঞ্জের মানুষের সাথে থাকেন। আন্দোলন, সংগ্রাম, ব্যবসা-বাণিজ্য, রাজনীতি সবকিছু মিলিয়ে নারায়ণগঞ্জেই থাকতে হয় তাকে। তবে ঈদের আনন্দের মতো একটি বিশেষ দিনে পরিবারকে সময় না দেয়াকে পরিবারের সাথে অত্যাচার করা বলে মনে করছেন তিনি।

 

ওই হিসেব করে এবারের ঈদে দিন পরিবারকে সময় দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তবে তার কর্মী সমর্থকদেরও বঞ্চিত না করার কথা ভাবছেন তিনি। জানিয়েছেন ঈদের পরদিনই নেতাকর্মীদের সাথে দেখা করতে নারায়ণগঞ্জে চলে আসবেন। এবারের ঈদ উদযাপন প্রসঙ্গে শাহ নিজাম যুগের চিন্তা ২৪কে জানান, ঈদের শপিং বলতে ঈদ উদযাপনকে সুন্দর করে আনন্দ করার জন্য যতোটুকু প্রয়োজন ঠিক ততোটুকুই করা। আমার পরিবারে মা আছেন কিন্তু বাবা বেঁচে নেই। বাবার অনুপুস্থিতিটা অনেক বেশি অনুভব করি। পরিবারের প্রয়োজনে ঢাকাতে ঈদ করি। কিন্তু ঢাকায় ঈদের নামাযের পর বেশ কষ্ট লাগে। আশে পাশের বেশিরভাগ লোকজনই অপরিচিত। শুধু আমার ছেলের সাথেই কোলাকুলি করতে হয়। ঈদের পর যখন নারায়ণগঞ্জে আসি তখনই মনে হয় এটাই সত্যিকারের ঈদ। ঈদের দিনের বিশেষ কাজ প্রসঙ্গে শাহ্ নিজাম বলেন, ঈদের নামায আদায় শেষে মা’কে সালাম করে তাঁর কাছ থেকে দোয়া নেয়া। ছোটবেলায় ঈদ বোনাসের জন্য টার্গেট ছিলো।

 

কোথায় কোথায় গেলে কাকে সালাম করলে ঈদের সালামী বা ঈদী পাওয়া যাবে। ঈদে খাবারের মধ্যে জর্দা সেমাই আমার খুব পছন্দ। আর সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে আমার মা আর আমার স্ত্রী’র রান্না করা সেমাইটা প্রায় একই রকম হয়। ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে শাহ্ নিজাম বলেন, আমি ব্রাজিলের সমর্থক। আমার স্ত্রীও ব্রাজিলের সমর্থক। আমার ছেলেও একই দল সমর্থন করে। তবে ছেলেটা মাঝে মাঝে আর্জেন্টিনা করে। সে কারণে মাঝে মাঝে অবশ্য কিছুটা খুনসুটি লাগে। সে আবার আর্জেন্টিনার মেসির খুব ভক্ত। পরিবার ছেড়ে ঈদ উদযাপন করার স্মৃতিচারণ করে শাহ্ নিজাম বলেন, ১৯৯৮ সালে জোড়া খুনের মামলায় ষড়যন্ত্র করে আমাদের নাম ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছিলো। ঈদের নামাযটিও পড়তে পারি নি। আমরা চাষাঢ়ায় একটি বাসার সামনে যখন বসে ছিলাম তখন সে বাসা থেকে মুড়ি ও গরুর মাংস দেয়া হয়েছিলো। আরেকটি হচ্ছে ২০০১ সালে কলকাতায় ঈদ করেছি। পরিবারের বাইরে গিয়ে ঈদ করার মধ্যে অনেক পার্থক্য। ঈদের আনন্দ, মজা আসলে সেভাবে থাকে না। ঈদের স্মরণীয় স্মৃতি প্রসঙ্গে শাহ নিজাম বলেন, বাবা বেঁচে থাকতে ঈদে খুব আনন্দ হতো। আমরা তো ঈদে বেজায় খুশি। কিন্তু বাবাকে দেখতাম তিনি খুব চিন্তায় থাকতো। উনার চিন্তাটা ছিলো আত্মীয় স্বজন, প্রতিবেশী, সবাইকে ঈদের উপহার দিতে হবে। সেগুলো যোগাড় করার জন্য তাঁর অনেক চিন্তা ছিলো।

 

সেসময় আমরা ভাবতাম, আমরা এতো খুশি কিন্তু তারা খুশি হন না কেন। এখন বাবার জায়গায় এসে সেটি বুঝতে পারি। আসলে দায়িত্ববোধ থাকলে ওমনটা হয়। আগের ঈদ উদযাপনে মানুষের মধ্যে যে আন্তুরিকতা ছিলো তা এখন নেই উল্লেখ করে শাহ্ নিজাম জানান, এখন মানুষের মধ্যে শুধুু প্রতিযোগিতা। বন্ধুরা সবাই মিলে আগে শপিং এর জন্য সারারাতের জন্য বের হতাম। আগে নতুন জামা কিনলে লুকিয়ে রাখতাম। কেউ যাতে না দেখে। এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার পরও এমনটা করতাম। কিন্তু এখন আমার ছেলেকে দেখি কেনাকাটায় আগ্রহ নেই। এখনকার ছেলে মেয়েরা খুবই আপগ্রেড। ঈদের পর রাজনৈতিক প্রস্তুতি প্রসঙ্গে শাহ নিজাম বলেন, এটার দায়িত্বটা আসলে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের।

 

ঈদের পর যদি তারা মনে করেন একটি ঈদ পূণর্মিলনী করা উচিৎ। অবশ্য আমি মনে করি এটা করা উচিৎ। এটা দলের জন্যই ভালো হতো। আমার ব্যক্তিগত মতামত, এটা করতে যে কোন সহযোগিতার জন্য প্রয়োজন হলে আমি সেটা করবো। ঈদে তাঁর বন্ধু বান্ধব, সহকর্মী, নেতাকর্মী সকলকে ঈদের অগ্রীম শুভেচ্ছা জানিয়ে শাহ্ নিজাম বলেন, রমজানের এ সংযমের মাসে আমরা যে শিক্ষাটি নিয়েছি বাকি এগারোটি মাসও আমরা যেনো এভাবে সংযমী, আন্তরিক ও উদার হয়ে চলতে পারি।