ঈদের দিন ও রির্পোটিং এর জন্য বেরিয়ে যেতে হত : হালিম আজাদ
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ১১:৫৪ এএম, ১৫ জুন ২০১৮ শুক্রবার | আপডেট: ১২:০৩ পিএম, ২১ জুন ২০১৮ বৃহস্পতিবার
স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : ছোটবেলায় হত কী সকাল বেলা উঠে নতুন জামা পড়ে সেমাই খেয়েই আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে ছুটতাম ঈদের বখশিস নেয়ার জন্য। কেউ এক আনা দিতো আবার কেউ দু’আনা দিত আবার অনেকে দুই পয়সাও দিত। ঐ সময় এক আনা দিয়ে বড় দুইটা আইসক্রিম পাওয়া যেত। আর চালের কেজি ছিল ছয় আনা।
আর সে সময় ছয় আনা আট আনা ঈদী পাওয়া তো বিশাল ব্যাপার ছিল। এখনতো সেই ছয় আনা ছয়শ টাকার সমান। ছোটবেলার প্রথম ঈদ বখশিস পাওয়া হতো মায়ের কাছ থেকে। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে নতুম জামা কাপড় পড়ে মায়ের কাছে আসলে মা ঈদেও বখশিস দিত। তবে এখন আর ঈদ বখশিস পাওয়া হয় না। তবে দেয়া হয় । তখন নেয়ার মধ্যে যে আনন্দগুলো ছিল এখন দেয়ার মধ্যে সে আনন্দ খুঁজে পাই। কিন্তু পুরোনো স্মৃতিগুলো এখন হাতড়ে বেড়ায়। যুগের চিন্ত ২৪ ’র ঈদ আড্ডায় কবি ও সাংবাদিক হালিম আজাদ ঈদ বখশিস বা ঈদী নেয়া প্রসঙ্গে ছোটবেলার এমন মজার স্মৃতিচারণ করেন। এবারে ঈদ উদযাপন প্রসঙ্গে কবি ও সাংবাদিক হালিম আজাদ জানান, ঈদের কোনাকাটাটা আমার শপিংমলে গিয়ে করতে হয় না। আমার স্ত্রীই আমার কেনাকাটাটা সেরে ফেলে । আমার জন্মস্থান নারায়ণগঞ্জ আর আমি ছোটবেলা থেকেই নারায়ণগঞ্জে ঈদ উদযাপন করি। যদিও আমরা ঢাকায় বাসা তারপরও আমি ঈদ আসলে নারায়ণগঞ্জেই চলে আসি। আত্মীয়স্বজন,পরিবার পরিজন,বন্ধু-বান্ধব নিয়ে একসাথে ঈদ উদযাপন করি। ঈদ কেনাকাটায় ছোটবেলার স্মৃতি প্রসঙ্গে হালিম আজাদ জানান, ছোটবেলায় জামাকাপড় কেনাকাটার ব্যাপারটা এমন ছিলো না। এখন যেমন প্যান্ট-শার্ট কিনতে পাওয়া যায় কিন্তু তখন জামা-প্যান্ট কাপড় কিনে দর্জি দোকান থেকে বানিয়ে আনা হত। ছোটবেলায় বাবাকে হারাই তাই আমাদের কেনাকাটার দায়িত্ব বড় ভাইদের ওপর। তাই ভাইদের সাথে ঘুরে ঘুরে জামা-প্যান্ট’র কাপড় বাছাই করতাম। তো তখন নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে কেনাকাটা বাজার নামে একটাই বাজার ছিল। সেখান থেকেই ঈদের কেনাকাটা করতাম। মজার ব্যাপার ছিল আমরা অনেক ভাইবোন ছিলাম। তখন কী হত ঈদেও জামা দর্জি দোকান থেকে বানিয়ে আনা হলেই যে যারটা নিয়ে ঘরে লুকিয়ে রাখতাম। তারপর ঈদেও দিন সবাই সবার জামা দেখতাম। বিষয়গুলো এমন ছিলো। ঈদের জামা নিয়ে ছোটবেলায় আরো একটা ঘটনা আজও মনে পড়ে। ঈদেও কেনাকাটা সেরে বাড়ি ফিরছিলাম বুড়িগঙ্গা নদী দিয়ে। তখনতো বুড়িগঙ্গা নদীতে বিশাল বিশাল ঢেউ। তো আমি নৌকায় বসে আছি। মাঝে মাঝে এমন অবস্থা হচ্ছে যে মনে হচ্ছিল নৌকা উল্টে যাবে। একটা সময় গিয়ে যা আশঙ্কাই তাই হলো নৌকা কাত হয়ে গিয়ে পানিতে পড়েই যাই আমি। তখন আমি নৌকার মাস্তুলে ধরে আমি ভাসছিলাম কিন্তু আমার জামা কাপড় ভিজে যায় কিন্তু আমার ঈদেও জামাকে আমি কিছু হতে দেয়নি। তখন সবাই আমার এই কান্ড দেখে সবাই অবাক হয়ে গিয়েছিল। ছোটবেলায় ঈদে নতুন জামা কেনাটা ছিল বিশাল আনন্দের। সেই আনন্দেও কথা বলে শেষ করা যাবে না। ঈদের সারাটা দিন কাটানো নিয়ে তিনি জানান, ঈদের দিনটা মুলত পরিবারের সাথেই কাটানো হবে। তবে সকাল বেলা বায়তুল মোকারমে নামাজ আদায় করে নারায়ণগঞ্জ চলে আসবো। এখানে এসে আত্মীয় স্বজন,বন্ধু বান্ধবদের সাথে কুশল বিনিময় করব। ঈদে পছন্দের খাবার নিয়ে হালিম আজাদ জানান, আমি আসলে সবজিভোজী মানুষ। তবে ঈদের দিন আমার পায়েস খেতে খুব ভালো লাগে। আমার তো ডায়েবেটিসের সমস্যা আছে তাই আমার স্ত্রী আমার জন্য চিনি ছাড়া পায়েসটা রান্না করে। তবে মায়ের হাতে রান্নার মত স্বাদ এখন আর খুঁজে পাওয়া যায় না। বিশ্বকাপ ফুটবলে পছন্দের দল নিয়ে কবি হালিম আজাদ জানান, ফুটবলে আমি চিরকালই জার্মানকে সমর্থন করি। কারণ জার্মানদলের খেলাটা হল খুব পরিচ্ছন্ন। ওদের খেলার ধরনটা অন্যান্য দলের চেয়ে আলাদা। আগের ঈদ উদযাপনের সাথে এখনকার ঈদের পার্থক্য নিয়ে হালিম আজাদ জানান, ঈদ উদযাপন হলো অনুভূতির ব্যাপার। আর এটা সম্পূর্ণ সামাজিক ব্যাপার। পরিবার ছাড়া ঈদ উদযাপন নিয়ে হালিম আজাদ জানান, বহুবার ঈদ উদযাপন করা হয়েছে। যেহেতু সাংবাদিকতা পেশা ছিল আর এ সুবাদে বহুবার আমার দেশের বাইরে যেতে হয়েছে। তখন আর কী পরিবার ছাড়া ঈদ উদযাপন করা হয়েছে। এমনকি ঈদেও দিন ও রির্পোটিং এর জন্য বেরিয়ে যেতে হত। যুগের চিন্তা ২৪’র সাথে ঈদ আড্ডা শেষে কবি ও সাংবাদিক হালিম আজাদ পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, শুভানুধ্যায়ীসহ সকলকে ঈদের অগ্রীম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।