ঈদের চাঁদ দেখা, সেই মূহুর্তগুলো খুব সুন্দর ছিলো : চেয়ারম্যান রফিক
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ১২:০৬ পিএম, ১৫ জুন ২০১৮ শুক্রবার | আপডেট: ১২:০২ পিএম, ২১ জুন ২০১৮ বৃহস্পতিবার
স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : তিন বছরের মধ্যে শুধুমাত্র এই ঈদে প্রথম কেনাকাটা করতে গেলাম। তিন বন্ধুর জন্য তিনটা পাঞ্জাবী দিলাম,তিনটা শাড়ী নিলাম আর আমার জন্য দুইটা পাঞ্জাবী নিলাম। এই হলো আমার কেনাকাটা।
তাছাড়া চল্লিশটার উপরে পাঞ্জাবী এবার আমার উপহারস্বরুপ এসেছে। যুুগের চিন্তা ২৪’র সাথে ঈদ আড্ডায় ঈদের কেনাকাটা নিয়ে কথা বলেিছলন রংধনু গ্রুপ ও কায়েতপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম রফিক। ঈদুল ফিতর কোথায় পালন করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন,ঈদ সাধারণত আমাদের এলাকাতেই করি। কখনও আমার এলাকার বাইরে করি নি। তাই এবারের ঈদটাও আমরা এলাকাতেই পরিবার পরিজন নিয়ে কাটবে। ছোটবেলার ঈদের আনন্দের স্মৃতি নিয়ে রফিকুল ইসলাম রফিক জানান, ‘যখন ছোট ছিলাম রোজগার করতে পারতাম না। তখন বাবা,দাদাই আমাদের কেনাকাটা করে দিতেন। আমরা পাঁচ ভাই বোন ছিলাম। আর বাবার একার রোজগার করে সবদিক সামলিয়ে উঠতে সমস্যা তো। তখন দাদা আমাদের দেখতেন। আমরা ঈদের কেনাকাটা করতে প্রায়ই সময়ই ঢাকা গুলশান চলে আসতাম। যখন জামা কাপড় কিনে আনতাম কখন কাউকে দেখাতাম না যদি ওরা আমার মত জামা নিয়ে আসে! ’ তিনি জানান, ছোটবেলায় ঈদের চাঁদ দেখার মুহুর্তগুলো ছিলো খুব আনন্দের। স্মৃতিগুলো আজও চোখের সামনে ভাসে। আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন আমার দাদার বাড়িতে একটা উঁচু আঙ্গিনা সেখান থেকে আমরা ঈদের চাঁদ দেখতাম। আর সাথে সাথে ঐ দেখা যায় চাঁদ বলে চেঁচিয়ে উঠতাম। খুব সুন্দর ছিলো সেই মূহুর্তগুলো। কিন্তু এখন আর সেই আনন্দটা নেই। আগে এক জোড়া জুতায় যে আনন্দটা হত এখন তা হয় না। আগের ঈদ উদযাপনের সাথে এখনকার ঈদ উদযাপন অনেক পরিবর্তন এসছে। একটা কথা কী! অভাব না থাকলে আনন্দটা ঠিকভাবে উপলব্ধি করা যায় না। একমাত্র অভাব আর কষ্টের মধ্যেই আনন্দটা উপভোগ করা যায়। ছোটবেলায় ঈদের সালামী বা ঈদীর স্মৃতিচারণ করে রফিকুল ইসলাম জানান,তখন ঈদের সকালটা শুরু হলেই সুন্দর করে নতুন পোশাক পড়ে বসে থাকতাম। কেউ আসলে সালাম করতাম। বাবা-মা, বলে দিত কেউ আসলে সালাম দিয়ে যাতে সুন্দরভাবে কথা বলি। তো আমরা ও আশায় থাকতাম। আমাদেও চিন্তা ছিল সালাম করলে কিছু না কিছু তো দিবে। তা পাঁচ টাকা হোক আর দশ টাকা। দশ টাকা দিলে তো আর কথাই নেই। ঈদে প্রথম সালামী বা ঈদী পাওয়ার অনুভূতি প্রসঙ্গে রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, প্রথম সালামীর পরিমাণটা ছিল ১০ টাকা। তখন আমি ছোট বয়স ৫ কিংবা ৬ বছর হবে। ঈদে আমাদের বাসায় মেহমান আসছে। তো সবাইকে আমরা সালাম দিলাম এখন সালামি নিব। ওনারা সবাইকে সালামী দিচ্ছে। তো সবাই সালামী দেয়ার সময় নাম জিজ্ঞাস করছিলো। এখনতো আমরা পালা বড় আব্বু ( বড় জ্যাঠা) ,আব্বা আম্মার তো আগেই শিখিয়ে দেয়া যে কোনো মেহমান আসলে ভালো ভাবে কথা বলবা। তাই যখন আমি আমার নাম বলি মোসা: রফিকুল ইসলাম। এটা বলার পর তখন সবাই হেসে উঠে। তারপর ওনারা খুশি হয়ে আমাকে ১০ টাকা সালামী দেয়। ওটাই আমার জীবনের প্রথম সালামী পাওয়া। ঈদে আমার একটা মজার ঘটনার স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, একবার আমরা সব বন্ধুরা মিলে ঈদেও সিনেমা দেখতে গিয়েছিলাম শীতলক্ষ্মা নদী পার হয়ে ওপারে। তো প্রচুর ভীড় থাকায় আমরা একদম শেষ শিফটে সিনেমা দেখতে ঢুকতে হয়। সিনেমা শেষ হয়েছে অনেক রাত্রে। তো আমরা বাড়ি ফিরবো কিন্তু কোনো নৌকা বা কিছুই নেই নদীতে। কী করব কী করব কোনো উপায়ন্তু না দেখে আমরা সব বন্ধুরা সাঁতরে নদী পাড়ি দিলাম। আর বাসায় গিয়ে যে কত বকা খেতে হয়েছে তার কোনো সিমা নেই। এমনকি আমরা মনে আছে আমাকে দু’দিন কোনো খাবার খেতে দেওয়া হয়নি। ঈদের দিনের ব্যস্ততা নিয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, ঈদেও ব্যস্ততা বলতে সকাল বেলা নামাজ তারপর সময়সুযোগ হলে অন্যান্য বন্ধুদের বাড়িতেও যাব। তবে মুলত ঈদ সময়টা পরিবারের সাথেই কাটবে। ঈদের দিনে পছন্দের খাবার নিয়ে তিনি বলেন, ঈদের ভুনা খিচুড়ী আর গরুর মাংসটা খুব পছন্দ করি। কিন্তু বিভিন্ন ধরনের তৈরী সেমাইটা খেতে আমার খুব ভালো লাগে। তারপর পছন্দের তালিকা রয়েছে চালের গুড়ার পায়েস,হাতে বানানো সেমাইটাও আমার খুব পছন্দের। এখনতো সব মেশিনের বানানো সেমাই হয়ে গেছে। ঈদে পরিবার পরিজন নিয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে রফিকুল ইসলাম বলেন, আসলে পরিবার পরিজন নিয়ে এবার কোনো পরিকল্পনা নেই কারণ। ঈদের পরের দিনই আমাকে সিঙ্গাপুর যেতে হবে চিকিৎসার জন্য। রাজনৈতিক বন্ধুদের সাথে ঈদ ভাগাভাগি প্রসঙ্গে তিনি জানান, আসলে গত ১০ দিন যাবৎ বন্ধুদের নিয়েই আছি। কুশল বিনিময় হচ্ছে। আড্ডা দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া ঈদের দিনেও আমি প্রায় ত্রিশ হাজার মানুষের আয়োজন করেছি। ঈদ আড্ডায় তার রফিকুল ইসলামের সাথে বিশ্বকাপ ফুটবল তো সমর্থন নিয়ে কথা হয় । তিনি জানান, আসলে যে দল ভালো খেলে ঐ দলই সার্পোট করি। কিন্তু নির্দিষ্ট দলের কথা যদি বলি আমি আর্জেনন্টিনাকেই সমর্থন করি। পরিবার ছাড়া ঈদ উদযাপন নিয়ে তিনি বলেন,কখনও পরিবার ছাড়া ঈদ উদযাপন করা হয় নি তবে হজে যাওয়ার পর একবার শুধু পরিবার ছাড়া ঈদ উদযাপন করেছিলাম। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রফিকুল ঈসলাম রফিক তাঁর পরিবার,.আত্মীয় -স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, নেতাকর্মী, শুভাকাঙ্খীসহ সবাইকে ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।