H2o নিয়ে আমরা হাসি, দিন শেষে আমাদের নিয়ে হাসে তারা!
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ১২:৩৮ পিএম, ৮ অক্টোবর ২০১৮ সোমবার
পাঠকের চিন্তা (যুগের চিন্তা ২৪) : কয়েক দিন আগে শেষ হয়েছে মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ নামে সুন্দরী প্রতিযোগিতা। যা অন্তর শোবিজের ব্যানারে হয়েছিল। বলে রাখা ভালো, প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান জনাব স্বপন চৌধুরী একজন কর্পোরেট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। বড় বড় শো গুলো এ দেশে অন্তর শোবিজ করে। কিন্তুু সুন্দরী প্রতিযোগিতা নিয়ে সুন্দরের পাশাপাশি বিতর্ক কম নয়। যা রীতিমত চোখে পড়বার মতো। ইভেন্ট শুধু বাংলাদেশের জন্য না, এর প্লাটফর্ম অনেক বড় মানে আন্তর্জাতিক।
বিভিন্ন দেশের প্রতিযোগী তাদের নিজের দেশ ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরবে, সুতরাং মেধা একটা বড় বিষয়। মেধা যে আয়োজক গোষ্ঠির খুব আছে তাও বলা যায় না, তাহলে অত গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফর্মে এত হাস্যকর কিছু হত না।
যাক এবার আসি H2o নিয়ে-বিচারক খালেদ হোসাইন সুজন, যদিও আপনি গুগলে খুজেও পাবেন না উনি কে?
বরং চলে আসবে খালেদ মাহমুদ সুজন (ক্রিকেটার) তারপর ও কিন্তু উনি বিচারকের আসনে। এটা অদ্ভুত লাগতেই পারে আপনার কিন্তু কিছু করার নাই। এই মেয়ে গুলো কে নিয়া হাসাহাসি না করে যারা তাদের তৈরি করতে পারে নাই তাদের নিয়ে এক মিনিট হেসে নিবেন দয়া করে। ১০ জন কে উনারা হাজার হাজার থেকে বাঁছাই করে নাকি নিয়েছে , কিন্তু কি দেখে..? তাহলে ভুল কার ? আমি ইউটিউবে এই বিচারক সুজনের একটা সাক্ষাৎকার দেখি মাছরাঙা টিভিতে, যেখেনে উনি বার বার different কে define বলছেন। উনি জানেন না define মানে ব্যাখা করা আর different মানে পৃথক। উনি মডেল, ৯৭/৯৮ থেকে নাকি কাজ করেন, বিশ্বাস করেন চিনতাম না।
প্রথম দেখলাম, আমরা নোবেলকে চিনি মডেল হিসাবে। উনি তো অনেক আগে কাজ করেছেন তাতে কি?
এইটা গেলো উনাদের বিষয়, এবার আসেন আমরা এবং আপনারা কত বিষয়ে দায়ী, খুচরো মজা করতে গিয়ে দেশটাকে কত বার অপমান করি। একটা শব্দ নেট দুনিয়ায় খুবই পরিচিত ভাইরাল। যা ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার জন্য সস্তায় পরিচিত হওয়ার একমাত্র রাস্তা। এর জন্য যতটা বেহায়া হওয়া উচিত তা হবে লাগলে বিবস্ত্র হয়ে ইউটিউবে ভিউ বাড়িয়ে টাকা কামাবে, আবার নিজেই বলবে আমি সেলেব্রেটি। এটা যুগের সেরা নষ্টামি।
ওদের কোন দোষ নাই, দোষ তো আমাদের যারা ওদের সাবস্ক্রাইব করি, শেয়ার করি লাইক কমেন্ট দিয়ে পাশে
থাকি। আমাদের দেওয়া সাপোর্টই তো তাদের শক্তি।
গত কদিন আমরা খুব মজা করলাম H2o নিয়ে, মানে ভাইরাল করলাম। আমরা কিছু পারি আর না পারি ভাইরালটা করতে পারি জমিয়ে, বিনা পয়সায় অন্যকে হিট করবার মত এত মহানুভবতা এ দেশে দৃষ্টান্ত। যেমন টা হিরো আলমকে করেছিলাম, তখন প্রতিবেশী দেশ ভারত নিউজ করেছিলো বাংলাদেশর হিরো। তারা এটা জানতো কিন্তু মজা করে না, খুব গুরুত্ব দিয়ে নিউজ করে, কেন জানেন?
বাংলাদেশীদের অপমান করবে বলে। তো সেই বাংলাদেশী তো আমরাই যারা আলমকে হিট করালাম। দোষ তো আলমের না বা ইন্ডিয়ান কাগজের না। দোষ আমাদের!
আমরা H2o নিয়ে মিউজিক্যালি বা টিক টক করে ফেলছি কয়েক লাখের মতো। তার মানে ভাইরাল, এবার কলকাতার
পত্রিকাতে ছাপা হলো, যদিও হেডিং ভুল, H2o নিয়ে প্রতিবেদন লিখতে গিয়ে H2o মানে H২০ লিখে ফেলছে, তারপর ও আমাদের সমালোচনা করে গেছে। আর মন্তব্য কারীদের মন্তব্য গুলো দেখে নিবেন। সবাই খারাপ তা নয়।
কেউ ভালো মন্তব্য করেছেন। দুঃখ হয় এই ভেবে যে দুই দেশ একই ভাষা, শিল্প সংস্কৃতি কত মিল। তাও এমন উগ্রতা কেন? হোক সে আমার দেশের বা পশ্চিম বঙ্গের কেউ।
এমন অসম্মান কাম্য নয়। মন্তব্যকারী ভুল করতে পারে, তবে সংবাদ মাধ্যম তাদের পেশাদারিত্ব ভুলে গেলে, বাজারে নাপিতের কাজ করলেই পারে। এটা অনেক সম্মানের। এরা এশিয়া কাপের পরেও বিতর্কিত হেডিং দিয়ে নিউজ করে। যাতে দুই দেশের ক্রিকেট প্রেমীরা নোংরামি শুরু করে। অনেক শিল্পি, কবি, সাহিত্যে আছে কলকাতার যাদের আমরা সম্মান করি, তারাও আমাদের দেশের শিল্পীদের সম্মান করে, জেমস ভাই তার বড় দৃষ্টান্ত আমরা কৃতজ্ঞ তার জন্য।
সর্বশেষে বলি কেন বললাম আমাদের নিয়ে হাসে, কারন আমাদের ট্রল করবার রাস্তা আমরা দেখাই। আমরা যদি এসব বিষয় এড়িয়ে যেতাম তাহলে এমন হতো না। আমরা এখন কিছু বুঝে বা না বুঝে শেয়ার করি, সহজে গুজব ছড়িয়ে দেয়, যে বিষয় সম্পূর্ণ আমরাও জানি না। আমাদের নির্ভরযোগ্য কোন সংবাদের আগেই আমরা শুরু করি কথা বলা, যাতে নেটে জানান দেই আমাদের অস্তিত্বের। কোন একটা বিষয় সবটা না জেনে শুরু হয় সমালোচনা।
একটা উদাহরণ দিয়ে শেষ করবো- কিছু দিন আগে পশ্চিম বঙ্গের হিরো দেব একটা ভিডিও ছাড়েন, যে উনি একজনকে মারছেন, পরে সমালোচনা পড়ে যাই, কিন্তু আগে -পরে কেউ কিছু জানতো না, পরে দেব নিজে সেই সম্পূর্ণ ভিডিও দেয়, যা ছিলো পরিকল্পিত, একটা ভিডিও। উদ্দেশ্য ছিলো সচেতন করা যাতে মানুষ কিছু বিচার করার আগে পুরো টা জেনে নেন। ভালো লাগালো প্রংসার দাবিদার। তাই আমাদের দেশের স্টারদেরকে বলবো এমন কিছু করেন। ইউটিউবে নষ্টামি করে, দেশের কিছু হবে না, নিজের দেশের একটা বিষয় নিয়ে সমালোচনা করলে, পাশের দেশের মানুষ আপনাকে নিয়েই হাসবে। এটাই বাস্তবতা, তাই এসব এড়িয়ে চলুন। না হয় অন্য দেশে হাসির বিষয় বস্তু বাংলাদেশী বা বাঙ্গালীরা হবে। আর দিন শেষে আপনি ও বাঙালি।
আলী মেজাম্মেল
০১৭৬০৯৩৮৫৬৬