সিদ্ধিরগঞ্জে ছেলে ধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ১ : আহত ১
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ১২:০২ পিএম, ২০ জুলাই ২০১৯ শনিবার
মোঃ আল আমিন (যুগের চিন্তা ২৪) : সিদ্ধিরগঞ্জে ছেলে ধরা সন্দেহে পৃথক দু’টি ঘটনায় গণপিটুনিতে যুবক সিরাজ (৩৪) নামে এক যুবক নিহত ও শারমিন (২০) নামে এক নারী গুরুতর আহত হয়েছেন। শনিবার (২০জুলাই) সকালে ঘটনা দু’টি ঘটে মিজমিজি আল আমিন নগর ও পাইনাদী নতুন মহল্লা এলাকায়।
খবর পেয়ে পুলিশ অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। অপর দিকে পাইনাদী নতুন মহল্লা এলাকায় ওই নারীকে উদ্ধার করতে উত্তেজিত গেলে জনতা পুলিশ আধা ঘন্টাব্যাপী ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং পুলিশের গাড়িতে ইট পাটকেল মারতে থাকে।
পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনে ওই নারীকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এদিকে পুলিশ নিহত সিরাজের লাশ অজ্ঞাত হিসেব উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। পরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নারায়ণগঞ্জ জোনের পরিদর্শক (প্রশাসন) জহিরুল ইসলাম জহির শনিবার সকালে ঘটনার পরেই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে।
পিবিআইয়ের নারায়ণগঞ্জ জোনের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ও সফটওয়্যার বিশেষজ্ঞ এস আই সাখাওয়াত সুলতান ও টিপু সুলতানের নেতৃত্বে নিহতের ফিঙ্গার প্রিন্টসহ অনুসঙ্গ পরীক্ষা করে নিহতের পরিচয় নিশ্চিত করেন।
নিহত সিরাজ সিদ্ধিরগঞ্জের ৫নং ওয়ার্ড এলাকার আবদুর রশিদ মন্ডলের ছেলে ও আহত শারমিন পটুয়াখালী জেলার মরিচ বুনিয়া এলাকার সালমান শাহের স্ত্রী।
শারমিন বর্তমানের কেরানিগঞ্জের ঝিলমিল হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় ভাড়া বাসায় স্বামী স্বজনদের নিয়ে বসবাস করেন। আহত শারমিনের পরিবারের দাবি সে মানষিক ভারসাম্যহীন। মাঝে মাঝে বাসা থেকে বের হয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকাল ৮টার দিকে মিজমিজি আল আমিন নগর এলাকার রাজমিস্ত্রি সোহেলের মেয়ে সাদিয়া (৭) স্কুলে যাওয়ার পথে নিহত সিরাজ তার হাতে ধরে তার সাথে হেটে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজনের সন্দেহবশত জিজ্ঞাসাবাদ করে। এসময় সে অসংলগ্ন কথাবার্তা বললে স্থানীয় জনতা উত্তেজিত হয়ে পড়ে।
এক পর্যায়ে তাকে গণপিটুনি দিলে সে মাটিতে লুটিয়ে পরে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে উদ্ধার করে। পরে তাকে নারায়ণগঞ্জ ৩’শ শয্যা হাসপাতালে পাঠালে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
অপরদিকে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পাইনাদী নতুন মহল্লার শাপলা চত্ত্বর এলাকায় ইটালী প্রবাসী বিল্লালের বাড়ীর চার তলায় খাদিজার ফ্লাটে শারমিন নামে ওই নারী প্রবেশ করে তার নাতী নাদিমকে (৩) পুতুল দেয়। এতে পরিবারের লোকজনের সন্দেহ হলে বাড়ীওয়ালাকে খবর দেয়। এ ঘটনায় ঐ বাড়ীর সামনে জড়ো হয়ে পরে।
একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা তাকে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়ে গণপিটুনি দিয়ে পিএম এর মোড়ে আল বালাগ স্কুলে আটকে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ঐ নারীকে উদ্ধার করতে গেলে উত্তেজিত জনতার সাথে আধা ঘন্টাব্যাপী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে এবং জনতা পুলিশের গাড়িতে ইট পাটকেল মারতে থাকে।
পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে ঐ নারীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নারায়ণগঞ্জ ৩’শ শয্যা হাসপাতালে পাঠায়।
এ ব্যাপারে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর শাহীন শাহ পারভেজ জানায়, নিহতের লাশ উদ্ধার করে মর্গে এবং আহত নারীকে খানপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতের নাম পরিচয় সনাক্তের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা পক্রিয়াধীন রয়েছে।