বাবুরাইল-বাংলাবাজার সড়কে চলতে পারবেনা মানুষ
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ১২:০৫ পিএম, ৪ মার্চ ২০২০ বুধবার
বিশেষ প্রতিনিধি : বাবুরাইল লেক প্রকল্পের কাজ চলছে কয়েক বছর ধরে। এই প্রকল্পের আওতায় চলছে বাবুরাইল-বাংলাবাজার ‘বোট খাল’ সংস্কার কাজ। ঐতিহ্যবাহি বোট খালটি হারানো যৌবন ফিরে পাবে-এই আশায় এলাকাবাসী নিরবে সইছেন উন্নয়ন যজ্ঞের শত দুর্ভোগ।
১নং বাবুরাইল শেষমাথা, পূর্ব আমবাগান, ইব্রাহিম ব্রীজ, বাংলাবাজার ও দেওয়ানবাড়ি এলাকাবাসীর সাথে আলাপকালে তারা জানান, বোট খাল উন্নয়ন কাজের শুরুতেই ধ্বসে পড়ে বাবুরাইল-বাংলাবাজার সড়কটি।
১নং বাবুরাইল মসজিদের সামনে থেকে বৌবাজার পর্যন্ত রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সে পথে কোন মতে চলাচল করা যায়। কিন্তু বৌবাজার পুল থেকে ১নং বাবুরাইলের শেষমাথা (বটতলা) হয়ে বাংলাবাজার দেওভোগ হাজী উজির আলী উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত সড়কটি বিধ্বস্ত প্রায়।
বাবুরাইল শেষমাথা বটতলা থেকে পূর্ব আমবাগান হয়ে বাংলাবাজার পর্যন্ত অর্ধ কিলোমিটার রাস্তা খালের দিকে কোথাও দুই ফুট বা কোথাও তিন ফুট পর্যন্ত দেবে গেছে। জিমখানা থেকে আগে এই সড়কে কাশীপুর দেওয়ানবাড়ি পর্যন্ত ইজিবাইক চলাচল করতো। এখন মানুষই চলতে পারেনা।
রাস্তা একদিকে দেবে যাওয়ায় শিশু ও বয়স্ক লোকজন এ পথে চলাচল করতে গেলে দুর্ঘটনায় পড়েন। গত দুই বছরে রিক্সায় চড়ে আসার সময় কমপক্ষে দু’ব্যক্তির পা ও কোমর ভেঙ্গে গেছে বলে জানাগেছে।
বর্তমানে কাশীপুর দেওয়ানবাড়ি থেকে বাবুরাইল ও জিমখানা পর্যন্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন। কোন যানবাহন এ সড়কে চলতে পারেনা। ওই সকল এলাকার মানুষ চলাচল করে ঘুরতি পথে।
কাশীপুর ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা জানান, আজকে দু/তিন বছর ধরে আমাদের শহরে চলাচলের প্রধান সড়কটি বিধ্বস্ত। বাবুরাইলের শেষমাথা থেকে দেওয়ানবাড়ি পর্যন্ত এই সড়কের নামকরণ করা শহীদ খোকন বিশ্বাস সড়ক।
আমাদের চলাচল করতে হয় পশ্চিম দেওভোগ মাদ্রাসার শেষ মাথা হয়ে। অথবা কাশীপুর কলেজ রোড দিয়ে। বাংলাবাজার সড়ক দিয়ে বাবুরাইল শেষমাথা পর্যন্ত চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এ পথে শুধুমাত্র রাস্তার পাশের বাড়ির লোকজন চলাচল করেন।
তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। কেননা, রাস্তার মূল স্ট্রাকচার নষ্ট হয়ে গেছে। আরসিসি ঢালাই ভেঙ্গে চূড়ে গেছে। কোন অংশ তিন ফুট দেবে খালের দিকে কাত হয়ে আছে। কোথাও ইট সুরকি উঠে মাটি বেরিয়ে এসেছে।
পুরো শুকনো মৌসুমে ধূলোবালিতে মানুষের কষ্টের সীমা ছিলনা। আসছে ঝড় বৃষ্টির দিন। প্যাঁক-কাঁদা ও পানি জমে এ রাস্তা হেঁটে চলারও অনুপযোগী হয়ে পড়বে।
এ ব্যাপারে আলাপকালে বাংলাবাজার এলাকার লোকজন বলেন, আমরা মেয়র ডাঃ আইভীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি আমাদের ঐতিহ্যবাহী ‘বোটখাল’ পূণরুদ্ধার করছেন। কিন্তু সত্যিই আমাদের কিছু দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এখানে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অসংখ্য ছাত্রছাত্রী।
সকালে ছোট ছোট শিশুরা স্কুলে যায়। বাঁশের চওড়া সাঁকো দিয়ে খাল পর হয়। ভয় লাগে। নিচে পড়ে গেলে আঘাত পাবে। সামনে ঝড় বৃষ্টির দিন আসছে। খানা-খন্দকে ভরা সড়কে চলাচল করা দায় হবে।
এ ব্যাপারে আলাপকালে নাসিক এর প্যানেল মেয়র-১ আফসানা আফরোজ বিভা বলেন, আমাদের কাজের গতি বেশ ভাল। উন্নয়নের ফলতো এলাকাবাসীই ভোগ করবে। তবুও আমরা চাইনা মানুষ দুর্ভোগে পড়ুক। আশা করা যায় চলতি বছরেই এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
খালের দু’পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে একটু সময় লেগেছে। অনেকের বাড়ি ঘর অনেকের দোকান পাট ছিল। সে সব সরাতে সময়টা বেশি গেছে।