সরকারি ত্রাণ কার্ডের জন্য অর্থ নিচ্ছেন ইউপি সদস্য ও আ’লীগ নেতা!
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৪:৫৭ পিএম, ২৭ মার্চ ২০২০ শুক্রবার
রূপগঞ্জ (যুগের চিন্তা ২৪) : রূপগঞ্জে মহামারী করোনায় সরকারি ত্রাণ সহায়তার জন্য নাম অর্ন্তভুক্ত করতে চনপাড়া পূর্নবাসন কেন্দ্রের (চনপাড়া বস্তি) অধিবাসীদের কাজ থেকে ইউপি সদস্য বজলুর রহমান বজলুর বিরুদ্ধে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
সে তার নিজস্ব প্রতিনিধি দ্বারা উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া পূর্নবাসন কেন্দ্রের প্রত্যেক ভোটারের কাছ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি সংগ্রহ ও সাথে ১’শ টাকা করে আদায় করছেন। সেই বস্তিতে প্রায় ২০ হাজার ভোটার ও ৬০ হাজার অধিবাসী রয়েছেন।
এলাকাবাসী জানান, উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া পূর্নবাসন কেন্দ্রের (চনপাড়া বস্তি) কর্মজীবি অসহায় মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাদ্য সামগ্রী প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এ সংক্রান্তে কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব রিয়াজ রহমানের কাছে নির্দেশ আসে ইউনিয়নের দুঃস্থ অসহায় মানুষের তালিকা প্রস্তত করতে। সে প্রেক্ষিতে চনপাড়া পূর্নবাসন কেন্দ্রের আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক, ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বজলুর রহমান বজলু মেম্বার ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পারভীন আক্তারকে দায়িত¦ দেয়া হয় তালিকা প্রস্তত করতে।
গত দুদিন বজলু মেম্বার তার নিজস্ব প্রতিনিধি বস্তির বস্তির ১ নং ওয়ার্ডের লোকমান ভান্ডারী, কহিনুর ওরফে গেদি, ২ নং ওয়ার্ডের সালাম, জামাল, নাসির, লেদু, ৩ নং ওয়ার্ডের জাহাঙ্গীর, তাসলী, ৪ নং ওয়ার্ডের লিটন, খোকন, ৫ নং ওয়ার্ডের কালাম, ইব্রাহিম ৬ নং ওয়ার্ডে সে নিজে তার স্ত্রী ও ভাই বোতল মিজু , হাসান, ৭ নং ওয়ার্ডের মফিজ, বাদশা, রশিদ, ৮ নং ওয়ার্ডের হাকিম, মোখলেস ও ৯ নং ওয়ার্ডের রফিক মাষ্টার ও আলমের মাধ্যেমে বস্তিত কয়েক হাজার লোকদের কাছ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি সংগ্রহ ও জনপ্রতি ১’শ টাকা করে আদায় করান।
এতে ত্রাণ হাতে পাবার পূর্বেই অভাবী মানুষের কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বজলু মেম্বার। এখন পর্যন্ত আইডি কার্ডের নামের তালিকা জমা না দিলেও এর মাঝে শুধু টাকা রেখে অনেক আইডি কার্ডের কপি ফেলে দেয়াও হয়েছে।
১০০ টাকাসহ আইডি কার্ডের কপি দেয়া বস্তির সুলতানা, হাজেরা, মরিয়ম, আছমা, কালাম সওদাগর,ছেতু, বাচ্চু মিয়া, কালা মিয়া, আনোয়ারা, ফাতেমা, সোনা মিয়া, মহিউদ্দিন, কুলসুম, পান্না, বিলকিস, মনোয়ারা, শাহিদা, শাহিনুর, এনায়েত, বরকতসহ আরো অনেকে জানান, তারা বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ। দিন এনে দিন খাওয়া এসব মানুষ একটু ত্রাণের আশায় মেম্বারের হাতে ১‘শ টাকা করে দিয়েছেন।
ত্রাণ কার্ডের জন্য টাকা লাগে না শুনে ৪ নং ওয়ার্ডের কহিনুর বলেন, বস্তিতে টাকা ছাড়া মেম্বার কোন কাজ করেন না। অবৈধ গ্যাস আর পানি ব্যবহারের জন্যও মাসিক হারে টাকা দিতে হয় বজলুকে। কেউ মুখ খুলতেই তার প্লটটি দখলে নিয়ে নেয় মেম্বারের পালিত সন্ত্রাসীরা।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য বজলুর সাথে তার সেলফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, যারা টাকা নিয়েছে আমার বদনাম করার জন্য করেছে। আমি এই ঘটনার সাথে জড়িত নই। আমি জ¦র নিয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি।
কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ রফিকুল ইসলাম বলেন, এটা অবশ্যই অন্যায় আর বড় ধরনের অপরাধ। এ ব্যাপারে আমরা অন্য প্রতিনিধির দ্বারা পূনঃতালিকা করে রিলিফ বিতরনের ব্যবস্থা করবো। এবং গরীব মানুষ যেনো টাকা ফেরত পায় সে ব্যবস্থাও নেয়া হবে।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম বলেন, এ ঘটনা আমি শুনেছি। এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে উক্ত জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।