উল্টে গেল ট্যাংকার
অক্টোমোড়ে রাস্তায় বিরাট গর্ত
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৬:৩২ পিএম, ৪ মে ২০২০ সোমবার
যুগের চিন্তা রিপোর্ট : ঘড়ির কাটায় সময় দুপুর সোয়া ১টা। ফতুল্লার পঞ্চবটি ডিপো থেকে ছেড়ে আসা একটি তেলবাহি ট্যাংকার শহরে ঢুকছিল। মাসদাইর কবরস্থান মোড় ছেড়ে অক্টো অফিস মোড়ে এসেই বিপত্তি বাধলো। এই পয়েন্টে রাস্তার মাঝখানে বিশাল গর্ত।
বৃষ্টির পানি জমেছিল। চালক বুঝতে পারেননি রাস্তার হাল। গর্তের দিকে এগুতেই ডান দিকে কাত হয়ে যায় ট্যাংকলরি। ব্যস অনেক চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। ট্যাংকলরিটি গর্তেই পড়ে থাকে। রাস্তার মাঝ বরাবর ট্যাংকলরি আটকে পড়ায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কের এই অংশে (অক্টো অফিস মোড়) কিছুক্ষণ যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে।
নারায়ণগঞ্জে করোনায় জনজীবন থমকে গেলেও চলছে বেশ কিছু রপ্তানীমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান। নারায়ণগঞ্জে চলছে লক ডাউন। তবে সড়কে থেমে নেই পন্য পরিবহন ও গুরুত্বপূর্ন যানবাহন চলাচল। ফতুল্লার অক্টোয় অফিস সংলগ্ন ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সড়কে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় বেশ কয়েকটি গর্তের। সামান্য বৃষ্টিতে গর্তগুলোর আকার আরো বড় হয়ে গেছে।
এতে করে প্রতিদিন ঐ সমস্ত গর্তে পড়ে যানবাহন আটকা পড়ছে। ঘটছে ছোটখাটো দূর্ঘটনাও। পন্যবাহী গাড়িগুলোকে দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা করতে পাশেই জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে দাঁড় করিয়ে রাখা থাকে রেকার। রেকারের মাধ্যমে গর্তে পড়া গাড়িগুলোকে টেনে তোলা হয়। তবে সড়কে গর্তগুলো মেরামতে তেমন কোন কার্যকরী ভুমিকা নেই কারো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই লরি চালক বলেন, চাষাড়া রেললাইনের ওখানে এরপর তোলারাম কলেজ মোড়ের পর থেকে জামতলা পর্যন্ত সড়কের অবস্থা ভাল নয়। রাস্তা এবড়ো থেবড়ো। ছোট ছোট গর্ত। সড়ক সমতল নয়। কোথাও মাঝখানে উঁচু, কোথায় দুই পাশ উঁচু। বৃষ্টি হলেই পানি জমে থাকে। একসময় কার্পেটিং উঠে যায়।
সুরকী উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয় গর্ত। পন্য পরিবহনের সময় গাড়ি যখন লোড থাকে তখন মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে অক্টোয় অফিসের বেশ কিছু জায়গা পাড় হতে হয়। একটু এদিক সেদিক হলে ভয়াবহ দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। ছোট ছোট যানবাহন দূর্ঘটনায় কবলিত হয় প্রায় সময়।
এই লরি সরাতে আসা একজন পুলিশ অফিসার জানালেন, সড়কটির বেহাল দশার কথা বার বার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কোন ফল হয়নি। অক্টো অফিস মোড়ে এখন প্রায়শ দূর্ঘটনা ঘটে। লকডাউন চলছে বলে লরিটি বিকল হওয়াতে সমস্যা হয়নি।
স্বাভাবিক সময়ে হলে রাস্তায় যানজট তৈরী হত। পুলিশ অফিসারের সাথে কথা বলার সময়েই রেকার এসে গেছে। পেছন দিয়ে বেঁধে টেনে লরিটি উদ্ধার করা হয়।
গাবতলী একজন সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা কামাল জানান, ভাই দুর্ভোগের শেষ নেই। শহরে আসতে যেতে সমস্যায় পড়তে হয়। লকডাউন চলছে তাই হয়তো এই গর্তগুলো মেরামত করা হয়না। পুরাতন ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সড়কটি অন্যতম সড়ক।
এই সড়ক ধরেই এখন মুন্সীগঞ্জের মালবাহী যানবাহন চলাচল করে। রাস্তার মাঝখানে যেন ডোবা তৈরী হয়েছে।
সূত্রমতে, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের পুরাতন সড়কটিতে যানবাহন চলাচলে গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা রয়েছে। দিনের পর দিন এই সড়কটি রয়েছে অযত্ন আর অবহেলায়। গেল বছর বর্ষা মৌসুমেও এই সড়কটির বিভিন্ন যায়গায় ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছিল।
এতে সড়কটিতে প্রায় সময় যানজট লেগেই থাকতো। এক পর্যায়ে সড়ক ও জনপদ থেকে কোন রকমে গা ছাড়াভাবে গর্তগুলো মেরামত করা হয়। এ বছর বর্ষার আগেই অক্টোয় অফিস সংলগ্ন সড়কে সৃষ্টি হয় গর্ত। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে গর্তগুলো আরো বড় আকার ধারণ করে।
বিশাল গর্তে পড়ে প্রতিদিনই পন্য পরিবহনের গাড়িগুলো আটকে যায়। গাড়িগুলোকে গর্ত থেকে টেনে তুলতে দিনের বেলা গর্তের কাছাকাছি একটি রেকার জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে দাড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
গর্তে পড়ে যাওয়া গাড়িগুলোকে রেকারের মাধ্যমে টেনে তোলা হয়। গতকাল দুপুরে একটি তেলবাহী ট্যাংকলড়ী গর্তে পড়ে আটকে গেলে পরে তা রেকার দিয়ে টেনে তোলা হয়। তবে সড়ক ও জনপদের পক্ষ থেকে সড়কটি মেরামতের জন্য তেমন কোন উদ্যোগ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।