সাহিত্যে নারায়ণগঞ্জ এখনও প্রাণবন্ত (ভিডিও)
লতিফ রানা
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৫:৩১ পিএম, ২০ অক্টোবর ২০২০ মঙ্গলবার
স্বাধীনতার পূর্ব ও পরে নারায়ণগঞ্জের সাহিত্যে’র যেমন ভূমিকা ছিল এখনও তেমনি প্রাণবন্ত আছে। এখনো বিভিন্ন সাহিত্য সংগঠনের কার্যক্রমের পাশাপাশি প্রচার মাধ্যম ফেসবুকেও এর প্রচারের ব্যপকতা আছে বলে মনে করেন সাহিত্যিক ও সাংবাদিক শরীফউদ্দিন সবুজ এবং কবি ও সংস্কৃতি কর্মী আহমেদ বাবলু।
সোমবার (১৯ অক্টোবর) যুগের চিন্তা আয়োজিত ফেসবুক লাইভ টকশো ‘সাহিত্য আড্ডা’য় এধরণের অভিমত ব্যক্ত করেন এই দুই অতিথি।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিদ্যালয় ইংলিশ সেকশনের (রিয়াদ সৌদি আরব) সাবেক অধ্যক্ষ, শিক্ষাবিদ ও কবি করীম রেজা।
আড্ডায় নারায়ণগঞ্জের সাহিত্যের বর্তমান অবস্থাসহ বিভিন্ন অন্যায় নির্যাতন ও অনিয়মের বিরুদ্ধে বর্তমান সাহিত্য ও সাস্কৃতিমনাদের ভূমিকা বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
এসময় আহমেদ বাবলু বলেন, আামার জেঠাতো ভাই চঞ্চল মাহমুদ কাশেম এর হাত ধরে আমি সাহিত্য জোটে আসি। আমার বোন মনি খন্দকার তখন অভিনেত্রী ছিলেন, তিনি নারায়ণগঞ্জ থিয়েটারে অভিনয় করতো। কলকাতায়ও সে অভিনয় করতো। তার অনুপ্রেরণা ছিল।
তারমতে সাংগঠনিক চর্চা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সে সময় খেলাঘর আসরে আমি অনেক তরুন লেখকদের মাঝে গিয়ে প্রথম দিনই একটি কবিতা লিখে আমার মনে কবিতা লেখার প্রতি একটি অনুপ্রেরণা পাই।
তারমতে, নব্বইয়ের দিকে বেশ কয়েকজন ছড়াকারের ছড়া তাকে আকৃষ্ট করে। কবিতার গভীরে প্রবেশ করায় আমি স্বাচ্ছন্দ বোধ করতামনা। তাই সবসময় আমি চেষ্টা করেছি ছড়া পড়তে। এসময় তিনি তার নিজের একটি লেখা পড়ে শুনান।
সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক বর্তমান সাংগঠনের বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এদের নাচ-গান ও কবিতা শুধু চর্চার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তারা দেশের বিভিন্ন অরাজকতায় অন্যায়ে তারা তাদের ভাষায় প্রতিবাদও করছে।
তিনি বলেন, লেখালেখি, সাহিত্য চর্চা বা সংস্কৃতি চর্চাকে যদি লড়াই হিসেবে দেখেন তাহলে আমরা এখনো একসঙ্গেই লড়াই করছি। নারায়ণগঞ্জে বেশ কিছু সাহিত্য সংগঠন এখনো বেশ চেষ্টা করছে।
বেশ কিছু সাহিত্য সংগঠনের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা দুর্দান্ত কাজ করছে। বর্তমান চলমান যুগের মধ্যে মানুষ সময় করে যে কাজগুলো করছে তার অবশ্যই মূল্যায়ন করতে হবে।
শরীফ উদ্দিন সবুজ বলেন, আামার পরিবারে আমার মা-বাবা দুইজনেরই লেখালেখির অভ্যাস ছিল। তাদের থেকেই আমার লেখালেখি’র জগতে প্রবেশ করা। বিজ্ঞান ধারার লেখার আগ্রহের বিষয়ে তিনি বলেন, কবি আরিফুল ভাইয়ের ভাই আসিফ বিজ্ঞান চর্চা করতেন। বিজ্ঞান নিয়ে বক্তৃতা দিতেন।
আসিফ ভাইয়ের সাথে কাজ করতে করতে বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির প্রতি আগ্রহ জমে। এসময় কয়েকজন লেখকের বিজ্ঞান ভিত্তিক লেখার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তখন থেকেই আমি এই বিষয়ে লেখা শুরু করি।
সাহিত্য চর্চার বিষয়ে তিনি বলেন নারায়ণগঞ্জ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা আমাদের দেশের সমস্ত প্রতিবাদের জায়গায় অত্যন্ত সোচ্চার। বর্তমান নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রতিবাদের আন্দোলনেও তারা সাহসী ভূমিকা রাখছে।
এটাই তারুন্যের পরিচয়, বেঁচে থাকার পরিচয়। এখানে আপনার বয়সের কোন বিষয় না। সাহিত্যে বর্তমানে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেয়ার মত জায়গায় রয়েছে।
এসময় তিনি যুগের চিন্তা’র পূর্বের একটি ‘সাহিত্য আড্ডা’র অতিথিদের সাথে দ্বিমত পোষণ করে বলেন যে, আগে নারায়ণগঞ্জে সাহিত্য চর্চা ছিল এখন নাই, এই তথ্যটি সঠিক না। যারা বলেছেন তারা বর্তমানে কি হচ্ছে তাদের ধারণার মধ্যে নেই।
বর্তমানে যারা লিখছে তারা নানা মাত্রায় লিখছে। তার মতে, নব্বই থেকে ২০২০ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে সাহিত্য চর্চার এত বেশী মাত্রা তৈরী হয়েছে যা আগে ছিলনা। প্রবীণরা যদি নবীণদের বিষয়ে খোজ খবর না রাখেন তাহলে আমাদের বলার কিছু নাই।
তারমতে, বর্তমানে সাহিত্য চর্চা অনেক সমৃদ্ধ। নারায়ণগঞ্জ নিয়ে বদনাম না করে যদি খোজ-খবর নিয়ে. সবকিছু সম্পর্কে জানলে তা আমাদের বর্তমান সাহিত্যের জন্যে সবার জন্যেই ভাল।