রফিক-উল হক শুধু আইনজীবী নয়, ছিলেন ভরসার এক নাম
লতিফ রানা
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৯:৪৪ পিএম, ২৪ অক্টোবর ২০২০ শনিবার
আজ শনিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে আটটায় ঢাকার আদ দ্বীন হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় মারা যান দেশের জৈষ্ঠ আইনজীবী, সেবক এবং সাবেক এটর্নি জেনারেল রফিক-উল হক। বিকেলে বনানী কবরস্থানে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়।
প্রায় দশদিন আগে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন সমস্যায় এই হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। এরমধ্যে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত কয়েকদিন আগে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয় তাকে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫।
জীবদ্দশার বিভিন্ন অধ্যায়ে রফিক-উল-হক শুধু একজন আইনজীবী হিসেবেই নয় মানব সেবায়ও অন্যন্য নজীর স্থাপন করেন তিনি। তবে তার অনেক গুনের মধ্যে একটি ছিল প্রচার না করা।
তিনি কখনো প্রচারমূখী ছিলেন না। বরং তার কাজের গুন এতই প্রখর ছিল যে, ইচ্ছে করলেও তাকে প্রচারের বাইরে রাখা যেতনা। তিনি বহু নির্যাতিতের পক্ষ হয়ে ক্ষমাতাবানদের বিরুদ্ধে লড়েছেন।
১৯৩৫ সালে জন্ম নেয়া রফিক-উল হক আইন পেশায় আসেন ১৯৬০ সালে। ১৯৯০ সালে তিনি এটর্নি জেনারেল নিযুক্ত হন। পেশাগত জীবনে এই আইনজীবী সামরিক সরকার এরশাদের আমলেও তার বিরুদ্ধে গিয়ে রাজনৈতিক মামলায় লড়েছেন।
এরশাদ সরকারকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল করতে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে জানা যায়। তবে তিনি আলোচনায় আসেন ২০০৭ সালের পর ফখরুদ্দিন আহমেদ ও সাবেক সেনা প্রধান মইনউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্বাবধায়ক সরকারের সময়ও কোন চাপের কাছে মাথানত না করে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার পক্ষ হয়ে আইনজীবী হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে লড়েছেন তিনি।
তিনি কখনো বার এসোসিয়েশন বা রাজনৈতিক দলের আশ্রয়ে আসার চেষ্টা করেননি।
তিনি শুধু আইন পেশায়ই সফল তা নয়। তাঁর জীবীকার বড় একটি উপার্জন তিনি বিলিয়ে দিয়েছেন মানুষের সেবায়। বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবার উন্নয়নে তিনি বিপুল পরিমান অর্থ দান করেছেন।
আদ দ্বীন হাসপাতালের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন ছাড়াও তিনি ঢাকা ও ঢাকার বাইরে আনেক হাসপাতাল এর উন্নয়নে অর্থ দান করেছেন। দেশের বিভিন্ন এলাকায় মানুষের সেবায় হাসপাতাল প্রতিষ্ঠাও করেছেন।
নির্ভীক ও স্পষ্টভাষী এই মানুষটির মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও এটর্নি জেনারেল ও সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিনসহ গণমান্য ব্যক্তিবর্গ।