নারায়ণগঞ্জে নানা আয়োজনে ‘সিনেস্কোপ শর্ট ফেস্ট-২০২০’
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ১০:৩৬ পিএম, ৩০ নভেম্বর ২০২০ সোমবার
আগামী ৪ থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ সিনেস্কোপ আয়োজন করতে যাচ্ছে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসব ‘সিনেস্কোপ শর্ট ফেস্ট-২০২০’। নগরীর আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তনের পাতাল মেঝেতে অবস্থিত সীমিত আসনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এই সিনেমা থিয়েটারে পাঁচ ক্যাটাগরির মোট ৫৪টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নিয়ে শুরু হচ্ছে এই উৎসব।
প্রতিদিন সকাল ১১টা, বেলা ৩টা, বিকাল সাড়ে ৫টা এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মোট ৪টি করে প্রদর্শণী হবে। একই ক্যাটাগরির একগুচ্ছ চলচ্চিত্র নিয়ে সাজানো হয়েছে প্রতিটি শো। উৎসব উপলক্ষ্যে সিনেস্কোপের নিয়মিত টিকেট মূল্য ১৫০টাকা থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ১০০টাকা, সেই সাথে থাকছে সিজন টিকেট।
একটি ২০০টাকার সিজন টিকেট কিনে দর্শকরা উৎসবকালীন সময়ে উপভোগ করতে পারবেন পছন্দ মতো যে কোন সংখ্যক শো। বিকেল ৫টার শো সংরক্ষিত থাকবে কেবল শিশুদের উপযোগি চলচ্চিত্রের জন্য। উৎসবের শিডিউল পাওয়া যাবে সিনেস্কোপের ফেসবুক পেইজে, এছাড়া সিনেস্কোপ প্রাঙ্গন থেকেও সংগ্রহ করা যাবে ছাপানো শিডিউল।
এখানে যেমন থাকছে পৃথিবীর গুরুস্থানীয় নির্মাতাদের চলচ্চিত্র, তেমনি থাকছে আনকোরা নবীনদের কাজ। ওয়ার্ল্ড ক্লাসিক বিভাগে আছেন সত্যজিৎ রায়, আব্বাস কিয়ারুস্তামি, মার্টিনস্করসিসে, জাফর পানাহিদের মতো বরেণ্য নির্মাতা; বাংলাদেশি পাইওনিয়ারস বিভাগে থাকবে মোরশেদুল ইসলাম, তানভীর মোকাম্মেল ও তারেক মাসুদ; কন্টেম্পোরারি বাংলাদেশ বিভাগে আমিনুর রহমান মুকুল, জাফরুল হাসান বিপুল, ইশতি কায়সার, মোহাম্মদ নূরুজ্জামান, যুবরাজ শামীম প্রমুখ নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। চিল্ড্রেন সেকশনে অ্যানিমেশন ছাড়াও শিশুদের উপযোগি পৃথিবীর বিখ্যাত সব শর্ট ফিল্মগুলো দেখানো হবে।
জানা গেছে, লকডাউনের সময় মনোবল বাড়ানো এবং সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সৃজনশীলতা অনুশীলনের জন্য সিনেস্কোপ, নারায়ণগঞ্জ তরুণদের চলচ্চিত্র তৈরিতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। সে আহবানে সাড়া দিয়ে তৈরি করা ছবিগুলো থেকে বাছাইকৃত কিছু কাজ থাকছে নবীন নির্মাতা বিভাগে।
সিনেস্কোপ শর্ট ফেস্টের আরেকটি অন্যতম আয়োজন হিসেবে থাকছে চলচ্চিত্র নির্মাণে আগ্রহীদের জন্য চিত্রনাট্যের 'প্রথম পাঠ' শীর্ষক ৫ দিন ব্যাপী কর্মশালা। কর্মশালাটি পরিচালনা করবে নলেজ শেয়ারিং ভিত্তিক ফিল্মস্কুল সিনেপীঠ।
গত বছর ২০ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত 'বাংলাদেশি চলচ্চিত্র উৎসব' দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল ফোর কে সিলভার স্ক্রিন এবং ৭.১ ডলবি ডিজিটাল সাউন্ড সমৃদ্ধ নারায়ণগঞ্জের এই অত্যাধুনিক সিনেমা হল। ব্যাপক সাড়া জাগানো সেই উৎসবে শহরের মানুষ বহুদিন পর আবার হলমুখী হতে শুরু করে। গত এক বছরে সিনেস্কোপ হয়ে উঠেছে আধুনিকমনষ্ক রুচিশীল সিনেমা প্রেমীদের মিলনমেলা।
কোভিডের কারণে বিপুল জনসমাবেশ এড়াতে কিছুটা সংক্ষিপ্ত করতে হয়েছে এ বছরের উৎসব আয়োজন। যথাযথ সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পরিচালিত হবে উৎসবের যাবতীয় কর্মকাণ্ড। কোন সিনেমা হলের নিয়মিতভাবে চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজনের নজির দেশে আর নেই।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ও চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিনেমাকারের সমন্বিত উদ্যোগ 'সিনেস্কোপ, নারায়ণগঞ্জ' নিজেদের কার্যক্রমকে ব্যবসা নয় বরং একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দায়বদ্ধতা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।