শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১   ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করতে প্রয়োজন নবীন ও প্রবীণদের সমন্বয়

লতিফ রানা

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৭:৪৫ পিএম, ৩ ডিসেম্বর ২০২০ বৃহস্পতিবার

সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করতে প্রয়োজন নবীন ও প্রবীণদের মাঝে শ্রদ্ধা ও স্নেহের সমন্বয়। তাদের পারস্পরিক সমন্বয় ব্যতীত বর্তমানে মান-সম্পন্ন সাহিত্যক টিকিয়ে রাখা এবং প্রসারিত করা সম্ভব না বলে মনে করেন কবি, সাংবাদিক, আবৃত্তিকার ও প্রাবন্ধিক দীপক ভৌমিক এবং কবি, গল্পকার ও প্রাবন্ধিক আনোয়ার হোসেন।

 

মঙ্গলবার (০১ ডিসেম্বর) যুগের চিন্তার আয়োজনে সিনিয়র সাংবাদিক ও লেখক নাফিজ আশরাফের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ফেসবুক লাইভ টক শো ‘সাহিত্য আড্ডা’য় এ ধরণের মতামত এই দুই সাহিত্যিক। এ সময় তারা গুনগত মানের সাহিত্য বিস্তারে প্রকাশকের ভূমিকাকেও খুব গুরুত্বপুর্ণ বলে উল্লেখ করেন।

 

কবি, সাংবাদিক, আবৃত্তিকার ও প্রাবন্ধিক দীপক ভৌমিক বলেন, সাহিত্যে আমার প্রথম প্রেরণা আমার বাবা। তিনি বলেন, বাবাই আমাকে প্রথমে অমর একুশের উপর একটি লেখা লিখতে বলে তখন আমি লিখে তাকে আবৃত্তি করে শোনাই। তখন আমার বাবা আমাকে একটি অনুষ্ঠানে পাঠালো। সেখানে আমি স্বরচিত কবিতা এবং আবৃত্তি দুইটা পুরস্কার জিতে নেই।

 

তিনি বলেন, আমার বাবাই আমার বড় শিক্ষক এবং সহযোগিতার কেন্দ্রবিন্দু। তিনি অনেক সংগঠনসহ অনেকের নাম উল্লেখ করে বলেন, তাদের প্রেরণা আর উৎসাহে আমি আরো গভীরভাবে লেখালেখির সাথে জড়িয়ে যাই।

 

এ সময় তিনি তার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংগঠন লেখকের সাথের অভিজ্ঞতার কথা স্মৃতিচারণ করেন।

 

তিনি বলেন, সাহিত্যের সার্বজনীন অবস্থানটা কমে গেছে, যাদের আছে তাদের আগের থেকেই ছিল। ইদানিংকালে লেখকদের মান সেভাবে বাড়েনি তবে দলগত চর্চা অনেক ক্ষেত্রেই বেড়েছে। প্রকাশনা গত কয়েক বছরে বেশ কিছু হয়েছে। বেশ কিছু কাজে দক্ষতার ছাপ মিলে।

এসময় তিনি তার লেখা আবৃত্তিসহ গান সুর করে শোনান।

 

তিনি বলেন, বর্তমান প্রজন্ম সাহিত্যে প্রচুর পরিমানে আসছে। নারায়ণগঞ্জে প্রচুর সাহিত্য চর্চা প্রচুর হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদিও গুনগতমান নিয়ে প্রশ্ন আছে। তবে ব্যক্তিগত চর্চার মাধ্যমে কেউ কেউ এগিয়ে যাচ্ছে। 

 

কবি, গল্পকার ও প্রাবন্ধিক আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি মাধ্যমিকে পড়ার সময় থেকেই সমাজে কোন অসঙ্গতি দেখলেই কেন জানি কিছু লিখতে ইচ্ছে করতো। তখন কবিতা লিখবো বলে লেখা শুরু করিনি। তবে তার লেখার প্রথম অনুপ্রেরণা হিসেবে তিনি অধ্যাপক বুলবুল চৌধুরীর নাম উল্লেখ করেন।

 

তিনি বলেন, বুলবুল চৌধুরী আমাদের স্কুলে যাতায়াত করতো এবং আমাদের স্কুলে একটি ক্লাস করাতো। সেই সূত্রে আমি কিছু লেখলেই উনাকে দেখাতাম।

 

তিনি বলেন, আগে যারা লেখালেখি করতেন তারা লিখতেন একটা সাহিত্য বোধ নিয়ে, একটি জ্ঞান নিয়ে। একটি স্বত:স্ফুর্ত উদ্যোম এবং চেষ্টা, এবং লেখায় একটা সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে লিখতো। 

 

তিনি বলেন, তখন প্রকাশনাটা এত সহজ ছিল না। তখন একটি মান সম্মত লেখা না হলে প্রকাশক তা প্রকাশ করতেন না। তিনি বলেন, এখকার অনেক প্রকাশকদের মধ্যেই আগেকার সেই দায়বদ্ধতাটা নাই। তাদের কাছে একটা পাণ্ডুলিপি আসলে একটা টাকার বিনিময়ে প্রকাশ করতে রাজি হয়ে যাচ্ছে। এরকম প্রকাশকের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে।

 

তার মতে প্রত্যেককেই তার নিজ নিজ জায়গায় থেকে দায়িত্ব নিয়ে কাজটা করা উচিৎ। তিনি বলেন, সাহিত্য হলো একটা দর্পণ। সে দর্পনগুলো যদি এমন এলোমেলো হয় ময়লাযুক্ত হয়, আমাদের দৃষ্টি ভঙ্গির উপস্থাপনটা সেভাবে না আসে এবং মান সম্মত না হয় তাহলে আমাদের নিজস্ব জাতিসত্ত্বা প্রশ্নবিদ্ধ হয়।