মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১   ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

খানপুরের সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৯:২৪ পিএম, ১৬ মার্চ ২০২১ মঙ্গলবার

খানপুরের আলোচিত সেন্ট্রাল জেনারেল হাসপাতালে বার বার ঘটছে রোগী মৃত্যুর ঘটনা। অভিযোগ রয়েছে এই হাসপাতালটিতে চিকিৎসা সেবার নামে চলছে ব্যাবসা। দক্ষ মেনেজমেন্টের অভাবে চিকিৎসা সেবায় চরম গাফলতির কারনে এই হাসপাতালটি পরিণত হয়েছে মৃত্যু ফাঁদে। আবারো অপারেশন করার পর মেনেজমেন্টের অভাবে এক প্রসুতির মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে।

 

সোমবার (১৫ মার্চ) রাতে শহরের ডন চেম্বার এলাকার ফল ব্যাবসায়ীর জিসান মিয়ার স্ত্রী প্রসুতী পান্না বেগম (৩০) এর অপারেশন করার পর মেনেজমেন্টের অভাবে তার মৃত্যু ঘটেছে বলে অভিযোগ নিহত পান্নার স্বজনদের।

 

এদিকে তড়িগড়ি করে ঘটনার রাতেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৫লক্ষ টাকায় এই ঘটনা ধামাপাচা দিয়েছে। ফলে এই আলোচিত হাসপাতালে একের পর এক রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও পার পেয়ে যাচ্ছেন তারা। এই ঘটনায় সচেতন মহল চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। 

 

সোমবার ডা. মিসকাত জাহান হেনা বিকালে চিকিৎসাধীন প্রসূতি পান্না বেগমের সিজারিয়ান অপারেশন করেন। কিন্তু ভুল মেনেজমেন্টের কারনে অপারেশনের ২ঘন্টা পরই পান্নার মৃত্যু ঘটে। পান্নার স্বজনদের অভিযোগ, রোগীর প্রেসার বাড়লেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দেখভাল করেনি। সময় মতো প্রেসার মাপা হয়নি, প্রেসার কেন ফল্ট করলো কর্তৃপক্ষ এর উত্তর দিতে পারেনি। এই ঘটনায় নিহতের স্বজনরা ঘটনার রাতে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষসহ কর্মচারীদের অবরোধ করে রাখে। বিক্ষুব্ধ লোকজন ডাক্তারসহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের শাস্তি দাবী করে। 

 

এদিকে এই ঘটনায় সেন্ট্রাল জেনারেল হাসপাতালের মালিক মো. মনিরুজ্জামান জানান, রোগীর প্রেসার ফল্ট করেছে। আমাদের এখানে সেই ধরনের রোগীর ব্যবস্থা নেই। তাই আমরা রোগীকে রাতে ঢাকায় রেফার করেছিলাম। পরবর্তিতে রোগী মারা গেলে রোগীর স্বজনরা হাসপাতাল ভাংচুর করেন। তবে রাতে ৫লক্ষ টাকায় রোগীর স্বজনদের সাথে আপোস করা হয়েছে। 

 

তবে টাকার বিনিময়ে এই ঘটনা মিমাসংসা হওয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল। তাদের দাবী এসমস্ত অখ্যাত হাসপাতাল ও কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া জরুরী। না হলে এদের কর্মকান্ড রোধ করা যাবে না। জেলার সিভিল সার্জন এই ঘটনা জন্য দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ জেলার আনাচে কানাচে এধরনের অখ্যাত হাসপাতালে একের পর এক রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। 

 

এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলার বেশীর ভাগ বেসরকারী হাসপাতালই এখন পরিণত হয়েছে মৃত্যু ফাঁদে। রোগ নির্ণয়ে ভূল হচ্ছে হরহামেশাই। আর এতে করে ওই সব ক্লিনিক ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে মারা গেছেন অনেকেই। দালালদের মাধ্যেমে গ্রাম থেকে আসা সহজ সরল মানুষকে তারা শিকারে পরিণত করে। আর এ ভাবে অপচিকিৎসার শিকার হন তারা। এতে করে কেউ হন পঙ্গু, আবার কারো যায় প্রাণ। এই অচিকিৎসার কারণে অনেকেই ভুগছেন দীর্ঘ মেয়াদি জটিলতায়। শুধু ভুল চিকিৎসা আর অব্যবস্থাপনাই নয়, এসব অখ্যাত প্রাইভেট হাসপাতালে গেলেই রোগীর স্বজনদের গুনতে হয় টাকা। কিন্তু চিকিৎসার বদলে মিলে অপচিকিৎসা, ফলে হরহামেশাই ঘটছে দূর্ঘটনা।