জীবন-জীবিকা নিয়ে শঙ্কায় গণপরিবহন শ্রমিকরা
যুগের চিন্তা অনলাইন
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৯:৫০ পিএম, ১৩ এপ্রিল ২০২১ মঙ্গলবার
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে চলতি মাসের শুরুর দিকে সরকারের দেওয়া ৭ দিনের লকডাউন এখনো চলছে। এদিকে আগামীকাল ১৪ এপ্রিল থেকে আবারো শুরু হচ্ছে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন! এতে করে টানা ১৮ দিন নারায়ণগঞ্জ থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছেড়ে যাওয়া গণপরিবহনগুলো বন্ধ থাকবে। ফলে আয় রোজগার না থাকায় নারায়ণগঞ্জে বাস ও নৌ-যানসহ বিভিন্ন গণপরিবহনের সাথে যুক্ত শ্রমিক ও কর্মচারীরা এখন নিজেদের জীবন জীবিকা নিয়ে আছেন শঙ্কার মধ্যে।
গতকাল সোমবার নারায়ণগঞ্জের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, বন্ধন, উৎসব ও আনন্দ পরিবহনের প্রায় অর্ধশত বাস, সারিবদ্ধ অবস্থায় থামিয়ে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে বাস বন্ধ থাকায় টার্মিনালের পাশের বিভিন্ন চায়ের দোকানে টিভি দেখে আর মোবাইলে লুডু খেলে দিন কাটাচ্ছেন বাসচালক, হেলপার ও স্টাফরা।
এ সময় বাস টার্মিনালের একটি চায়ের দোকানে মোহাম্মদ খোকন নামে বন্ধন পরিবহনের এক হেলপারের (চালকের সহকারী) সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় একটা ট্রিপ মারলে ওস্তাদ (বাসচালক) পায় ২’শ টাকা আর আমরা হেলপাররা পাই ১’শ টাকা। প্রতিদিন এমন দুই-একটা ট্রিপ থেকে যেই টাকা পাই তা থেকেই আমাদের সংসার চলে। কিন্তু গত ৮-১০ দিন ধরে লকডাউনের জন্য এমনিতেই আমাদের কাজ নেই। কিন্তু এরমধ্যে আবারো লকডাউন দেওয়া হইল! আমরা কি না খাইয়া মারা যামু ভাই, বলেন?’
এছাড়া সংসারের অভাব অনটনের কথা তুলে ধরে আমজাদ নামে এক বাসচালক বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বাস চলাচল বন্ধ থাকায়, আমদের আয়ের রাস্তা একেবারেই বন্ধ। বাসা ভাড়া জমছে সেটার সমস্যা নেই, পরে দেওয়া যাবে; কিন্তু ঘড়ের বাজার সদাইতো পরে করা যায়না। সবমিলিয়ে আমরা পরিবহন শ্রমিকরা খুবই বিপদের মধ্যে আছি। আর আমাদের বিপদের সময়ই আমরা কখনোই বাস শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের পাশে পাইনি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ কমল বলেন, ‘আমাদের কাছে সরকারের তরফ থেকে যখনই পরিবহন শ্রমিকদের জন্য সাহায্য এসেছে, আমরা সেটা দ্রুতই তাদের মাঝে বন্টন করে দিয়েছি। সামনে আবারো যদি আসে তাহলে সেটাও তাদেরকে দেওয়া হবে। এতে কোনো সন্দেহ নেই।’
এদিকে নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনালে গিয়েও দেখা যায় একই চিত্র। লকডাউনের ফলে নারায়ণগঞ্জ থেকে চাঁদপুর, মতলব ও মুন্সিগঞ্জ রুটে চলাচল করা প্রায় ৭০ টি লঞ্চ বন্ধ। এতে লঞ্চগুলোর নাবিক ও স্টাফদের আয় রোজগার পুরোপুরি বন্ধ।
আফজাল মিয়া নামে চাঁদপুরগামী একটি লঞ্চের সুপারভাইজারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘গত ১৫ দিন ধরেই আমাদের আয়ের পথ প্রায় বন্ধ। সামনে রোজা এবং ঈদ, তখন কিভাবে সংসার পরিচালনা করবো সেটা নিয়ে খুবই চিন্তিত। এরমধ্যেই বাড়ি থেকে কয়েকবার ফোন এসেছে, তাদের টাকা পাঠাতে হবে। কিন্তু এই অবস্থা চলতে থাকলে কিভাবে..।’