লকডাউনে করুণ পরিস্থিতি শহরের রিক্সাচালকদের
যুগের চিন্তা অনলাইন
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৫:০৯ পিএম, ১৭ এপ্রিল ২০২১ শনিবার
শুক্রবার ১৬ এপ্রিল দুপুর ১২ টা। নারায়ণগঞ্জ নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কের সাধু পৌলের গীর্জার সামনে চোখে পড়ে ৪ জনের রিক্সা চালকদের একটি দল। দেখা যায় এরা রাস্তার পাশে বসে একজন আরেকজনের সাথে কথা বলছে, আর একটু পরপর এদিক সেদিক তাকাচ্ছেন। সেই সাথে এ সময় তাদের সবার চোখে মুখেই লক্ষ্য করা যায় এক ধরনের ভয় আর হতাশার ছাঁপ।
তাই এদের সাথে কথা বলার জন্য একটু সামনে গিয়ে দাড়াঁতেই রিক্সা চলকদের একজন বলে উঠল, ভাই কি আইনের লোক? আমাগো-তো পায়ের রিক্সা, ব্যাটারির না! মূলত গত বেশ কয়েকদিন যাবৎ সারাদেশে সর্বাত্মক লকডাউনে ফলে নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অসংখ্য ব্যাাটারি চালিত রিক্সা জব্দ করেছে। এতে শহরের অন্যান্য রিক্সার চালকরা এখন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। তাই সঙ্গে সঙ্গে তাদের অভয় দেখিয়ে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিলে, উপস্থিত রিক্সা চালকদের মধ্যে সবাই সামনে এগিয়ে আসে কথা বলার জন্য।
প্রথমেই কথা বলেন আনিতুল্লাহ বেপারী নামে এক রিক্সা চালক। তিনি বলেন, ‘অনেকদিন ধইরাই লকডাউন চলতাছে তবে গত তিনদিন ধরই যেই লকডাউন হইতাসে সেইটা একটু কঠিন। মানুষ ঘর থেকা বাইর হয়না, রিক্সায়ও উঠেনা। তাই আমাদের আয়রোজগারও কম। প্রতিদিন মালিকের জমার টাকা তুলতেই কষ্ট হয়ে যায়। তার উপর আবার রাস্তায় রিক্সা নিয়া বাইর হইলে পুলিশ জরিমানা করে। তাই ভয়ে ভয়ে গাড়ি চালাইতাছি।’
এদিকে অনিতুল্লাহ বেপারীর কথা শেষ হতে না হতেই পেছন থেকে বলতে শুরু করেন হাফিজুর রহমান নামে অন্য এক রিক্সা চালক। লকডাউনে তার করুন পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘লকডাউনের কথা কি আর কমু ভাই, এডার কারনে আজকে আমাগো এখন না খাইয়া মারার অবস্থা। চাইয়া দেখেন রাস্তায় কোনো মানুষ আছে? কেউ নাই! আজকে সারাদিনে ২’শ টাকাও কাজ করতে পারি নাই। বাড়িতে বউ পোলা মাইয়াসহ আরো তিনজন আছে, তাই একবার চিন্তা করেন ২’শ টাকায় মালিকের জমা দিমু কি, আর খামু কি?’
এছাড়া এ সময় অনিস নামে অরেক রিক্সা চালক বলেন, ‘সরকার এটা কি লকডাউন দিলো আমাদের মাথায় ঢুকতাছেনা! বাজারে হাজার হাজার মানুষ, মসজিদে শতশত মানুষ। এই রকম লকডাউনে কি করোনা কমবো? জীবনেও কমতো না! এডার জন্যে শুধু আমাগো মতো কিছু গরীব মানুষ না খাইয়া থাকবো, এর বাইরে আর কিছুনা।’