জনপ্রতিনিধিদের দিকে তাকিয়ে দিনমজুররা
যুগের চিন্তা অনলাইন
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৭:১১ পিএম, ১৮ এপ্রিল ২০২১ রোববার
করোনার সংক্রোমণ রোধে শিল্পনগরী নারায়ণগঞ্জসহ দেশব্যাপী চলছে লকডাউন। এতে গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও বন্ধ রয়েছে মার্কেট, গণপরিবহনসহ অন্যান্য কর্মসংস্থান। ফলে নিদমজুরসহ খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষদের বড় একটি অংশ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। গত ১৪ই এপ্রিল থেকে নারায়ণগঞ্জে এমন পরিস্থিতি বিরাজ করলেও নিম্ন আয়ের এই মানুষদের জন্য এখনো সহায়তা প্রদানের বিষয়ে বরাদ্ধ আসেনি সরকারের পক্ষ থেকে। তবে, পরিস্থিতি বিবেচনায় লকডাউন বৃদ্ধি পেলে আসতে পারে রাষ্ট্রীয় সহায়তা। তবে, সেটা সময় সাপেক্ষ।
ফলে আপাত কালিণ সময়ে সহায়তার আশায় নিজ নিজ জনপ্রতিনিধিদের দিকে তাকিয়ে আছে নিম্ন আয়ের মানুষেরা। এখনো পর্যন্ত জনপ্রতিনিধিদের পক্ষ থেকেও সাধারণ মানুষদের সহায়তা দেয়া হয়নি। তবে, আগামীতে অসহায় মানুষদের সহায়তা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরা।
এদিকে, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের পক্ষে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ-নিজাম জানিয়েছেন, ‘শামীম ওসমান ব্যক্তিগত তহবিল থেকে নারায়ণগঞ্জে লক্ষাধিক পরিবারে সহায়তা করেছিলেন। আমার নিজের মাধ্যমেই ৬২ হাজার পরিবারে খাদ্য সহায়তা মানুষের ঘরে ঘরে পৌছে দেয়া হয়েছিলো। এবার করোনার জন্য লকডাউন যদি বৃদ্ধি করা হয়. তাহলে পরিস্থিতি বিবেচনায় অবশ্যই মানুষদের সহায়তা করবেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমান।’
সেলিম ওসমানের পক্ষে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু জানিয়েছেন, ‘সাংসদ সেলিম ওসমান গতবছর করোনাকালিন সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সারা দেশে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করাসহ বিপুল পরিমান খাদ্যসামগ্রী তিনি বিতরণ করেছেন। চিকিৎসকদের জন্যেও তিনি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এই বছর করোনার কারণে যদি লকডাউন বৃদ্ধিপায়, তাহলে তিনি আগের মতই সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াবেন।’
ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম সাইফউল্লাহ বাদল দৈনিক যুগের চিন্তাকে বলেন, ‘লকডাউনের সবেমাত্র ৩দিন অতিবাহিত হলো। তাই সরকার বা আমাদের পক্ষ থেকে এখনো কোন সহায়তা দেয়া হচ্ছে না। তবে, আগামীতে যদি লকডাউন বৃদ্ধিপায়, তাহলে অবশ্যই আমরা মানুষের পাশে দাঁড়াবো এবং সরকারের পক্ষ থেকেও সহায়তা করা হবে বলে আমরা আশাবাদি।’
ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম. শওকত আলী দৈনিক যুগের চিন্তাকে বলেন, ‘গত বছর করোনাকালিন সময়ে মানুষ যখন খাদ্যসহ নানা সংকটে পড়েছিলো, তখন ইউনিয়ন পরিষদের পাশাপাশি ব্যক্তিগত তহবিল থেকেও মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলাম। এবার অবশ্য সরকারের পক্ষ থেকে করোনা প্রেক্ষাপটের উপরে কোন সহায়তা এখনো আসেনি। কিন্তু আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে সহায়তা করার পরিকল্পনা আছে। এটা নিয়ে কাজ চলছে। কারা সহায়তা পাওয়ার যোগ্য, তাদের তালিকা করে সহায়তা করা হবে।’
গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নূর হোসেন সওদাগর বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তাসহ মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণের পরিকল্পনা আছে। তাছাড়া উপজেলা থেকে হয়তো নগদ টাকাও আসতে পারে, এমন একটি তথ্য জানতে পেরেছি। সেটা ইউনিয়নে আসলে সহায়তা দেয়া শুরু করবো। তবে, করোনার প্রেক্ষাপটে এখনো পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোন সহায়তা আসেনি। তবে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে। পরিকল্পনা আছে। কাজ চলছে।’
আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান বলেন, ‘আরো কিছুদিন যাক, দেখা যাক কি করা যায়। আমরা একটা পরিকল্পনা করছি যে, কিভাবে কি করা যায়।’
এদিকে, ফতুল্লা, এনায়েতনগর ও কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সাথে এই বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা তাদের ব্যবহৃত ফোন রিসিভ করেননি।
জানা গেছে, করোনা কালিন পরিস্থিতিতে লকডাউনে সহায়তা দেয়ার জন্য সরকারি ভাবে কোন সহায়তা এখনো না আসলেও পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে বিশেষ সহায়তার আওতায় নারায়ণগঞ্জের ৫টি উপজেলায় মোট ৯৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, পৌরসভাগুলোতে ৮ লাখ এবং সিটি করপোরেশনের জন্য ৫ লাখ টাকার একটি বরাদ্ধ এসেছে। এগুলো সংশ্লিষ্ট খাতে প্রেরণ করা হচ্ছে।’