মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১   ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

থমকে আছে কালীরবাজারে স্বর্ণ ব্যবসা, গহনার কারিগরদের দৈন্যদশা

যুগের চিন্তা অনলাইন

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৩:৩৬ পিএম, ২৪ এপ্রিল ২০২১ শনিবার

ছোট বড় প্রায় ১’শ স্বর্ণের দোকান নিয়ে শহরের কালীরবাজারে অবস্থিত স্বর্ণপট্টি এলাকা। জানা গেছে, বিয়ের অনুষ্ঠান কিংবা প্রিয়জনদের জন্য গহনা কিনতে নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রথম পছন্দ কালারবাজানের স্বর্ণের দোকানগুলো। কারণ, আধুনিক ডিজাইন এবং চোখধাধানো নানা অলংকার তৈরীতে এখানকার কারিগরদের রয়েছে বিশেষ সুনাম।

 

তাই বহু বছর ধরে এখানে গহনার জমজমাট ব্যবসা হলেও, গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সারাদেশে লকডাউন ও চলমান করোনা পরিস্থিতির জন্যে এখানকার ব্যবসায়ীরা এখন অর্থনৈতীক ভাবে চরম সংকটের মধ্যে আছে। সেইসঙ্গে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি গহনার নতুন অর্ডার না থাকায় এখানকার গহনা তৈরীর কারিগরদেরও যেতে হচ্ছে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে।


গতকাল ২৩ এপ্রিল শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে স্বর্ণপট্টির ব্যবসায়ীদের সাথে কথা হলে তারা জানান, গত দুই সপ্তাহ ধরে করোনা প্রতিরোধে সরকারের লকডাউনের ফলে কালীরবাজারের অধিকাংশ স্বর্ণের দোকান বন্ধ, এতে তাদের বেচাকেনা নেই বললেই চলে। তাই কর্মচারীদের বেতন, দোকানভাড়া এবং পাওনাদারদের পাওনা টাকা নিয়ে তারা খুবই দুঃশ্চিন্তার মধ্যে আছেন।


কালীরবাজার স্বর্ণ ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি হাজী মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ এ বিষয়ে যুগের চিন্তাকে বলেন, লকডাউনের জন্যে এমনিতেই আমরা গত বছরের ঈদের বেচাকেনা করতে পারি নাই। ভেবেছিলা এবার সেটা পুষিয়ে ফেলবো তবে এবারো লকডাউনের ফলে আমাদের বেচাকেনা বন্ধ হয়ে গেল! এখন দেখা যাচ্ছে বেচাকেনা বন্ধ থাকায় আমাদের দোকান ভাড়া, কর্মচারীদের বেতন এগুলো সবই মূলধন থেকেই দিতে হচ্ছে। সুতরাং এই অবস্থা যদি আর কিছুদিন থাকে তাহলে ব্যবসা গুটিয়ে ফেলা ছাড়া আর কোন উপায় নেই আমাদের কাছে।


অন্যদিকে লকডাউনের জন্যে নিজেদের আয় রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে উল্ল্যেখ করে কালীরবাজার স্বর্ণপট্টির গহনার কারিগর বুলু দাস বলেন, ‘আগে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ জোড়া কানের দুল বানাতে পারলে আমাদের ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা পকেটে আসতো। কিন্তু এখন মানুষের কাছে টাকা নাই ও লকডাউনের সবার পরিস্থিতি খারাপ থাকায় আমাদের কাজের অর্ডারও নেই। আমরা একপ্রকার বেকার হয়ে যাচ্ছি। তাই ঈদের আগেই যদি সরকার আমাদের কথা চিন্তা করে কোনো ভালো সিদ্ধান্ত না নেয় তাহলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে।’


এছাড়া এ বিষয়ে জানতে চাইলে কালির বাজার স্বর্ণশিল্প শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মুকুল মজুমদার বলেন, ‘আমাদের এখানকার কারিগরদের কাছে গত ৩ মাস যাবৎ কোন কাজ নেই। গহনার অর্ডার না থাকাতে আমাদের আয়রোজগার প্রায় বন্ধ। তাই ইতিমধ্যেই অনেক গহনার কারিগরকে এখন সড়কে সিগারেট ও পান বিক্রি করতেও দেখা গেছে। তাই যত দ্রুত এই অবস্থা থেকে আমরা রক্ষা পাবো, ততই আমাদের জন্য ভালো হবে।’