আহবায়ক কমিটিতে আউয়াল-ফেরদৌস-কাশেমী বাদ
যুগের চিন্তা অনলাইন
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৪:৩১ পিএম, ২৭ এপ্রিল ২০২১ মঙ্গলবার
হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্তের পর গঠিত নতুন আহবায়ক কমিটিতে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের নেতারা বাদ পড়েছেন। সেখানে নারায়ণগঞ্জে হেফাজতকে ব্যবহার করে বিশৃঙ্খলার জন্য দায়ী মাওলানা ফেরদৌসুর রহমান (সাবেক কমিটির সহকারী প্রচার সম্পাদক) এবং একাদশ জাতীয় নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির ঐক্যজোটের প্রার্থী জমিয়ত নেতা মুফতি মুনির হোসেইন কাশেমীকে (হেফাজতের সাবেক কমিটির অর্থ সম্পাদক) বাদ দেয়া হয়েছে।
সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে এই দুইজন নারায়ণগঞ্জে একে অন্যের পরিপূরক হিসেবে কাজ করেছিলেন। যদিও শেষ মুহুর্ত্বে মুনির হোসেইন কাশেমীকে রেখেই সটকে পড়েন ফেরদৌসুর রহমান। চলতি বছরের শুরুতে নাসিক মেয়র আইভীর বিরুদ্ধে ধর্মপ্রাণ মুসলমান এবং সাধারণ মানুষকে ক্ষেপিয়ে তোলার নেপথ্যে কাজ করেছিলেন মাওলানা ফেরদৌসুর রহমান। গত ২৮ মার্চ হেফাজতের ডাকা হরতালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চালানো তান্ডবে অংশগ্রহণ না করায় ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন ফেরদৌসুর রহমান। এনিয়ে হেফাজতের সাবেক কমিটির নায়েবে আমীর মাওলানা আউয়ালকে (হেফাজতের জেলা সভাপতি) বহিঃষ্কারের সুপারিশ করেছিলেন তিনি। পরবর্তীতে মাওলানা আউয়ালের মান ভাঙান বর্তমানে পুলিশের রিমান্ডে থাকা মামুনুল হক।
গত ৩ মার্চ মামুনুল হকের রিসোর্ট কান্ডে অবরুদ্ধ থাকা অবস্থায় মামুনুলকে ছাড়িয়ে আনতে ঘটনাস্থলে যান মাওলানা ফেরদৌসুর রহমান। পরবর্তীতে হেফাজতের সোনারগাঁয়ে তান্ডবের ঘটনায় মামলা দায়েরের পর ঢাকার জুরাইনে হেফাজতের ফেরদৌসসহ ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে র্যাব-১১। তবে সেখান থেকে নিষ্কৃতি পেয়ে লাপাত্তা হয়ে যান ফেরদৌসুর রহমান। যদিও নারায়ণগঞ্জবাসীর দাবি, ফেরদৌসকে আরো ভালোভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদঘাটন হতে পারে। এছাড়া অন্যদিকে মনির হোসেন কাশেমীও এখনো পর্যন্ত হেফাজতের তান্ডবের ঘটনায় মুক্ত রয়েছেন। তবে কাশেমীর ব্যাংক একাউন্টের হিসাবের ব্যাপারে তলব করা হয়েছিলো।
এদিকে হেফাজতের নতুন গঠিত আহবায়ক কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন সাবেক কমিটির নায়েবে আমীর ও ডিআইটি মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুল আউয়াল। বছরের শুরুতেই শহরের দুটি মসজিদ ও মাদ্রাসা ভেঙে ফেলা হচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে মেয়র আইভীর বিরুদ্ধে মুসলমানদের ক্ষেপিয়ে তোলার চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া জুম্মার নামাযসহ অন্যান্য সময়ে বক্তব্যে রাজনৈতিক ইন্ধন দেন মাওলানা আউয়াল এমন অভিযোগও রয়েছে। গতকাল বরিশাল থেকে মাওলানা আউয়ালের মেয়ে জামাতা মাওলানা আতাউল্লাহকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নারায়ণগঞ্জ শহর ও জেলায় হেফাজতের তান্ডবের পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ানোর মাষ্টার মাইন্ড হিসেবে মাওলানা ফেরদৌসুর রহমান ও মাওলানা আউয়ালকে অনেকেই দায়ী করেন।
প্রসঙ্গত, মাত্র চারমাসের মাথায় ২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর গঠন করা হেফাজতে ইসলামীর কেন্দ্রীর কমিটি ভেঙে দেয়া হয়। রোববার রাতে কেন্দ্রীয় কমিটির বিলুপ্তের ঘোষণা দেন আমির মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী। এর কয়েক ঘণ্টা পরই তিন সদস্যের আহবায়ক কমিটি গঠন করে হেফাজত। এতে মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী উপদেষ্টা, জুনায়েদ বাবুনগরীকে আহবায়ক, নুরুল ইসলাম জিহাদীকে সদস্য সচিব করা হয়। পরে আবার দেড়ঘণ্টা পর রাত সাড়ে চারটার দিকে আরও দুজনকে আহবায়ক কমিটিতে রাখা হয়। এই দুজন হলেন, সালাউদ্দিন নানুপুরী ও মিজানুর রহমান চৌধুরী।