নিমতলা বংশাল রোড এখন ট্রাকস্ট্যান্ড!
শাহজাহান দোলন
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৭:০৩ পিএম, ২১ মে ২০২১ শুক্রবার
নারায়ণগঞ্জ নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কে অবস্থিত মন্ডলপাড়া পুল থেকে পূর্বদিকে মিনাবাজার ও টানবাজারের দিকে চলে যাওয়া নিমতলা বংশাল রোড় এখন ট্রাকের স্ট্রান্ডে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ লোকজনের দাবি, নিতাইগঞ্জ ও মন্ডলপাড়ার বিভিন্ন ট্রাক মালিকরা এই রাস্তাটির একাংশ বহুদিন ধরে অবৈধভাবে অদৃশ্য শক্তির বলে দখল করে রেখেছে। তাই প্রায় সময় এই রাস্তাটি দিয়ে যাত্রীবাহী এবং মালবাহী ছোটবড় যানবাহন চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে। সেইসঙ্গে টানবাজারসহ আশপাশের এলাকায় অগ্নিকান্ডের মতো ঘটনা ঘটলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ীও ঠিকমতো এই পথ অতিক্রম করে ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনা।
এদিকে জানা গেছে, গত এক বছর আগে মন্ডলপাড়া পুল থেকে পূর্বদিকে মিনাবাজার পর্যন্ত চলে যাওয়া, এই রাস্তাটি প্রশস্ত করে ১ লেন থেকে ২ লেনে উন্নীত করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোররেশন। কিন্তু সাধারণ মানুষের যাতায়তের সুবিধার্থে ও যানজট নিরসনে তৈরী এই রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দখলদারদের অধীনে থাকায় পথচারী ও যানবাহনের যাত্রীরা এর সুফল খুব কমই ভোগ করতে পারছে। এছাড়া রাস্তাটির একাংশ দখল করে ট্রাকের স্ট্যান্ড তৈরী হওয়ায় সেখানে মাদকের অভয়ারণ্য গড়ে উঠেছে বলেও জানা গেছে।
বংশাল রোডের পাশে অবস্থিত নিমতলা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আবুল মনসুর মিয়া বলেন, রাস্তাটি এক বছরও হয় নাই ১ লেন থেকে ২ লেন করছে। কিন্তু এরমধ্যেই ট্রাকের মালিকরা পুরো সড়কটি দখল করে ফেলেছে। এতে আমাদের চলাচল করতে খুবই কষ্ট হয়। মাঝে মধ্যে গাড়ীর চাপ বেশি থাকলে তো এক লাইন দিয়া সব গাড়ী বের হতে পারেনা। তাই এখানে যানজট লেগেই থাকে। কিন্তু ট্রাক মালিকরা কাদের শাহসে এভাবে একটি রাস্তা দখল করে রাখে এটাই আমরা বুঝিনা।
এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অসিত বরণ বিশ্বাস বলেন, এই রাস্তাটির মধ্যে অবৈধ ভাবে ট্রাক না রাখার জন্য মালিক সমিতির নেতাদের আমি অনেক আগে থেকেই বলে আসছি। কিন্তু তারা আমার কথা শুনেনি। এতে টানবাজারসহ আমার ১৫ নং ওয়ার্ডের সকল গুরুত্বপূর্ণ সড়কে চলাচল করতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তীতে পড়তে হচ্ছে। এই বিষয়টি আমি আমাদের সিটি করপোরেশনের সভায়ও বলেছি। একজন লোক যখন গাড়ীর মালিক হয়, তখন তার চিন্তা করা দরকার যে গাড়ীটা কোথায় রাখবেন। কিন্তু আমাদের এখানে ট্রাক মালিকরা সেটা করেনা। তারা রাস্তাকেই গাড়ীর গ্যারেজ হিসেবে কাজে লাগায়।
তিনি বলেন, কিছুদিন আগে আমাদের টানবাজারে আগুন লেগেছিলো কিন্তু এই বংশাল রোডে অবৈধ ভাবে ট্রাকের স্ট্রান্ড বানিয়ে রাখায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ী এই রাস্তা দিয়ে ঢুকতেই পারেনি। তাই এটা নিয়েও আমি খুব চিন্তার মধ্যে আছি। মূলত সিটি করপোরেশন এবং আমারা ট্রাক মালিকদের কাছে জিম্মী হয়ে আছি। অন্যদিকে এই বংশাল রোডে অবৈধ ভাবে ট্রাকের স্ট্যান্ড গড়ে তোলায় স্ট্যান্ডের আশপাশে কিন্তু মাদকের একটি অভয়ারণ্য তৈরী হয়েছে। তবে আইণশৃঙ্খলা বাহিনী ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যদি এখানে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতো তাহলে এভাবে রাস্তা দখল করা যেতনা। তাই প্রশাসনের কাছে একজন জনপ্রতিধি হিসেবে অনুরোধ তারা যেন বিষয়টা গুরুত্বের সাথে দেখে। এদিকে রাস্তায় অবৈধ ভাবে ট্রাকের স্ট্যান্ড গড়ে তোলার বিষয়ে জানতে নারায়ণগঞ্জ জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিউদ্দিন প্রধানের সাথে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
এছাড়া নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোস্তাইন বিল্লাহ এ বিষয়ে বলেন, এই কাজটা মূলত সিটি করপোরেশনের কাজ। তাই সিটি করপোরেশন এবং জনপ্রতিনিধিরা কেন এই রাস্তাটি থেকে অবৈধ স্ট্র্যান্ড উচ্ছেদ করতে পারছেনা, সেটা আমি জানিনা। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা যদি এ বিষয়ে আমার কাছে আসে তাহলে আমি অবশ্যই তাদের সাহায্য করবো।