পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি না পেয়ে ভোগান্তিতে নগরবাসী
যুগের চিন্তা অনলাইন
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৯:২৬ পিএম, ৪ জুন ২০২১ শুক্রবার
দীর্ঘদিন ধরে নারায়ণগঞ্জ শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন এলাকায় ঢাকা ওয়াসা দৈনিক ২০ থেকে ২৪ ঘন্টা সরবরাহ করা হতো। তবে সম্প্রিতি নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানি সরবরাহ করার দায়িত্ব, ঢাকা ওয়াসা থেকে নাসিক’র কাছে চলে আসে। তাই গত ১ জুন থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন তার বিভিন্ন এলাকায় দিনে ও রাতে সব মিলয়ে ১২ ঘন্টা পানি সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু পানি সরবরাহ নিয়ে, নাসিকের এই সিদ্ধান্তে ওয়াসার প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহক এখন বিরাট ভোগান্তীতে পড়েছেন।
গতকাল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, নাসিকের প্রতিদিন সকালে ও রাতে ১২ ঘন্টা পানি সরবরাহ করার কথা থাকলেও মূলত সেই ১২ ঘন্টা পানিও ঠিকমতো দেয়া হচ্ছেনা। তাই অধিকাংশ মানুষকেই ভোর সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পানি সংগ্রহের জন্য কষ্ট করতে হচ্ছে। তবে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দ্রুত সময়ের মধ্যেই এই সমস্যার সমাধান করা হবে। ভোগান্তির কথা তুলে ধরে শহরের পাইকপাড়া এলকার বাসিন্দা আহসান মিয়া বলেন, একটি পরিবারের সদস্যদের দৈনিক গোসল, কাপড় ধোয়া ও রান্নাসহ বিভিন্ন কাজে অনেক পানি প্রয়োজন হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে আমাদের এলাকায় ওয়াসা যে পরিমাণে পানি দিত, তাতে আমাদের দৈনন্দিন কাজের জন্য পানির কোনো সংকট ছিলোনা। কিন্তু হঠাৎ সিটি করপোরেশনের কাছে ওয়াসার দায়িত্ব যাওয়ার পরই, তারা দিনে মাত্র ১২ ঘন্টা পানি দিচ্ছে। আসলে আমরা সেটাও ঠিকমতো পাচ্ছিনা।
এদিকে নগরীর দেওভোগ পানির ট্যাংকি এলাকায় অবস্থিত আলী মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া শেফালী বেগম বলেন, আগে আমরা টিভিতে খবরের মধ্যে দেখতাম ঢাকার মানুষ পানির জন্য অনেক কষ্ট করছে। সেখানকার ওয়াসা ঠিকমতো পানি দিচ্ছেনা। তাই তখন বলতাম আল্লাহ আমাদের যেনো পানির জন্য এমন কষ্ট করতে না হয়। কিন্তু এখন আমরাও ঢাকার মানুষের মতোই পানির জন্য কষ্ট করছি। আজকে সকাল ৫টায় উঠেছি পানির জন্য। বল, বালতি ঘরে যা আছে সব নিয়া যাইতে হচ্ছে পানি আনতে। কিন্তু তারপরেও ঠিকমতো পানি পাচ্ছিনা।
অন্যদিকে এ বিষয়ে পারভেজ মিয়া নামে খানপুরের এক বাসীন্দার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, গত ২ দিন ধরে আমাদের এলাকায় পানির খুবই সংকট। এছাড়া সিটি করপোরেশন ওয়াসার পানি মাত্র ১২ ঘন্টা দেওয়া ফলে, সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি পানি নেই। তাই ঠিকমতো গোসলও করতে পারছিনা। এদিকে বাড়ির মেয়দেরতো ডিউটি ডবল হয়ে গেছে। সকাল হলেই তারা পানির জন্য বিভিন্ন জায়গায় বালতি নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করে। তারপর রান্নার পানির জন্যও আমাদের এখন সমস্যায় পোহাতে হচ্ছে। তবে পানি সংকটের এই বিষয়টি দ্রুতই সমাধান করা হবে জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আজগর হোসেন বলেন, সাধারণ মানুষ যে সমস্যায় আছে সেটা আমরাও জানি।
তাই আমাও চিন্তা করছি এটা কিভাবে সমাধান করা যায়। আসলে আমরা যেহেতু ঐ রকম ক্যাপাসিটি বিল্ডআপ করতে পারিনাই তাই একটু সমস্যা হচ্ছে। তবে আশা করছি অল্প কিছু দিনের মধ্যেই এটা সমাধান হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, আমরা ইতিমধ্যেই নতুন ১০টি নলকুপ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরমধ্যে বন্দর সিদ্ধিরগঞ্জ ও খানপুরসহ বেশ কয়েকটি জায়গাতেই ৬ টি নলকুপ বসানোর কাজ শেষ। আর বাকি ৪ টি আশা করি অল্প কিছুদিনের মধ্যেই বসানো হবে। এদিকে বন্দর সিরাজউদ্দৌলা ক্লাবের সামনের একটি এলাকায় একটি নতুন নলকুপ থেকে পানিও সরবরাহ করা হচ্ছে।