ছিন্নমূলদের ভরপেট খাবার কার্যক্রমে ওসির বাধা, স্থান পরিবর্তন
যুগের চিন্তা অনলাইন
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৭:৪৪ পিএম, ৮ জুন ২০২১ মঙ্গলবার
নারায়ণগঞ্জের একদল উদ্যোমী শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলা অরাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন ‘মুক্ততরী’র উদ্যোগে মাত্র ৫ টাকার বিনিময়ে ছিন্নমূল শিশু ও নিম্ন আয়ের মানুষের ভরপেট খাবারের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। সংগঠনটির সদস্যরা কার্যক্রমটির নাম দেয় ‘পঞ্চে তৃপ্তি’। নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় জিয়া হল প্রাঙ্গণে এ কার্যক্রম চলার ষষ্ঠ দিনে পুলিশি বাধার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মুক্ততরীর সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সংগঠনটি তাদের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে গত ১ জুন থেকে ৫ টাকার বিনিময়ে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিম্ন আয়ের মানুষদের দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করে। দুপুরের খাবার হিসেবে ভাত, তরকারি, ডালের ব্যবস্থা করা হয়। নিজেদের হাত খরচের টাকা দিয়ে এই কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে জানায় সংগঠনটির সদস্যরা। প্রথম দিন ভাত, মুরগির মাংস, ডাল ছিল। পরে আর্থিক কারণে মেন্যু পরিবর্তন করে ভাত, ডিম আলু তরকারি, ডাল দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও সবার জন্যে ছিল বিশুদ্ধ পানি এবং বসার ব্যবস্থা। কার্যক্রমের শুরুর দিকে চাষাঢ়ায় জিয়া হলের সামনে খালি জায়গায় চেয়ার সাজিয়ে খাবার বিতরণের আয়োজন করে সংগঠনের সদস্যরা। তবে পুলিশি বাধার মুখে স্থান পরিবর্তন করেছে তারা। সোমবার (৭ জুন) চাষাঢ়া রেলওয়ে প্লাটফর্মে সংগঠনটির কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। মুক্ততরীর সদস্যদের অভিযোগ, গত রোববার সদর মডেল থানার ওসি শাহ্ জামানের নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ এসে জিয়া হলের সামনে এই কার্যক্রম চালানে যাবে না । সেখানে কার্যক্রম চালাতে অনুমতি লাগবে বলে জানান।
মুক্ততরী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক জয় দত্ত জানান, রোববার কার্যক্রম চলাকালীন সময়ে বৃষ্টির জন্যে আমরা জিয়া হলের ভিতরে গিয়ে বসি। সে সময় ফুটপাতে থাকা হকারদের উচ্ছেদ করতে আসেন সদর মডেল থানার ওসি শাহ্ জামান। ভেতরে আমাদের দেখে ডাক দেন উনি। সে ডাক আমরা শুনতে পাইনি। তখন সে ভেতরে এসে আমাদের পরিচয় জিজ্ঞেস করে এবং আমাদের এখানে থাকার কারণ জিজ্ঞেস করে। আমরা আমাদের নিজ নিজ পরিচয় এবং এখানে আমাদের কার্যক্রম বিষয়ে তাকে বললে তিনি আমাদের বলেন, ‘নিম্ন আয়ের মানুষদের খাওয়ানোর জন্যে রাষ্ট্র আছে। তোমরা এ কাজ কেনো করতে গেছো? আর এই করোনার সময়ে এভাবে গ্যাদারিং হয়ে বসে আছো কেনো? আর এখানে কার অনুমতি নিয়ে তোমরা এসব করছো?’
আমরা বলি যে, আমরা কোনো অনুমতি নেই নাই। তখন উনি বলেন, তোমরা যে এখানে অনুমতি না নিয়ে বসেছো এর জন্যে তোমাদের নামে মামলাও করতে পারি। পরে আমাদের বের হতে বললে আমরা সবাই বের হয়ে আসি। জয় আরও বলেন, আজকে এসে গেটের চাবি আনতে গেলে দারোয়ান বলে, এনডিসি স্যারের নিষেধ আছে। আপনারা অনুমতি নিয়ে আসেন তারপর চাবি পাবেন। সেজন্য আজকের কার্যক্রম চাষাঢ়া প্লাটফর্মে রেখেছি। কালকে ডিসি’র অনুমতি এনে তারপর এখানে কার্যক্রম পরিচালনা করবো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ্ জামান বলেন, ‘খাবার বিতরণ কার্যক্রম শেষ হবার পরও তারা জিয়া হলের ভেতর বসে গান-বাজনা করছিল। সরকারি স্থাপনায় অনুমতি নিয়ে কার্যক্রম চালাতে পরামর্শ দিয়েছি তাদের। একজন ওসি হিসেবে তাদেরকে বিষয়টি জানানো আমার দায়িত্ব।’